খােলাবাজার২৪,বৃহস্পতিবার,১৫জুলাই,২০২১ঃ বিশেষ প্রতিনিধিঃ স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অনিয়ম ও দুর্নীতি এখন নিয়মে পরিনত হয়েছে কেউ দেখার নেই! প্রতিষ্টানটি স্বাস্থ্য বিভাগের একমাত্র মুখপাত্র। প্রতিনিয় দেশের মানুষকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করে সুস্থ জাতি গড়ে তোলা স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর মুল উদ্দেশ্য। প্রষ্ঠিানটির মুল শ্লোগান প্রতিরোধই প্রতিকারের মুল উপায়। আর এ শ্লোগানকে সামনে নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও দিন দিন অবনতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য সেক্টরে সকল বিভাগ মেডিকেল পার্সন অর্থাৎ চিকিসক কর্মকর্তা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলে স্বাস্থ্য সেক্টরের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোরই কেবলমাত্র নন-মেডিকেল সংস্থা। আর এ সংস্থাটি অযোগ্য, সরকার বিরোধী ও কনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। যোগ্য , অভিজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের জেলা ও বিভাগ পর্য়ায়ে বসিয়ে রেখে অযোগ্য কর্মকর্তারা দায়িত্ব পাল করছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় মানছেন না কোন নিয়ম ও বিধি-বিধান এমন কি মানছেন না মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একনেকের সিদ্ধান্ত। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীন ৪র্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচীর (HPSP) মুল Project Implementation Plan(PIP)-তে এমন কি অনুমোদিত অপারেশনাল প্লানে কোন চিকিৎসক কর্মকর্তা লাইন ডাইরেক্টর, লাইফস্টাইল, হেলথ এডুকেশন প্রমোশনের হিসাবে পদায়নের বিধান নাই।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর সর্বোচ্চ পদ প্রধান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো। একনেক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর প্রধানকেই লাইন ডাইরেক্টর, লাইফস্টাইল, হেলথ এডুকেশন এন্ড প্রমোশন হিসাবে এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর উপ-প্রধানগন প্রোগ্রাম ম্যানেজার এবং সহকারী প্রধানগন ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসাবে পদায়নের বিধান রয়েছে। বিগত দিনেও এইভাবে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়েছে।
কিন্তু বিগত ২ (দুই) বছর যাবত পূর্বতন মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মো: আবুল কালাম আজাদ এর পরামর্শ ও সুপারিশের ভিত্তিতে চিকিৎসক কর্মকর্তাকে লাইন ডাইরেক্টর হিসাবে পদায়ন করা হয়।
আর এ জন্য দায়ী উক্ত প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ পদধারী স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো প্রধান মোঃ আব্দুল আজিজ। তাকে সিভিল সার্জন অফিস, পাবনা হতে তদানীন্তনস্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে উঠিয়ে এনে প্রধান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো ও লাইন ডাইরেক্টও, লাইফস্টাইল, হেলথ এডুকেশন এন্ড প্রমোশনের হিসাবে পদায়ন করেন।মোঃ আব্দুল আজিজ ছিলেন পাবনা জেলার অধীন একটি উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারী। তিনি ১২/০৫/১৯৮৩ইং তারিখে স্বাস্থ্য সহকারী পদে স্বাস্থ্য বিভাগে চাকুরীতে যোগদান করেন। বিএনপি জামায়াতের একনিষ্ঠ কর্মী হিসাবে বিএনপির আমলে নিয়োগ-বিধি বর্হিভুতভাবে ২৮/০৭/২০০২ইং তারিখে তিনি হয়ে যান জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার। এতে তার কপাল খুলে যায় এবং পাবনা সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার হিসাবে পদোন্নতি লাভ করেন।
সরকারী চাকুরী জিবনে তিনি কোন দিন ঢাকায় চাকুরী করেন নাই। আর এই অযোগ্য কর্মকর্তাই স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর অবনতি ডেকে আনেন। তাকে তদানীন্তন স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম প্রধান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো ও লাইন ডাইরেক্টরের দায়িত্ব দেয়ার ৩ (তিন) মাসের মাথায় অযোগ্য প্রমানিত হওয়ায় লাইফস্টাইল, হেলথ এডুকেশন এন্ড প্রমোশনের হিসাবে দায়িত্ব দেয়া হলে তার অযোগ্যতার কারনেসুচতুর মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মো: আবুল কালাম আজাদ সুযোগমতে চিকিৎসক কর্মকর্তাকে লাইন ডাইরেক্টর ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসাবে মন্ত্রনালয় হতে পদায়ন করান।
এতেই শেষ নয় সুচতুর মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মো: আবুল কালাম আজাদ মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মোঃ নাছির উদ্দিন ও খঃ বদরুল আলমকে ঢাকার বাহিরে বদলী করে দেন। এমন কি মোঃ নাছির উদ্দিন, উপ-প্রধান (নিয়মিত)-কে স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর সদর দপ্তর ছাড়া পদ না থাকায় ওএসডি করে রাজশাহী বিভাগে পদবিহীনভাবে বসিয়ে রাখা হয়।
অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকতাদের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোতে পদায়ন না করে কনিষ্ঠ ও সরকার বিরোধী কর্মকর্তাদের বহাল করে চিকিৎসকদের মাধ্যমে স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো পরিচালনা করার পথকে সুগম করেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগও বিষয়টি এ পর্যন্ত দেখভাল করছেন না। মনে হয় মন্ত্রনালয়ের সকল কর্মকর্তাই চিকিৎসক এবং চিকিৎসকের স্বার্থ হাসিলেই তারা ব্যস্ত।বর্তমান মহাপরিচালক একজন স্বজন ব্যক্তি হলেও তিনি যেন ঘুমিয়ে আছেন। বিষয়টির দিকে একবারে নজর নেই। অতিরিক্ত মহাপরিচালক (উন্নয়ন) সর্বদাই চিৎিসকদের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোতে পদায়নের বিষয়ে মহাপরিচালকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি নন-মেডিকেল কর্মকর্তাদেরকে মানুষই মনে করেন না।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোর সমন্বিত জ্যেষ্ঠতা তালিকা বিগত ০৬/১১/২০১৯ইং তারিখে পূর্বতন স্বাস্থ্য সেবা সচিব মোঃ আসাদুল ইসলাম অনুমোদনপূর্বক স্বাক্ষর করেন এবং মন্ত্রনালয়ের প্রশাসন-১ অধিশাখায় সংরক্ষণ করেন। উক্ত অনুমোদিত জ্যেষ্ঠতা তালিকা হতে দেখা যায় যে, ক্রমিক নং- ১০,১৯,২৭,২৮,৩২ এবং ৩৫ এর কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোতে দায়িত্ব পালন করছেন।
শুধু তাই নয় উপ-প্রধান হিসাবে নিয়মিত কর্মকর্তাকে রাজশাহী বিভগে সংযুক্তি দিয়ে কনিষ্ঠ কর্মকর্তা অর্থাৎ ক্রমিক নং-২৭ ও ২৮ এর কর্মকর্তা দুইজনকে উপ-প্রধানের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে অনিয়ম ও দূর্ণীতি পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠানটিকে অবনতির দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।
জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সড়িয়ে রেখে কনিষ্ঠ কর্মকর্তা দ্বার প্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও চিকিৎসক কর্মকর্তা লাইন ডাইরেক্টর হিসাবে পদায়ন দেয়ায় সকল পর্যায়ে কর্মকর্তাদেও মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান করোনা ভাইরাসের কারনে আমরা কোন আন্দোলনে বা কোর্টের শরানাপন্ন হতে পারছি না। তবে করোনা ভাইরাস একটু স্থিতিশীল হলে আমাদের দাবী আদোয়ের ব্যবস্থা নিব।
তারা বলেছেন-স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো,স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অনিয়মই নিয়মে পরিনত হয়েছে দেখার কেঊ নেই। অণ্যাকারী ও অবৈধ ক্ষমতাধারীগন বেশি দিন টিকে থাকে না। অন্যাকারী সুচতুর মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাঃ মো: আবুল কালাম আজাদও আজ চুক্তি অনুয়ায়ী চাকুরী করতে পারেননি। সরকার চুক্তি বাতিল করে তাকে বাড়িতে পাঠিয়েছেন।
স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মনে করেন এই সকল দুর্নীতি ও অনিয়মের দ্রুত সমাধান করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।