Fri. Apr 18th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

 

খােলাবাজার২৪,শনিবার  ,৩১ অক্টোবর ২০২০: নেই জমিদার, নেই জমিদারি। একসময় যে রঙমহলে আলোর খেলা চলেছে, সেই মহলও আজ নেই। তবে সময়ের পালাবদলে কালের সাক্ষী হয়ে বিবর্ণ ও কঙ্কালসার দেহ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঐতিহাসিক রামগোপালপুর জমিদার বাড়ি। যা ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলায় অবস্থিত। তৎকালিন জমিদারদের প্রতিষ্ঠিত মহলের চিহ্ন না থাকলেও এখনও রয়ে গেছে দুটি তোরণ। যা সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের দাঁড়প্রান্তে।

এক সময় এই বাড়িতে ছিল বসবাসের জন্য ভবন, রঙ্গম, চিড়িয়াখানা, উপসনালয় বা মন্দির, বাগানবাড়ি, সাগরদীঘির কারুকার্যময় সান বাধাঁনো পুকুর ঘাট সহ ভেতর বাড়ির প্রবেশ পথে তিনতলা বিশিষ্ট প্রবেশদ্বার।

বাড়িটিতে বর্তমানে দুটি প্রবেশদ্বার, কয়েকটি ধ্বংসপ্রাপ্ত দেয়াল ও মন্দির ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। একটি প্রবেশদ্বার প্রায় ধ্বংসের মুখে আরেকটি কোনোরকম টিকে আছে। আর দেয়ালগুলো অধিকাংশই ধ্বংস হয়ে গেছে এবং লতাপাতায় জরাজীর্ণ হয়ে রয়েছে। তবে এখনো জমিদার বাড়ির মন্দির বেশ ভালো অবস্থায় আছে। মন্দিরে এখনো পূজোর অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।

দুটি ফটকের মধ্যে প্রধান ফটকটি বর্তমান ভূমি অফিসের সন্মুখে। অপরটি জমিদার বাড়ির দ্বিতল তোরণ।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, এখানে নিরাপত্তা রক্ষীরা নিয়মিত পাহাড়ায় থাকতেন। যা এখন আর দেখা যায় না। কিন্তু সংস্কারের অভাবে দুটি স্থাপনাই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

ধারণা করা হয় যে, ১৮৮৭ সালের পরবর্তী কোন এক সময়ে জমিদার যুগেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী অথবা কাশি কিশোর রায় চৌধুরী তোরণ দুটি নির্মাণ করেন। এগুলো চুন সুরকি প্লাস্টারের ওপর চীনা টিকা ও মূল্যবান পাাথর দিয়ে নকশা করা।

সিংহ দরজাটি নিয়ে লোকেমুখে কথিত রয়েছে, জমিদার বেশি অর্থের লোভ দেখিয়ে শর্ত মেনে ফটক নির্মাণ শেষে নির্মাণ শিল্পীদের হাত কেটে দেন। কারণ, কেউ যেনো আর এ ধরণের দৃষ্টিনন্দন ফটক নির্মাণ করতে না পারেন। ফটকের উপরে দু’দ্বারে দুটি সিংহ স্থাপন করে সিংহদ্বয়ের চোখে মূল্যবান হীরার টুকরা বসানো ছিল। সূর্যরশ্মি চোখে পড়তেই চোখগুলো চকমকিয়ে উঠতো। এতে সিংহ দুটি জীবন্ত মনে হতো।

এলাকাবাসী জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় দুষ্কৃতকারীরা ফটকের ওপরে উঠে হীরের টুকরোগুলো লুট করে নেয়। ফলে ফটকের সৌন্দর্য হানি ঘটে। যা বর্তমানে আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

স্থানীয়দের দাবি- জায়গাটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত করে ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থাপনাগুলো যথাযথভাবে সংস্কার করা হোক। তা না হলে দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যকৃর্তিগুলো একেবারেই ধ্বংস হয়ে যাবে।