
নুসরাত জাহান সপ্তাহ দুয়েক আগেও ছিলেন আর পৌর শহরের স্কুল বা মাদ্রাসাপড়ুয়া আর দশজন সাধারণ মেয়ের একজন- কিন্তু শিক্ষকের দ্বারা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ এবং মাদ্রাসার ভেতরে তার গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়ার ঘটনা নাড়া দিয়েছে সারাদেশে।
বাংলাদেশে যেখানে শহরাঞ্চলেও যৌন নির্যাতনের অনেক অভিযোগ লোকলজ্জার ভয়ে লুকিয়ে রাখার কথা শোনা যায়, সেখানে মফস্বল শহর এবং রক্ষণশীল পরিবার থেকে আসা এই মেয়েটি তার অভিযোগ নিয়ে আদালত পর্যন্ত গিয়েছেন।
শরীরের ৮০ শতাংশ দগ্ধ হবার পর ঢাকায় নিয়ে আসার পথে তার ভাইয়ের মোবাইলে রেকর্ড করা এক অডিওতে তাকে বলতে শোনা গেছে- “শিক্ষক আমার গায়ে হাত দিয়েছে, শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত আমি এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো”।
ফেনীর সোনাগাজীর অগ্নিদগ্ধ মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান মারা যাওয়ার পরে বাংলাদেশে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকায় সমাবেশ হয়েছে, শুক্রবারও মানববন্ধন করার কথা রয়েছে।
তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল এবং তার শরীরের ৮০ শতাংশই আগুনে পুড়ে গিয়েছিল বলে চিকিৎসকরা এর আগে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছিলেন। বুধবার রাতে তিনি মারা যান।
গত শনিবার সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে কৌশলে ঐ মেয়েটিকে ছাদে ডেকে নিয়ে গিয়ে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
ছাত্রীটির ভাই বিবিসি বাংলাকে বলেন, তার বোন কয়েকদিন আগে তার মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করেছিল, সেই ঘটনার জেরে ওই অধ্যক্ষের পক্ষের শিক্ষার্থীরা তার বোনকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে।
এরপর থেকে বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমের বেশিরভাগ ব্যবহারকারী এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করছেন।
কিন্তু এই মৃত্যু কি যৌন হয়রানি বন্ধে মানুষের মনোভাব বদলাতে পারবে?