Wed. Apr 23rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪, শনিবার ,২০জুলাই,২০১৯ঃরোগ আর প্রাকৃতিক দুযোগে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন দেশের মানুষ। ঢাকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। আর বন্যার কারণে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগ।

তবে স্বাস্থ্য মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ অবশ্য ততোটা শঙ্কা করছেন না। তিনি জানিয়েছেন, ‘ম্যানেজমেন্ট ভালো। তবে মানুষ ডেঙ্গু আতঙ্কের কারণে হাসপাতালে বেশি ভর্তি হচ্ছে। আর ডায়রিয়া মোকাবেলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি আছে।’

প্রতিদিন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর ভিড় বাড়ছে। এতো দিন নগরবাসীর ধারণা ছিল, প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমে আসবে। তবে সে আশায় পানি ঢেলে দিয়েছে আরেক খবর। দুই সিটি কর্পোরেশন মশা মারার যে ওষুধ ঢাক ঢোল পিটিয়ে ছিটাচ্ছে তাতে মরছে না মশা।

এডিস মশার বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। ওষুধ নিয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। তাতে কী? মশা মারার ওষুধ কবে আসবে তা কেউ জানাতে পারছেন না। তাই এখন এডিস মশার কামড় খেয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছেন না নগরবাসী।

গত বৃহস্পতিবার পাওয়া সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) পর্যন্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন পাঁচ হাজার ৪৪৬ জন। আর মারা গেছেন ১২ জন। বৃহস্পতিবারই ভর্তি হয়েছেন ২০১ জন।

স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, ‘ডেঙ্গু আতঙ্ক তৈরি হয়েছে৷ ফলে যত রোগী ভর্তি হওয়ার কথা তার চেয়ে বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতাল ও হাসপাতালের বাইরে ডেঙ্গু রোগী বিবেচনায় নিয়ে যদি মৃত্যু হার শতকরা ১ ভাগের কম হয় তাহলে বলতে হবে এই রোগ খুব এফিশিয়েন্টলি হ্যান্ডেল (দক্ষভাবে প্রতিরোধ) হচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হার এক শতাংশের নিচে৷ তাই ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনা ভালোই চলছে বলে অভিমত তাঁর। তিনি বলেন, ‘যদিও আমাদের ওপর চাপ পড়ছে৷ তারপরও আমরা এটা ম্যানেজ করতে পারব।’

বন্যা ও ডায়রিয়া:

বাংলাদেশের ২১ জেলার ১৫ লাখেরও বেশি মানুষ এখন বন্যা দুর্গত৷ আগামী ২৪ ঘন্টায় বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর ও মুন্সিগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হবে বলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে।

২০ জেলার ৭৩ টি উপজেলায় ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, এ সব উপজেলায় ১০ জুলাই থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১,০৮০ জন। এই হিসাব অবশ্য হাসপাতালে ভর্তির হিসাব। তবে এখন পর্যন্ত কারো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। নেত্রকোনা, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, বান্দরবান, কক্সবাজার, মৌলভীবাজারসহ আরও কয়েকটি জেলার ডায়রিয়া পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে ডায়রিয়ার চিকিৎসার জন্য ২০ জেলায় এক হাজার ৯৫৮টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। আর এক হাজার ৩১৬ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ডায়রিয়ায় কেউ মারা না গেলেও বন্যায় এ পর্যন্ত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের অধিকাংশই পানিতে ডুবে মারা গেছেন। এ দিকে পাহাড় ধসে এ পর্যন্ত মারা গেছেন আট জন৷ আহত হয়েছেন ১৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা বন্যার পূর্বভাস পেয়েই ডায়রিয়া এবং বন্যার সময় অন্য যে সব রোগ হয় তার প্রস্তুতি নিয়েছি। আমাদের স্ট্যান্ডিং মেডিকেল টিম গঠন করা থাকে৷ ওষুধের মজুদ ২০ ভাগ বাড়িয়ে দিয়েছি। আর বাংলাদেশের মানুষ ডায়রিয়ার ব্যাপারে দক্ষ৷ এর বাইরে আমরা অন্যান্য রোগ ও বিপদের ব্যাপারে সচেতনতামূলক কর্মসূচিও পরিচালনা করছি।’