খোলা বাজার২৪,সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০১৬: বাঙালির নতুন বর্ষের নতুন দিন পহেলা বৈশাখের আর মাত্র ৩ দিন বাকি। এ পহেলা বৈশাখ আর রমনার বটমূল যেন একই সূত্রে গাঁথা। এদিন অন্যান্য বছরের মত বটমূলে চলবে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের বর্ষবরণের উৎসব। আর উৎসবকে কেন্দ্র করে বটমূলে চলছে প্রস্তুতি।
ইতোমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে ৫ সিড়ি বিশিষ্ট মঞ্চ। ছায়ানটের কর্মীরা এ মঞ্চ তৈরি করেছেন। মঞ্চের ধারণ ক্ষমতা প্রায় ১৫০। নিচে লোহার খুটি এবং উপরে এক ধরনের রাবারের বিশেষ ফোম দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এ মঞ্চ।
মঞ্চের সামনে ছায়ানটের শিল্পীদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা রাখা হয়েছে। মঞ্চ থেকে ৩০ ফিট দূরেই সাধারণ মানুষের জন্য রাখা হয়েছে বসার স্থান। এ জন্য চারদিকে বাশ দিয়ে সীমানা প্রাচীরও দেয়া হচ্ছে।
এদিকে বটমূলের সামনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বসতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ছায়ানটের নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্দিক বেলাল।
সিদ্দিক বেলাল বলেন, ‘অনুষ্ঠানের জন্য মঞ্চ আমরা (ছায়ানট) নিজেরাই তৈরি করেছি। আর বাকি যে কাজগুলো আছে তা করার জন্য পলাশ ডেকোরেটরকে চুক্তি দিয়েছি। তারা মাটিতে কার্পেট বিছাবে। আর সেখানে ১০ হাজার মানুষ বসতে পারবে।’
অন্যদিকে অনুষ্ঠানস্থলের কাজের চুক্তি পাওয়া পলাশ ডেকোরেটরের স্বত্বাধিকারী কবির হোসেন বলেন, ‘সোমবারের মধ্যেই আমাদের কাজ শেষ হয়ে যাবে। তবে পহেলা বৈশাখের আগের রাতে আমরা মাটিতে কার্পেট বিছিয়ে দেবো।’
বৃষ্টি হলে মানুষ যাতে না ভিজে সেজন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কি না জানতে চাইলে ছায়ানটের নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্দিক বেলাল বলেন, ‘আপাতত বৃষ্টির জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বৃষ্টি হলে সবাইকে ভিজতেই হবে।’
তিনি জানান, বর্ষ বরণের অনুষ্ঠান শুরু হবে এদিন ভোর সাড়ে ৬টায়। গান দিয়ে শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৮টায় আবার গান দিয়েই শেষ হবে অনুষ্ঠান। যারা আগে আসবেন তারা মঞ্চের সামনে বসতে পারবেন।
সিদ্দিক বেলাল বলেন, ‘সাংবাদিকদের জন্য রাখা হবে নির্দিষ্ট জায়গা। কোনো টিভি চ্যানেলি এর বাইরে যেয়ে লাইভ টেলিকাস্ট করতে পারবে না। কারণ এতে অনুষ্ঠানে আসা মানুষদের জন্য সমস্যা হবে। টেলিভিশনের লাইভ টেলিকাস্টের চেয়ে আমরা এখানে যারা আসবেন তাদেরকেই গুরুত্ব দেব।’
বেলাল জানান, নিরাপত্তার দায়িত্বে পুলিশ, র্যাব সদস্যারা থাকবেন। তবে এখানে যারা আসবেন তাদেরকে ঠিকমত বসিয়ে দেয়ার জন্য ছায়ানটের প্রায় ১০০ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন।
তিনি জানান, এখানে সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। থাকছে ওয়াচ টাওয়ারও।
সিদ্দিক বেলাল বলেন, ‘ছায়ানটের নিজস্ব অর্থায়নেই প্রতিবছর এ অনুষ্ঠান পালন করা হয়। অনুষ্ঠান পালনের জন্য কারো কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নেয়া হয় না। শুধুমাত্র নিরাপত্তার বিষয়টি দেখে সরকার।’
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭১ সাল বাদে প্রতি বছরই এখানে পহেলা বৈশাখে অনুষ্ঠান করে আসছে ছায়ানট।