Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২১ অক্টোবর ২০১৫ : প্রবাসী শ্রমিকদের একটি বড় অংশই অদক্ষ। এমনকি 61ইংরেজিও ঠিকমতো বলতে পারেন না। সে কারণেই তাঁরা অন্য অনেক দেশের শ্রমিকদের তুলনায় বেতনও কম পান। এই শ্রমিকদের দক্ষ করে বিদেশে পাঠাতে পারলে দেশে প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) পরিমাণ কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আজ বুধবার অভিবাসী শ্রমিকদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ ও সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে আয়োজিত এক সংলাপে এমনই মত দিয়েছেন বক্তারা। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এই সংলাপের আয়োজন করে। সিপিডির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে ফিলিপাইনের লোকেরা বাংলাদেশিদের চেয়ে চার গুণ বেশি বেতন পান। কারণ তাঁরা অনর্গল ইংরেজি বলতে পারেন। সে জন্য তাঁরা মধ্যম সারির পদে কাজ পান। আর বাংলাদেশিরা শ্রমিকের কাজ করেন। আমরা যদি আধা দক্ষ (সেমি স্কিলড) জনশক্তিও বিদেশে পাঠাই, তাহলেও আমাদের রেমিট্যান্স কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।’ পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমাদের শ্রমিকদের দক্ষতা নিয়ে সমস্যা নেই। তাদের সমস্যা হলো ভাষা। একই কাজ আমাদের লোকেরাও করে, শ্রীলঙ্কার লোকেরাও করে। কিন্তু শ্রীলঙ্কার লোকটা আমাদের লোকের চেয়ে ৬০-৭০ শতাংশ বেশি বেতন পায়। কারণ সে ইংরেজিতে ভালো কথা বলতে পারে।’ তিনি আশা করেন, ২০২০ সালে দেশে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রবাসী আয় আসবে। প্রবাসীদের অদক্ষতার বিষয়টি স্বীকার করে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. আবদুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের প্রবাসী শ্রমিকেরা কম আয় করেন। কারণ তাঁরা ততটা দক্ষ নন। সে কারণে আমরা তাঁদের প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিচ্ছি। ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।’ দেশে কয়েকটি ক্ষেত্রে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্ব ব্যক্তিদের (সিআইপি) সম্মানিত করা হয়। প্রবাসী বাংলাদেশিদেরও দেওয়া হয় সিআইপি সম্মাননা। এ প্রসঙ্গে অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো ভিআইপি কমানো, সিআইপি বাড়ানো। দেশে এখন লাখ লাখ সিআইপি আছে।’ প্রবাসীদের জন্য দেশে সরকার ‘প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক’ নামে একটি বিশেষায়িত ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। এটি নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকটি কেন দায়সারাভাবে (হাফ হার্টেড) চালু করা হয়েছিল। কেন এটাকে অন্যান্য তফসিলি ব্যাংকের মতো করে করা হয়নি।’ তবে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বলেছেন, ‘প্রবাসী আয় পাঠানোর ব্যয় শূন্য করার জন্য আমরা প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংককে তফসিলি ব্যাংকে পরিণত করছি।’ তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে এখন প্রশিক্ষণকেন্দ্র করা হচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য হলো এসএসসি পাস করার পর বিদেশে যেতে আগ্রহী ব্যক্তিরা সেখানে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেবে। এর মধ্য দিয়ে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করা সম্ভব হবে। সংলাপে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার মো. ইফতেখার হায়দার, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক শামসুন্নাহার, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।