তিনি অজ্ঞাত স্থান থেকে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিপরীতে নিজের আত্মপক্ষ সমর্থন করে বিবৃতি দিয়েছেন। লে. কর্নেল (অব.) নজরুল ইসলাম নিজেকে এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবী করেন এবং তিনি মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার বলে জানান। নিম্নে তার দেওয়া বলে বিবৃতি হুবহু তুলে ধরা হলো:
মোহাম্মদপুর এর দূর্ঘটনা । দূর্ধর্ষ ডাকাতি শিরোনামে বহুল প্রচারিত ঐ বিষয়ে আমার প্রারম্ভিক অনুনয়…
আমাকে ঘিরে বহুল আলোচিত একটি অসত্য বিকৃত ঘটনা , যেটা কোন প্রকার যাচাই বাছাই ছাড়া শুধুমাত্র শুনেই, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বেশকিছু সংখ্যক মানুষ মুখরোচক কল্পকাহিনী ছড়িয়ে আমাকে ঘৃণার পাত্রে পরিণত করছেন। প্রাথমিকভাবে এটি একটি সাধারণ মিডিয়া ট্রায়াল থাকলেও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের ইন্ধনে বর্তমানে এটি টক অব দি কান্ট্রি তে রুপান্তরিত হয়েছে । শুধুমাত্র প্রিভিউ বা প্রেক্ষাপটের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন উদ্বিগ্ন ব্যক্তি এবং সংস্থা, যথাযথ উপযুক্ত প্রমাণ বা তদন্ত ছাড়াই আমাকে অপরাধী ভাবতে শুরু করেছেন, যেখানে আমি আদৌ দোষী নই।
আমি বিগত ১৩ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে পূর্ব নির্ধারিত পারিবারিক সফরের জন্য বিদেশে এসেছি। আমার আগমনের পরের দিন, স্যোসাল মিডিয়ায় আমি “মোহাম্মদপুর ডাকাতি” শিরোনামে একটি ভিডিও দেখতে পাই। ভিডিও / সংবাদ দেখার পরে বিভিন্ন সুত্রে কথা বলার পরে জানতে পারি এখানে ৮/৯ জন RAB সদস্য, একজন অতিরিক্ত এসপি এবং একজন চাকুরিরত মেজর পদবীর কর্মকর্তার নেতৃত্বে উক্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, যেখানে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য , কিছু অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য এবং কতিপয় বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ সাথে উপস্থিত ছিল।
আলোচিত ঘটনায় অভিযুক্ত ক্যাপ্টেন আশিক আমার পূর্ব পরিচিত। আমি আমার ব্যবসা সংশ্লিষ্ট একটা ভিন্ন বিষয়ে ভিন্ন লোকের সাথে আলোচনা করতে সেদিন মোহাম্মদপুর গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে একটি রেস্তোরাঁয় অপেক্ষা করছিলাম। সেই মুহুর্তে ওখানে ক্যাপ্টেন আশিক প্রবেশ করলে তার সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়ে যায় এবং পূর্ব পরিচিত হিসেবে কুশলাদি বিনিময়ও হয়। আমি ঐ সময়ে মি. আশিকের সাথে ২/৩ জন লোককে রেষ্টুরেন্টে দেখেছি। আমি আমার একান্ত প্রয়োজনে কিছুক্ষন ওখানে অবস্হান করি , অতপর খাবার খেয়ে, কথা বলে আমার এলাকায় ফিরে আসি। রেস্তোরাঁটির অবস্হান point of occurrence (PO) থেকে বেশ দূরে (যেমনটি আমি পরে শুনেছি) ।
যেহেতু অভিযুক্ত ক্যাপ্টেন পদবীর উক্ত কর্মকর্তা এহেন অপকর্ম/অপারেশনের সাথে জড়িত ছিল (পরবর্তীতে জেনছি), তাই পরিস্থিতি না বুঝে বা মূল্যায়ন না করেই প্রাথমিকভাবে লোকেরা ঐ রেস্টুরেন্টের ভিডিও ফুটেজ এবং অসত্য তথ্যের নিউজ দেখে অনেকেই আমাকে ভুল বুঝতে শুরু করেন, যা সময়ের সাথে সাথে বহুগুণে বেড়ে যায়। এই সুযোগে আমার ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ চেষ্টা করে চলেছে ঘটনাটি আমার দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে এই ঘৃণ্য অশুভ কাজের পরিকল্পনাকারী হিসাবে তুলে ধরতে। যা কস্মিনকালেও সত্য নয়। আমি সম্পূর্ণ মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার; যা আমার সামাজিক-ব্যবসায়িক এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দীর্ঘ ষড়যন্ত্রের ফসল!
এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে আমার নিজ এলাকা “শরীয়তপুর” এ আমার সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করা সহ ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য সময় ও অর্থ এমনভাবে ব্যবহার করেছে , যা আমার অনেক পরিশ্রমের মাধ্যমে তৈরীকৃত অবস্থান, সম্মান কে মাটিতে মিশিয়ে ফেলতে একটুও সময় নেয়নি । বিষয়টিতে তারা এতটাই সক্রিয় যে, আন্তর্জাতিক মিডিয়া আল-জাজিরাসহ দেশের প্রায় সব প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ঘটনাস্থল বাদ দিয়ে রেস্টুরেন্টের ভিডিও ক্লিপ দিয়ে এই বানোয়াট খবর প্রচার করেছে।
আমি স্থান, সময়, পরিবেশ ও পরিস্থিতির শিকার। আমি নির্দোষ এবং যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। সঠিক তদন্ত, আইন এবং বিজ্ঞ আদালতের ন্যায় বিচারের মাধ্যমে দেরীতে হলেও আমি অভিযোগ মুক্ত হয়ে আমার সম্মান ফিরে পাবো ইন শা আল্লাহ।
সকলের প্রতি আমার বিনীত আহ্বান, দয়া করে আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমি নিশ্চিত, সত্যের জয় হবেই। অপেক্ষা শুধু সময়ের। আমার এই বক্তব্যটুকু সকল গণমাধ্যমে প্রকাশের জন্য সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।