খোলা বাজার২৪ ॥মঙ্গলবার, ১০ নভেম্বর ২০১৫: কালো ছায়া ঘিরে ধরেছে ফুটবলকে। একের পর এক কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হচ্ছে। আর কেঁপে উঠছে ফুটবল দুনিয়া। অভিযোগগুলোও ভয়ংকর, ফিফার শীর্ষ কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, অবৈধ উপায়ে রাশিয়া ও কাতার বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত, ফিফা সভাপতির অর্থনৈতিক কুকর্ম—লম্বা ফিরিস্তি। দিনকে দিন সেই তালিকার আয়তন বাড়ছেই। তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (ডিএফবি) সভাপতি ওলফগাং নিয়েসবাখ পদত্যাগ করলেন।
জার্মানিতে বিশ্বকাপ হয়েছে ৯ বছর আগে। আরও দুটি বিশ্বকাপও দেখে ফেলেছে ফুটবল দুনিয়া। কিন্তু আজ এত বছর এই ইস্যুটি আলোচনায় এনেছে জার্মান এক ম্যাগাজিন। তাদেরই এক খবরে জানা যায়, বিশ্বকাপ আয়োজন নিশ্চিত করতে ২০০৫ সালে ফিফাকে ৬৭ লাখ ইউরো দিয়েছিল জার্মান ফুটবল। এই অর্থ দিয়ে নাকি প্রয়োজনীয় ভোট কিনেছিল তারা। চাঞ্চল্যকর এই তথ্য প্রকাশের পর পরই চমকে উঠেছে সবাই।
ওই বিশ্বকাপের আয়োজক কমিটির প্রধান ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের দিকেই আঙুল উঠেছিল প্রথমে। ‘কাইজার’ এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন বটে, তবে ‘অন্য একটি’ কাজ করা উচিত হয়নি বলেও স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। সেই কাজটি কী ছিল সেটি আর পরিষ্কার করেননি তিনি। তার পরই জার্মানির ফুটবল ফেডারেশনে তদন্ত করতে গিয়েছিল পুলিশ এবং কর কর্মকর্তারা।
ফেডারেশনের গায়ে এমন কালো দাগ পড়ায় পুরো দায় নিয়ে সরে গেলেন নিয়েসবাখ। ওই বিশ্বকাপের সময় আয়োজক কমিটির সহসভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি। পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার সময় বললেন, ‘ডিএফবি এবং আমার পদকে রক্ষা করতেই সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। আমি দুঃখিত, কিন্তু রাজনৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে আমাকে কাজটি করতেই হতো।’
পদত্যাগ করলেও এই অর্থ কেলেঙ্কারির ব্যাপারে তিনি নিজে কিছু জানেন না বলেই দাবি করলেন, ‘বিশ্বকাপের জন্য আমরা যেদিন বিড করেছি তারপর থেকেই সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছি। এ জন্যই ব্যাপারটিতে আমি আরও বেশি কষ্ট পাচ্ছি। নয় বছর পর আমাকে এমন এক ব্যাপারে অভিযুক্ত করা হচ্ছে, যেটার ব্যাপারে আমার কোনো ধারণাই নেই।’
নিয়েসবাখের ‘ধারণা’ না-থাকলেও ৬৭ লাখ ইউরো উপঢৌকন দেওয়ার ঘটনাটি কিন্তু সঠিক বলেই প্রমাণিত হচ্ছে। ডিএফবি এ ব্যাপারে তদন্তও শুরু করে দিয়েছে, এই বিপুল অর্থ কী কারণে দেওয়া হয়েছিল? বিশ্বকাপ আয়োজন নিশ্চিত করতে, নাকি তখনকার কর্মকর্তাদের অন্য কোনো বড় কেলেঙ্কারি ধামা চাপা দিতে? সূত্র: এএফপি।