Wed. Apr 16th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলাবাজার২৪,বৃহস্পতিবার,১৪অক্টোবর ২০২১: কাউকে হত্যা বা ধর্ষণ করতে হলে শারীরিক উপস্থিতির প্রয়োজন হয়, ফোনে বা মেসেজের মাধ্যমে কাউকে হত্যা বা ধর্ষণ সম্ভব না।সম্প্রতি মুনিয়ার হত্যা ও ধর্ষণের মামলা তদন্ত করছে পিবিআই। ৮নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে করা মামলার তদন্ত অনেকদূর এগিয়েছে বলে পিবিআই সূত্রে জানা গেছে। উল্লেখ্য যে মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত তানিয়া এই মামলাটি দায়ের করেন। গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে এপ্রিলে মারা যান মুনিয়া। তার মৃত্যুর পর প্রথমে মুনিয়ার বোন নুসরাত তানিয়া একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করেছিলেন। তিন মাস তদন্তের পর গুলশান থানা আত্মহত্যার প্ররোচনার কোন প্রমাণ না পাওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। কিন্তু মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত তানিয়া ওই পুলিশ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন এবং নারাজি দরখাস্ত দেন। এরপর আদালত ওই নারাজি দরখাস্তটি নাকচ করে দেয়। পরবর্তীতে নুসরাত তানিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন, ট্রাইব্যুনালে এই মামলা তদন্ত দিয়েছে পিবিআইকে। একাধিক সূত্র বলছে যে এখন পর্যন্ত যে সমস্ত আলামত এবং তথ্য-প্রমাণ দেওয়া হয়েছে তাতে হত্যা বা ধর্ষণের কোন কিছুই প্রমাণ হয়না। বিভিন্ন সূত্র বলছে হত্যা এবং ধর্ষণের জন্য কয়েকটি সুনির্দিষ্ট বিষয়ে লাগে।

১. শারীরিক উপস্থিতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তদন্তে শারীরিক উপস্থিতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
২. হত্যা বা ধর্ষণের ক্ষেত্রে যে আলামতগুলো দরকার সে ধরনের কোনো আলামত বাদীপক্ষ এখন পর্যন্ত দিতে পারেনি।
৩. হত্যা বা ধর্ষণের যে সাক্ষ্য প্রমাণের বিষয় থাকে, সেই সাক্ষ্য-প্রমাণও এখন পর্যন্ত অনুপস্থিত।

বিভিন্ন সূত্র বলছে যে একটি হত্যা মামলায় সুনির্দিষ্ট উপস্থিতিটিই সবচেয়ে প্রধান উপজীব্য বিষয়। কিন্তু মুনিয়ার কথিত হত্যা ও ধর্ষণ মামলায় কোন সুনির্দিষ্ট শারীরিক উপস্থিতির প্রমাণ মেলেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে শুধুমাত্র ফোনের কথোপকথনে বা বিভিন্ন মেসেজ আদান প্রদানের মাধ্যমে হত্যা ধর্ষণ প্রমাণ হয় না। ফোনে হত্যা করা যায় না বা মেসেজ দিয়ে হত্যা করা যায়না, হত্যার জন্য যে উপস্থিতির প্রয়োজন সেই উপস্থিতি সম্পর্কে কোন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া শুধু উপস্থিত থাকলেই হবে না, যিনি হত্যা ও ধর্ষণের জন্য উপস্থিত হয়েছেন সে ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শীর কোন সাক্ষ্য বা প্রমাণ লাগবে।

এই মামলার বাদী নিজেই বলেছেন তিনি কুমিল্লা থেকে আসছিলেন এবং কুমিল্লা থেকে আসার পথে কয়েকদফা তার সঙ্গে মুনিয়ার কথাবার্তা হয়েছে। কাজেই তিনি প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীনন এবং ওই ফ্ল্যাটে যারা দায়িত্বে ছিলেন গার্ড বা অন্যান্য প্রতিবেশীরা তারা কেউই মুনিয়াকে হত্যা করা হয়েছে বা মুনিয়ার বাসায় প্রবেশ করে কেউ তাকে হত্যা করেছে এমন সাক্ষ্য প্রমাণ দিতে পারেননি। ফলে যে সমস্ত অভিযোগ বা তথ্য প্রমাণ দিয়ে মুনিয়ার হত্যা-ধর্ষণের মামলা করা হয়েছে সেগুলো আইনের চোখে অগ্রহণযোগ্য বলেই মনে করছেন বিভিন্ন সূত্র।

বিশেষ করে মুনিয়ার হত্যাকাণ্ডের প্রধান তথ্য প্রমাণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে কিছু টেলি আলাপ এবং কিছু মেসেজ। এই মেসেজ এবং টেলি আলাপ দিয়ে কোন কিছুই প্রমাণিত হয় না বলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিভিন্ন কর্মকর্তারা মনে করছেন। তারা বলছেন যে হত্যা প্রমাণের জন্য যে সমস্ত তথ্য-প্রমাণ বা আলামতের প্রয়োজন তার কোন কিছুই এখানে নেই। সেক্ষেত্রে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গুলশান থানা পুলিশের অনুরূপই হতে পারে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছেন।