Mon. May 5th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫
50বিএনপির যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এক নেতার ছেলের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ এবং এর বিনিময়ে বাংলাদেশি রাজনীতিক সম্পর্কে গোপনে তথ্য দেওয়ার দেন-দরবার করার অপরাধে মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোর (এফবি আই) সাবেক এজেন্ট রবার্ট লাস্টিককে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের অপরাধ শাখার সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লেসলি আর. কাল্ডওয়েল, নিউ ইয়র্কের উত্তর জেলার অ্যাটর্নি জেনারেল প্রিট ভারারা এবং ইন্সপেক্টর জেনারেল মাইকেল ই. হরওইউটচ এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে গত ৩০ মার্চ পৃথক ঘটনায় তাঁকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন ইউটার এক আদালত। এর ফলে তাঁকে মোট ১৫ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। বিএনপি নেতার ছেলের নাম রিজভী আহমেদ সিজার (৩৬)। তাঁর বাবার নাম মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন। তিনি বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাসাসের সহসভাপতি। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাটের ফেয়ারফিল্ড কাউন্টির বাসিন্দা। রায় ঘোষণার পর লাস্টিকের কৌঁসুলি রবার্ট সলোওয়ে বলেন, তাঁরা আরও লঘু দণ্ড আশা করেছিলেন। রায় ঘোষণাকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন লাস্টিক। সঙ্গে ছিলেন পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধবসহ ২০ জন। আদালতের প্রতি তাঁরা ইউটার আদালতের দেওয়া কারাদণ্ডের সঙ্গে এই পাঁচ বছরের দণ্ড সমন্বয় করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিচারক তা নাকচ করে দেন। সোমবার মার্কিন বিচার বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ৫ বছরের দণ্ডাদেশ পাওয়ার আগে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর আদালতে লাস্টিক (৫৩) ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেওয়া, সরকারি সম্পত্তি চুরি, ঘুষ গ্রহণসহ তাঁর বিরুদ্ধে আনা পাঁচ অভিযোগের সব স্বীকার করেন। আদালতে লাস্টিক বলেছিলেন, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের (আওয়ামী লীগ) রাজনীতিতে সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত একজনের ব্যাপারে গোপন তথ্য সরবরাহের প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন তিনি। প্রস্তাব অনুযায়ী বন্ধু জোহানেস থালেরকে (৫১) নিয়ে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশি রিজভি আহমেদ সিজারের (৩৫) কাছ থেকে ঘুষ নেন। গত বছরের অক্টোবরে হোয়াইট প্লেন ফেডারেল কোর্টে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রিজভি ও থালের বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ওই বাংলাদেশি রাজনীতিক সম্পর্কে গোপনে তথ্য সংগ্রহ করে দেওয়ার বিনিময়ে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১২ সালের মার্চ পর্যন্ত লাস্টিকের সঙ্গে তাঁদের ঘুষ লেনদেন হয়। লাস্টিক ওই সময় এফবি আইয়ের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের কর্মকর্তা ছিলেন। এ স্বীকারোক্তির আগে রিজভি ও থালেরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। মামলার বিবরণে বলা হয়, আলোচিত বাংলাদেশি রাজনীতিকের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহের জন্য তাঁরা রবার্ট লাস্টিকের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগ করেন। লাস্টিককে প্রথম দফায় ৪০ হাজার ডলার এবং পরে মাসিক কিস্তিতে ৩০ হাজার ডলার করে দেওয়ার কথা হয়। মামলার নথিতে ওই রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তির রাজনৈতিক ক্ষতি করতেই রিজভি এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তথ্য সংগ্রহের কাজে রিজভির পেছনে কে বা কারা ছিল, সে বিষয়েও কিছু উল্লেখ করা হয়নি নথিতে। রিজভি যুক্তরাষ্ট্রে বাসকারী বিএনপির নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের ছেলে। সংশ্লিষ্ট মামলায় রিজভি ও থালেরের চলতি বছরের ৫ মার্চ যথাক্রমে ৪২ ও ৩০ মাসের কারাদণ্ড হয়। মামলায় এ দুজনকে গত বছরের আগস্টে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আর পৃথক অভিযোগে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছিল লাস্টিককে।