খোলা বাজার২৪ ॥শুক্রবার, ৬ নভেম্বর ২০১৫: সকালে স্টেডিয়ামের আবহ দেখে বোঝার উপায় ছিল না, এটা প্রস্তুতি ম্যাচ! আন্তর্জাতিক ম্যাচের আমেজ স্টেডিয়ামজুড়ে! অবশ্য দিন শেষে পরাজয়ের হতাশা নিয়েই ফিরতে হয়েছে দর্শকদের। জিম্বাবুয়ের কাছে বিসিবি একাদশ হেরে গেছে ৭ উইকেটে।
প্রস্তুতি ম্যাচে হারে হতাশার কী আছে? কেউ কেউ বলতে পারেন, বিসিবি একাদশে যে ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিম, ইমরুল কায়েস, সাব্বির রহমানের মতো কয়েকটি উজ্জ্বল নাম! শেষ মুহূর্তে দলে ডাক পাওয়া ইমরুল অবশ্য এ পরাজয়কে বড় করে দেখেন না। নিজে রান পেয়েছেন, রান পেয়েছেন মুশফিকও। এর মধ্যেই ইমরুল খুঁজে পাচ্ছেন ইতিবাচক কিছু, ‘এটা প্রস্তুতি ম্যাচ। হেরে যাওয়ার চেয়ে বড় কথা, মুশফিক ভালো রান করেছে। অন্য ব্যাটসম্যানরাও রান করেছে। ওয়ানডে যারা খেলবে তাদের ভালো একটা অনুশীলন হলো। অনুশীলন ম্যাচে আসলে সবাইকে সুযোগ দেওয়া হয়। ১২-১৩ জন খেলার সুযোগ পায়। এখানকার পারফরম্যান্স নিয়ে চিন্তা না করাই ভালো।’
জিম্বাবুয়ের অবশ্য বিপরীত অবস্থা। ঘরের মাঠে একের পর এক সিরিজ হারের পর এমন জয় নিঃসন্দেহে বিরাট স্বস্তি। অল্পের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করা ক্রেগ আরভিন মনে করছেন, এ জয় বাড়িয়ে দেবে তাদের আত্মবিশ্বাস, ‘জয় দিয়ে একটা সফর শুরু করা সব সময়ই ভালো। বিশেষ করে হাতে অনেকগুলো উইকেট রেখে বড় লক্ষ্য পেরিয়ে যাওয়া। দারুণ অনুশীলন হলো আমাদের জন্য। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা সহজ হবে না। সিরিজ শুরু করতে এটি আমাদের ভালো আত্মবিশ্বাস জোগাবে।’
বিসিবি একাদশের ব্যাটিংটা মন্দ হয়নি। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে করেছে ২৭৭। তবে ইমরুল-এনামুল যেভাবে শুরু করেছিলেন, স্কোর আরও বড়ই হতে পারত। উদ্বোধনী জুটিতে দুজনের ১০৫ রানের পর খানিকটা ছন্দপতন। বিনা উইকেটে ১০৫ থেকে বিসিবি একাদশ পরিণত হয় ৪ উইকেটে ১৪৯ রানে।
খেলাটা ধরেন মুশফিকুর রহিম ও শাহরিয়ার নাফীস। দুজনের পঞ্চম উইকেট জুটিতে আসে ৯০। অনেক দিন পর এমন একটা ম্যাচ খেলতে নামা বলেই কিনা শাহরিয়ারের মধ্যে দেখা গেল বেশ জড়তা। মুশফিক অবশ্য সাবলীল ব্যাটিংয়ে মাতিয়ে তুললেন ফতুল্লার পূর্ণ গ্যালারি। তবে শেষ ১০ ওভারে তুলনায় রান হলো কমই। থিতু হওয়া মুশফিক-শাহরিয়ার উইকেটে, হাতে ৬ উইকেট। রান হলো ৬৫।
২৭৮ রানের লক্ষ্যটা যথেষ্ট হতে পারত, যদি বোলাররা ঠিকমতো ফণা তুলতে পারতেন। ৫১ রানে ২ উইকেট ফেলে দেওয়ার পরও ছন্দটা ধরে রাখতে পারলেন না বোলাররা। তৃতীয় উইকেটে শন উইলিয়ামস ও ক্রেগ আরভিনের অবিচ্ছিন্ন ১২৫ রানের জুটি বদলেই দিলে ম্যাচের ছবি। উইলিয়ামসকে তো আউটই করা গেল না। ৫৪ রানে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে ফিরলেন সাজঘরে। সানজামুল ইসলামের বাঁহাতি স্পিনে আউট হওয়ার আগে আরভিন করলেন ৯৫। ২০ বল হাতে রেখে সমাপ্তিরেখা টানল এলটন চিগুম্বুরা-সিকান্দার রাজার অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেট।
পরাজয়ে বিসিবির ফিল্ডারদের পিচ্ছিল হাতের দায় যেমন আছে, দায় আছে নির্বিষ বোলিংয়েরও। বড় প্রাপ্তি হতে পারে ডেঙ্গু থেকে সেরে ওঠা মাশরাফির বোলিং। দুই স্পেলে করলেন ৭ ওভার। ৩১ রানে উইকেটশূন্য থাকলেও মিলল সিরিজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার ইঙ্গিত।
বাংলাদেশ ঘরের মাঠে সর্বশেষ চারটি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে। তারপরও কি জিম্বাবুয়ে এবার বাংলাদেশকে ছুড়ে দিল বড় চ্যালেঞ্জ