Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

34দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ঈদ শেষে কর্মক্ষেত্রে ফেরা মানুষের নানা বিড়ম্বনা। ট্রেনের টিকিট সোনার হরিণ। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও মিলছে না বাসের ও ট্রেনের টিকিট। যারা শত বিড়ম্বনা মাথায় নিয়ে ঈদের আগে ঈদের আনন্দ স্বজনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফিরে আসছিল ঈদের ছুটি শেষে কর্মক্ষেত্রে ফিরতে গিয়েও একই বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে ঐ নিম্নআয়ের যাত্রীরা। ট্রেনের টিকিট পাওয়া সোনার হরিন জোগাড়ের সময়। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও মিলছেনা বাসের টিকিট। তাই ট্রেন ও বাসের ছাদে ঠাই নিয়ে অনেকেই ফিরছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকামুখে কর্মক্ষেত্রে।

গতকাল শনিবার বিকেলে ফুলবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন ও দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা গেছে কর্মক্ষেত্রে ফেরা মানুষের উপচে পড়া ভিড়। রেলওয়ে স্টেশনে একটি করে ট্রেনে মাত্র ২০ থেকে ২৫টি আসন বরাদ্ধ থাকলেও সেখানে আসন ছাড়াই টিকিট নেওয়া যাত্রীর সংখ্যা শতাধিক। তারা ট্রেনের মধ্যে দাড়িয়ে গন্তব্যস্থলে পৌছার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেউ কেউ ঠাই নিয়েছে ট্রেনের ছাদে। একই অবস্থা ফুলবাড়ী উবর্ক্ষশী সিনেমা হল মোড়ের দুরপাল্লার বাস কাউন্টার গুলোতে। সেখানে কেউ কেউ স্বল্প দুরত্বের ছোট ছোট যাত্রীবাহি বাসগুলো ভাড়া নিয়ে কর্মক্ষেত্রে ফিরতে দেখা গেছে।

কর্মক্ষেত্রে ফেরা একটি বেসরকারি কোম্পানীতে চাকুরীজিবি আব্দুল আহাদ, সোলায়মান সরকার, আব্দুল বাতেন, তুহিন সরকার অভিযোগ করে বলেন, রেলওয়ে স্টেশনে কাউন্টারে টিকিট না পাওয়া গেলেও নির্দ্দিষ্ট কয়েকটি চা স্টলে অতিরিক্ত ভাড়ায় টিকিট পাওয়া গেছে। স্টেশন এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেণ, স্টেশনের বুকিং মাস্টাররা চাহিদা অনুযায়ী স্থানের টিকিটগুলো বিভিন্ন নামে ক্রয় করে চা এর দোকানে দিয়ে রাখে অতিরিক্ত দামে বিক্রির জন্য। তবে স্টেশন মাস্টার হাবিবুর রহমান বলেণ, ফুলবাড়ী রেলস্টেশন দিয়ে রাজধানী ঢাকায় যাতায়াত করে একতা এক্সপ্রেস, দ্রুতযাণ এক্সপ্রেস ও নীলসাগর এক্সপ্রেস নামে তিনটি আন্তঃনগর ট্রেন। এই তিনটি ট্রেনে আসন রয়েছে মাত্র ৭৮টি। অথচ প্রতিদিনের চাহিদা কয়েকশ টিকিটের। একই অবস্থা খুলনা গামী ও রাজশাহী গামী ট্রেনের। ফুলবাড়ী হানিফ এন্টারপ্রাইজের টিকিট কাউন্টার ম্যানেজার আজিজার রহমান বলেন, ফুলবাড়ী দিয়ে দিন ও রাতে ১০টি কোচ যাতায়াত করে। ১০টি কোচের ৬০টি আসন বরাদ্ধ রয়েছে। কিন্তু চাহিদা তার থেকে তিনগুন হওয়ায় যাত্রীদের চাহিদা পূরণ করা যাচ্ছেনা। একই অবস্থা অন্যান্য কোচ কাউন্টার গুলোতেও ।

ফুলবাড়ী উপজেলাটি দিনাজপুর জেলার দক্ষিনাঞ্চলের উপজেলাগুলোর যাতায়াতের কেন্দ্রবিন্দু। এই উপজেলা দিয়ে যাতায়াত করে ফুলবাড়ী উপজেলা পাশ্ববর্তী উপজেলা পার্বতীপুর, নবাবগঞ্জ, বিরামপুর ও চিরিরবন্দর উপজেলার জনগণ। এছাড়া ফুলবাড়ী পৌরশহরের কোলঘেষে গড়ে উঠা বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি, তাপবিদ্যুত কেন্দ্র, মধ্যপাড়া পাথর খনি ও উত্তরাঞ্চলের বৃহত বিনোদন কেন্দ্র স্বপ্নপুরী। তাই ফুলবাড়ীতে বাস ও ট্রেনের যাত্রী সর্বদায় ভীড় জমায়। এ কারনে শুধু ঈদে সারা বছরই বাস ও ট্রেনের টিকিটের সংকট লেগে থাকে। এর উপর ঈদের ছুটিতে অতিরিক্ত যাত্রী হওয়ায় এই ভীড় আরোও বিশগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। পশ্চিম অঞ্চল রেল কর্তৃপক্ষ উত্তরাঞ্চলের যাত্রীর সেবা বৃদ্ধির লক্ষে ও নতুন ট্রেন সংযোজন না করায় দিনাজপুর, পঞ্চগড়, ঠাঁকুরগাও, নিলফামারী ও রংপুর বিভাগের জেলার ট্রেন যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে। পাচ্ছে না কোন সেবা।