খোলা বাজার২৪, রবিবার, ০৯ অক্টোবর, ২০১৬: সিলেটে ছাত্রলীগ নেতার চাপাতির কোপে আহত খাদিজা বেগম নার্গিস হয়তো বেঁচে যাবেন বলে জানিয়েছে স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা বলেছে, খাদিজার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বেড়েছে।সঙ্কট না কাটলেও সিলেটে ছাত্রলীগ নেতার হামলায় আহত কলেজছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিসের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।
শনিবার স্কয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক রেজাউল সাত্তার সাংবাদিকদের বলেন, “খাদিজা কনসাস নয়। তবে ব্যথা দিলে রেসপন্স করছে। ব্যথা দিয়ে দেখেছি, তাকাচ্ছে, ডান হাত ও পা নাড়াচ্ছে। গত ৩ অক্টোবর সিলেটে চাপাতি হামলার শিকার হওয়ার পর ঢাকায় এনে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মঙ্গলবার বিকাল তার অস্ত্রোপচার হয়।
খাদিজা জীবনসঙ্কটে রয়েছেন জানিয়ে ৭২ ঘণ্টার আগে তার বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। শুক্রবার ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা শনিবার সর্বশেষ অবস্থা জানানোর কথা বলেছিলেন।
ড. রেজাউল সাত্তারের সঙ্গে থাকা বেসরকারি হাসপাতালটির মেডিসিন অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের পরামর্শক মির্জা নাজিম উদ্দিন বলেন, খাদিজা এখনও মুমূর্ষু অবস্থায় আছে। তার সেরে ওঠার বিষয়ে দিন-ক্ষণ ধরে আগাম কিছু বলা যাচ্ছে না।
সারাদেশজুড়ে আলোচিত খাদিজাকে নিয়ে কোনো গুজব না রটাতে সবার প্রতি আহ্বান জানান এই দুই চিকিৎসক। খাদিজার এখন কী অবস্থা- জানতে চাইলে ডা. মির্জা নাজিম বলেন, সে মুমূর্ষু অবস্থায় আছে। নিউরোলজিক্যাল স্ট্যটাস অত্যন্ত কম। ৫-৬ এর মতো। হলফ করে বলা যাবে না, ৫ ঘণ্টা, ২৪ ঘণ্টা নাকি ৪৮ ঘণ্টা লাগবে।তবে অবস্থা আগের চেয়ে ডেফিনিটলি ভালো।
খাদিজার সেরে ওঠার আশা প্রকাশ করে ডা. সাত্তার বলেন, তার সারভাইভ্যালের চান্স আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। ৯৬ ঘণ্টা পর এসে মনে হচ্ছে, সে বেঁচে যাবে।তবে এই কলেজছাত্রী সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারবে কি পারবে না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন চিকিৎসকরা। সে নরমাল হয়ে যাবে, না কি কিছুটা ডেফিসিয়েন্সি থাকবে, তা সময়ের সাথে সাথে বলা যাবে। ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে তার রেসপন্স কেমন হবে তা বলা যাবে,বলেন নিউরোসার্জন সাত্তার।
সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা সেদিন বিকালে এমসি কলেজে স্নাতক পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে আসার পর হামলার শিকার হন।ধারাল অস্ত্র দিয়ে তার মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। খুলি ভেদ করে মস্তিষ্কও জখম হয় বলে চিকিৎকরা জানান।
হামলাকারী শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল আলমকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।তার শাস্তির দাবিতে টানা বিক্ষোভ চালিয়ে আসছেন সিলেটের কলেজ শিক্ষার্থীরা। দেশের নানা প্রান্তেও প্রতিবাদ চলছে।
ছাত্রলীগ নেতার এই ঘটনার জন্য সরকারের ‘প্রশ্রয়কে’ বিএনপি দায়ী করলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলেছেন, অপরাধী যেই হোক, তাকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।