Wed. May 7th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

20সোমবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫ : ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়তে থাকায় কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে পাঁচ লাখ মানুষ। ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল সোমবার সকাল থেকে। পানিবন্দি মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট। কিন্তু সরকার কিংবা বেসরকারি উদ্যোগে ত্রাণ তৎপরতা অপ্রতুল। এতে পানিবন্দি মানুষের দুর্দশা বেড়েছে বহুগুণ।

জেলার ৯টি উপজেলার ৬৫টি ইউনিয়নের ৪৫০টি চর-দ্বীপ চর এবং নদীর তীরবর্তী নিম্মঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় প্রায় ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্লাবিত হয়েছে আরো নতুন নতুন এলাকা। রৌমারীর যাদুর চর ইউনিয়নে জিঞ্জিরাম নদীর তীব্র ¯্রােতে লালকুড়া রাবারড্যাম রোডের প্রায় ৩০ মিটার ভেঙ্গে গেছে। একই ইউনিয়নের ধনারচর গ্রামের বেড়ি বাঁধের ৮শ ফিট ভেঙ্গে গেছে। এ ছাড়া লালকুড়া থেকে বকবান্ধা ব্যাপারীপাড়া সড়কে তিন কিঃমিঃ রাস্তা ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তিনদিনে ইউনিয়নে শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ী ভেসে গেছে। যাদুরর ইউনিয়নের পাহাড়তলী, যাদুরচর,কোমরডাঙ্গি, ঝুনারচর, খেয়ারচর মৌজার ৫৩টি গ্রামের মধ্যে ৪৫টি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

কাজ ও চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে বন্য কবলিত মানুুষরা। এছাড়া বিশুদ্ধ পানির চরম সংকটও রয়েছে। অনেকেই নিজের বাড়িতে মাচার উপর অবস্থান নিয়েছে। শুকনো খাবার, ম্যাচ ও মোমবাতিসহ দরকারি সরঞ্জাম ফুরিয়ে গেছে।

এছাড়া হাঁস মুরগী ছাগল ভেড়া মরে যাচ্ছে। দেখা দিয়েছে গো-খাদ্য সংকট। ভেঙে গেছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ সড়ক। কোন কোন সড়কে ৪-৫ ফুট পানি। ফলে নৌকা ও কলাগাছের ভেলা ছাড়া যাতায়াতের কোন উপায় নেই।

তারা চাহিদামতো ত্রাণ না পাওয়ায় দুর্গত মানুষের কাছে যেতে পারছে না।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজার রহমান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ধরলায় ২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। তবে ব্রহ্মপুত্রে ৪ সেন্টিমিটার, দুধকুমোরে ৭ সেন্টিমিটার পানি কমেছে।

জেলা প্রশাসক খান মোঃ নুরুল আমিন জানান, সোমবার বন্যার্তদের জন্য নতুন করে ৫০ মেট্রিকটন চাল ও তিন লাখ ৫৫হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে বরাদ্দ পাওয়াগেছে ১০০ মে.টন চাল ও ৩ লাখ টাকা। জেলায় কমবেশী প্রায় ৫ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ কারণে আরো ত্রাণ বরাদ্দ চেয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিন দেখতে শীঘ্রই কুড়িগ্রাম আসছেন ত্রাণ ও দুর্যোগব্যবস্থাপনা মন্ত্রী।