Tue. Apr 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements


খোলা বাজার ২৪.শনিবার,২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮:চাকরি না পাওয়ার হতাশা থেকে সুইসাইড নোট লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন সৈকত রঞ্জন মন্ডল নামে এক যুবক। তিনি ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজির ছাত্র ছিলেন।

শুক্রবার আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুবির খাজা গেটের পূর্ব দিকের ইসলামনগর জামে মসজিদ গলির একটি দোতলা ভবনের মেসের রুম থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, সৈকতের পাশের দালানের প্রতিবেশী তার জানালা দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে একজনকে ঝুলতে দেখেন। তিনি বিষয়টি জানালে সৈকতের রুমমেট, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে সৈকতকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া পায়।

পরে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সৈকতের বাবার নাম কৃষ্ণ মন্ডল, মায়ের নাম রানী মন্ডল। গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার রমজান নগর ইউনিয়নে।

ডায়েরির সুইসাইড নোট থেকে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আরো দু’বছর আগে পোস্ট গ্রাজুয়েশন শেষ করলেও চাকরি না পাওয়ার হতাশা থেকেই আত্মহত্যা করেছেন সৈকত। তার রুমে বিসিএস প্রস্তুতির বিভিন্ন বই পাওয়া গেছে।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়, সৈকত দু’বার বিসিএস পরীক্ষা দিয়েও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তার টেবিলের ড্রয়ার থেকে পাওয়া প্রেসক্রিপশন থেকে জানা যায়, সম্প্রতি হতাশা থেকে বাঁচতে ডাক্তারের শরণাপন্নও হয়েছিলেন।

সম্প্রতি সৈকত নিজের ব্যক্তিগত ডায়েরিতে হতাশার কথা লেখা শুরু করেন। তার রুম থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরির একটি পাতায় লেখা রয়েছে- অনেক স্বপ্ন ছিল চাকরি করবো, মার মুখে হাসি ফোটাবো। কিন্তু সব এলোমেলো হয়ে গেলো। মার শরীর খুব খারাপ। তবুও আমি খুলনা থেকে পড়ার কথা ভাবছি। বাড়িতে যেতে গেলে সবকিছু নিয়ে যেতে হবে। তাছাড়া আর কোনো উপায় নেই। না আছে টিউশনি, যার উপর নির্ভর করে খুলনায় চলছিলাম। কোনো চাকরিতেও ভয় পাচ্ছি। আজ এতো কঠিন অবস্থা তৈরি হয়ে গেলো। আমি শুধু বন্ধুদের কে কি করছে সেই দিকে খেয়াল করে চলছি। আমরা এক মেসে চার বন্ধু থাকতাম। এর মধ্যে আমার অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেছে। অন্য তিনজন চাকরি পেয়েছে। আসলে প্রত্যেকটি কাজ করতে করতে সেটা ছেড়ে দিয়ে বিসিএস এর দিকে যাওয়ায় হঠাৎ চাপ বেড়ে যায়। সে জন্য আমি আরো খারাপ আচরণ প্রদর্শন করছি। প্রজেক্টের কাজে চাপ থাকায় শরীরটা গড়তে পারিনি। সে জন্য অতিরিক্ত চাপ সহ্য হয়নি।

হরিনটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির খান গণমাধ্যমকে বলেন, সৈকতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়েছে।