খোলাবাজার২৪, শনিবার, ২০নভেম্বর ২০২১ঃ যত দ্রুত সম্ভব ড্যাপের গেজেট করা উচিত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলডিএ) সভাপতি ও দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান তিনি বলেন, আজকে মন্ত্রীকে ধন্যবাদ এই জন্য যে, ড্যাপকে একটি সেমিনার পর্যায়ে আনতে পেরেছেন।
তিনি ড্যাপ নিয়ে যেসব অংশীজন কথা বলতে চেয়েছেন, তাদের কাউকে মানা করেননি। আমি মনে করি যত দ্রুত সম্ভব ড্যাপের গেজেট করা উচিত।
২০১৬-৩৫ সালের জন্য নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) নিয়ে শনিবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন আহমেদ আকবর সোবহান।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, ২০১০ সালের ড্যাপ দেখে মনে হয়েছিল, বেসরকারিখাতকে একবারে নিশ্চিহ্ন করে করে দেওয়া হবে।তখন যিনি পূর্তমন্ত্রী ছিলেন, তার একটাই উদ্দেশ্যে ছিল—বেসরকারিখাত বলতে কোনো জিনিস থাকবে না। সবকিছু করবে সরকার। তখন সঙ্গে সঙ্গে তৎকালীন রিহ্যাবের সভাপতিসহ আমরা প্রতিবাদ করলাম। আমি প্রতিবাদ করলাম। আমার সঙ্গে বাদ-প্রতিবাদ অনেক কিছু হলো। পরে এ নিয়ে অনেক তর্কাতর্কি হলো। তখনকার এক প্রখ্যাত প্রকৌশলী, বাংলাদেশের গর্ব ছিলেন, তিনি নিজেও স্বীকার করলেন ওই ড্যাপে ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল। ড্যাপে অনেক ভুল-ত্রুটি হয়েছে। সেই ভুল ত্রুটি নিয়েই ড্যাপ বাস্তবায়ন করতে হবে। গেজেট করতে হবে এবং সেটাই সবার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল একটাই—শুধু রাজউক, সরকারিখাতই ল্যান্ড ডেভেলাপমেন্ট বা আবাসন যাই বলেন, সবই করবে রাজউক ও সরকার।
আহমেদ আকবর সোবহান আরও বলেন, তখন রিহ্যাবের এক সভায় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সেখানে সবাই বললেন-যে ড্যাপ হচ্ছে, তা তো দেশকে ধ্বংস করে দেবে। তখন প্রধানমন্ত্রী আমাকে ডেকে নিয়ে গেলেন। প্রধানমন্ত্রী বললেন—আমি ড্যাপ রিভিউ কমিটি করে দিয়েছি। তখন তিনি অত্যন্ত শক্তিশালী রিভিউ কমিটি গঠন করেছিলেন সাতজন মন্ত্রী, ২১ জন সচিবকে নিয়ে। সেই রিভিউ কমিটি ড্যাপ পর্যালোচনা করে, যারা শুদ্ধ তাদের নতুন করে অনুমোদন দেওয়ার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় মনোবল না থাকলে আজকে আবাসন খাতের ঢাকার দুই হাজারসহ সারাদেশের ২০ হাজার ডেভেলপার নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। প্রধানমন্ত্রী শুধু একজন রাজনীতিবিদ না। তিনি আমাদের চেয়ে অনেক বড় প্ল্যানার। তিনি আমাদের চেয়ে অনেক বেশি দূরে দেখেন। আমরা যেটি আজ ভাবি, তিনি তা আগামীকালের জন্য চিন্তা করেন। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী যদি এই দূরদর্শী ভূমিকা না নিতেন, আজকে হয়তো বাংলাদেশ এই পর্যায়ে আসতো না।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা নিশ্চিয়ই জানেন জিডিপিতে আবাসনখাতের ১৫ থেকে ২০ শতাংশ অবদান আছে।এই খাতের সঙ্গে ৪৭১টি খাতে ২০ হাজার শিল্পপ্রতিষ্ঠান জড়িত। অন্ততপক্ষে এক কোটি লোক আবাসনখাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আজকে সত্যি কথাটা বলতে হয়—অনেকে হয়তো জানেন না। বলা যায়, সেদিন ড্যাপ ফাইনাল হয়েছিল একটি পত্রিকা অফিসে। সেদিন যদি আমরা ড্যাপ গ্রহণ করতাম, তাহলে সেদিন থেকেই দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ওত পেতে ছিল। সেদিন আমরা বাধা না দিলে আজকে দেশের অন্য রূপ হতো। সেদিন থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে। আমাদের পরিবেশ দরকার। আবাসনখাতে সবাই শিক্ষিত। এখানে এমন কোনো লোক নেই, যারা পরিবেশ ধ্বংস করে দেশের উন্নয়ন করবেন। পরিবেশ না থাকলে আমরা কেউ বাঁচবো না। আজকে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হওয়া সত্ত্বেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী কয়লায় চালিত প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছেন। পরিবেশ নিয়ে আমরা সবাই সচেতন। পরিবেশ না বাঁচলে আমরা কেউ বাঁচবো না। আজকে আমারিকা সবচেয়ে বেশি পরিবেশবাদী। সবচেয়ে বেশি পরিবেশ দূষণকারীও তারা। আমাদের মনে হবে—আমরা পরিবেশ ঠিক রাখবো।এব্যাপারে সবাইকে আরওবেশি আন্তরিক হতে হবে এবং পরিবেশ ঠিকরেখেই উন্নয়ন করতে হবে।