খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫
লন্ডন সফরের প্রথম দুই দিন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই কাটিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ সময় তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি কিংবা দলের কোনো নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। বিএনপির যুক্তরাজ্যর শাখার নেতারা বলছেন, খালেদা জিয়া প্রায় দুই সপ্তাহ লন্ডনে থাকতে পারেন। তাই রাজনৈতিক কোনো বিষয়ে তাড়াহুড়া করা হচ্ছে না। তবে খালেদা জিয়ার এই সফরে দলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে মনে করছেন তারা। গতকাল বুধবার সকালে খালেদা জিয়া লন্ডনে আসেন। খালেদার অবস্থান ও সফরসূচি বিষয়ে বেশ গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। দলীয় নেতাদের দৌড়ঝাঁপ ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ এড়াতে এমনটি করা হচ্ছে বলে দাবি করছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতারা। যুক্তরাজ্য সরকারের কারও সঙ্গে খালেদা জিয়ার সাক্ষাৎ হবে কিনা সেই বিষয়টিও জানাতে পারেননি তারা। এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক বলেন, প্রায় দীর্ঘ আট বছর পর খালেদা জিয়া তাঁর পরিবারের সকল সদস্যকে এক সঙ্গে পেয়েছেন। এর মধ্যে আছে ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের শূন্যতা। সব মিলিয়ে এটা এক আবেগঘন পারিবারিক মিলন। তবে তিনি আপনজনদের কাছে পেয়ে বেশ আনন্দিত। এম এ মালেক আরও জানান, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টিকে আগে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তিনি যেকোনো সময় চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেন। খালেদা জিয়ার জন্য পশ্চিম লন্ডনের একটি হোটেলে বুকিং রয়েছে। তবে তিনি তারেক রহমানের বাসা এবং হোটেলে মিলিয়ে অবস্থান করবেন। লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির এক নেতাবলেন, খালেদা জিয়ার এই সফরে দলের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণের সুযোগ এসেছে। দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বিদেশে অবস্থান করায় অনেক সময় দলীয় কোনো কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, আরাফাত রহমানের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে বাসায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। দাবি করা হয়, তারেক রহমানের ইচ্ছাতেই এমনটি করা হয়েছিল। তারেক রহমান দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে চাইলে যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। তবে এ বিষয়ে একটি স্বচ্ছতা দরকার। ভবিষ্যতে যাতে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আর ভুল বোঝাবুঝি না হয়, সে জন্য একটি উপায় বের করতে হবে। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের উপস্থিতিতে খোলামেলা আলোচনার মাধ্যমে সেটি সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন। বিএনপির ওই নেতা আরও বলেন, মামলার কারণে দলের অনেক নেতাই লন্ডনে আসতে পারেননি। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে চিকিৎসার জন্য তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে আসেন। সেই থেকে সঙ্গী জোবায়দা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে তিনি লন্ডনেই অবস্থান করছেন। খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে তাঁর প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের স্ত্রী শর্মিলা রহমান ও দুই কন্যা জাফিয়া ও জাহিয়া রহমান কয়েক দিন আগেই লন্ডনে চলে আসেন। দীর্ঘ আট বছর পর খালেদা তাঁর পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন।