Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

বেনাপোল কাস্টমস হাউজে একটি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্সের বিন লক ও এক কর্মচারীর কাস্টমস সরকার পারমিট বাতিলের প্রতিবাদে সোমবার অর্ধদিবস কর্ম বিরতি পালন করেছে বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ এসোসিয়েশন। ফলে কাস্টমস হাউজ ও বন্দরে এ সময় কোন কার্যক্রম হয়নি। বন্ধ ছিল আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। দুপার সড়কে আটকা পড়ে কয়েকশত পন্যবাহি ট্রাক। সিঅ্যান্ডএফ স্টাফদের ডাকে এ কর্মবিরতি পালন করা হয়। এদিকে মঙ্গলবার এ ঘটনায় বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশন জরুরী সভার আয়োজন করেছে।

তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে ওই সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীর শুল্ক ফাঁকিতে সহযোগিতা না করায় সে কাস্টমস কর্মকর্তার গায়ে হাত তুলেছে। এতে তার ও তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কাস্টমস প্রশাসন এ ব্যবস্থা নিয়েছেন।

জানা যায়, বেনাপোলের নীরা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী রিপন হোসেন গত ২ আগস্ট একটি মেশিনারি পণ্যের ফাইলে কাজ করাতে যায় কাস্টমসে। তাকে দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় ফাইলটি নিয়ে ঘোরানো হয়। ৭ সেপ্টেম্বর সকালে আবারো শুল্কায়ন গ্রুপ ৪এর কাস্টমসের সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা আমিরুল ইসলামের সঙ্গে পণ্য ছাড়ানো নিয়ে তার তর্ক-বিতর্ক হয়। ওই দিন দুপুরের পরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ অভিযোগ তোলেন অবৈধ সুবিধা না দেওয়ায় ওই কর্মচারী কাস্টমস কর্মকর্তার গায়ে হাত তুলেছে। এ ঘটনায় কাস্টমস সদস্যরা রকে ঘন্টা কর্মবিরতি পালন করেন। এদিনে বিকালে কর্তৃপক্ষ দু ঘন্টার মধ্য্ইে কোন কারন দর্শানো ব্যাতিরেকে ওই কর্মচারীর কাস্টমস সরকার পারমিট কার্ড বাতিল ও সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্সের বিন লক করে দেয়। কাস্টমস কর্মকর্তারা মিছিল করে সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ৮সেপ্টম্বর সিএন্ডএফ এজেন্টস স্টাফ এসোসিয়েশন নেতৃৃবৃন্দু কর্মবিরতি পালন সহ তিন দফাদাবী আদায়ে আল্টিমেটাম দেয় পরে ঈদের লম্বা ছুটির কারণে কমিশনারের আশ্বাসে তারা কাজে যোগ দেন। পরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের এহেন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সিঅ্যান্ডএফ স্টাফরা প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেন। দীর্ঘ দিনেও বিষয়টি নিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কোন সুরাহা না করায় আবারো সিএন্ডএফ স্টাফরা আন্দোলনের ডাক দেন।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক নাসির হোসেন জানান, বেনাপোল বন্দর থেকে সরকারকে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ে প্রধান ভূমিকায় রয়েছে সিঅ্যান্ডএফ স্টাফরা। কিন্তু কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের কোন সন্মান নেই। আমদানি পণ্য ছাড় করানোর কাজে কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন ভাবে তাদের হয়রানি ও নাজেহাল হতে হয়। এসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় একটি লাইসেন্সের বিন লক ও তাদের এক কর্মচারীর কাস্টমস সরকার পারমিট বাতিল করে। তাদের বিরুদ্ধে মারধোরের মিথ্যা অভিযোগ আনে। এর প্রতিবাদে এ কর্মবিরতি ডাকা হয়েছে। দাবি না মানলে পরবর্তীতে বড় ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার ফিরোজ উদ্দিন জানান, ওই সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারী অনিয়ম করে শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করছিলেন। এসময় তার সেকাজে সহযোগিতা না করায় আমিরুল ইসলাম নামে কাস্টমসের এক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে তিনি মারধোর ও লাঞ্ছিত করেন। এতে ওই সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এই প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা তিতুদির আহম্মেদ জানান, সিঅ্যান্ডএফ স্টাফরা কাজ না করাতে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এপথে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ ছিল। পরে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য স্বাভাবিক হয়েছে।

এদিকে, ঈদের ছুটি থাকায় বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরে পণ্য জট সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে আবার কাজ বন্ধ হয়ে পড়ায় বন্দরে পণ্যজট আরো বাড়ছে।