খোলা বাজার২৪, রোববার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৬: মৌলভীবাজার জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল চা হলেও অপার সম্ভাবনাময় ফসল বিভিন্ন জাতের লেবু। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চা-এর পাশাপাশি কাগজি লেবুর ভূমিকাও আজ অগ্রগণ্য। এ অঞ্চলে উৎপাদিত প্রায় শত কোটি টাকার অধিক লেবু বেচা-কেনা হয়। দেশের ৮০ভাগ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানী করে বছরে শত কোটি টাকার আয় হচ্ছে।
লাভজনক হওয়ায় লেবু চাষে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন কয়েক শত শত চাষী। বিশেষত শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এই লেবু চাষ বেশী হচ্ছে।
মৌলভীবজার জেলা সদরসহ ৭টি উপজেলায় চলতি বছর প্রায় দুই হাজার বাগানের প্রায় ২০হাজার হেক্টর পাহাড়ী ও সমতল ভূমিতে বিভিন্ন জাতের কাগজী, চায়না, জারা, সাতকরা, এলাচি, সিডলেস লেবু চাষাবাদ করা হচ্ছে। উৎপাদিত লেবু দেশের অভ্যন্তরে প্রসাধনী ও বেভারেজ কোম্পানীর ৮০ভাগ চাহিদা মিটিয়ে এখন বিদেশেও প্রচুর পরিমান রফতানী হচ্ছে। লেবু বাগানকে ঘিরে গড়ে উঠেছে লেবুর বড় বড় আরত।বিশেষ করে শ্রীমঙ্গলে প্রতিদিন কাকডাকা ভোর থেকে জীপ,টেম্পু ও ঠেলা গাড়ী যোগে বাজারে আসতে থাকে করে বিপুল পরিমান লেবু। যা মধ্য দুপুর পর্যন্ত চলে। শ্রীমঙ্গলে ষ্টেশন রোড এলাকায় বিশাল লেবুর বাজার বসে। আরদে লেবু পাঠান এবং কমিশন ভিত্তিক আরতদাররা পাইকারের কাছে লেবু বিক্রি করেন। অধিক বৃষ্টিরর ফলে এঅঞ্চলে মার্চ থেকে আগষ্ট পর্যন্ত লেবুর ফলন হয় সবচেয়ে বেশী। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে লেবু নিয়ে যাচ্ছেন পাইকারী ব্যবসায়ীরা। এমনকি লন্ডনসহ মধ্যপ্রাচ্যে লেবু রপ্তানী করা হয়ে থাকে। লেবুর চাষাবাদ বৃদ্ধির ফলে একদিকে বেকারদের হচ্ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে অন্যদিকে দেশের বাইরে লেবু রপ্তানী করে সরকার পাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজস্ব। প্রতি বছরে কমপক্ষে শত কোটি টাকার বেচা-কেনা হয়ে থাকে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
লেবু বাগানের মলিকরা জানান এখানকার লেবু দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিক্রি হয়। যুগ যুগ ধরে ব্যবসায়ীরা লেবু ক্রয় করে দেশের ব্যপক চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে কিন্তু এখানকার অধিক পরিমানে উৎপাদিত এ লেবুর সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ হিমাগার না থাকায় সম্ভাবনাময় এশিল্প অনেকটা হুমকির মুখে। আর বাগানের শ্রমিকরা জানান প্রতিদিন লেবু কেনার পর দিনে দিনেই পাটাতে হচ্ছে নিদিষ্ট স্থানে। একদিকে পরিবহন সমস্যা অন্যদিকে লেচু পচে নষ্ট হওয়ার আশংকা রয়েছে।
দেশের চাহিদা মিটিয়ে ও বহিবিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে এ লেবু। সরকারী ও বেসরকারী পৃষ্ঠপোষকতা,ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান ও পক্রিয়াজাত প্রতিষ্টান গড়ে উঠলে সফলতা আসবে এ পণ্যে। তাই সরকারকে এ দিকে নজর দেবার দাবী ব্যবসায়ীদের।
এ অঞ্চলে মার্চ থেকে আগষ্ট পর্যন্ত লেবুর ফলন হয় সবচেয়ে বেশী। প্রতি বছর প্রচুর পরিমান লেবু উৎপাদন হলে এখানে হিমাগার ব্যবস্থা না থাকায় প্রচুর পরিমান ফসল নষ্ট হচ্ছে। যদি হিমাগার নির্মান করা হয় তাহলে কৃষকদের পাশাপাশি সরকারের প্রচুর পরিমান রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। হিমাগার স্থাপন,ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান ও পক্রিয়াজাত প্রতিষ্টান গড়ে উঠলে সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থান অন্যদিকে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বহিবিশ্বে রপ্তানী করে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় সম্ভব এমনটাই আশা করছেন চাষী ও ব্যবাসায়ীরা।