খোলা বাজার২৪ মঙ্গলবার, ১৮অক্টোবর, ২০১৬: একটি চক্র আবারো গুলশান অফিস নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। গতকাল দুইটি জাতীয় দৈনিকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব শিমুল বিশ্বাসকে নিয়ে মনগড়া একটি রির্পোর্ট ছেপেছে। ঐ রিপোর্ট নিয়ে গতকাল বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্য লক্ষ্য করার মত। বিষয়টা এমন যে- বিএনপির সব সমস্যার মূলে যেন শিমুল বিশ্বাস। ঐ খবরের ভাষ্য অনুযায়ী চীনা প্রেসিডেন্ট শি জেন পিং এর সাথে বেগম খালেদা জিয়ার একান্ত বৈঠক না হওয়ার কারণ একমাত্র শিমুল বিশ্বাস।
এছাড়া ঐ রিপোর্টে এও জানানো হয়, বেগম খালেদা জিয়া হোটেল লা মেরিডিয়ানে পৌছানোর আগেই শিমুল বিশবাস গোপনে হোটেলে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন এবং সুযোগ বুঝে মিটিং এ অংশগ্রহন করেন।
ঘটনাস্থলে হাজির আমাদের প্রতিবেদক এর ভাষ্য অনুযায়ী শিমুল বিশ্বাস বেগম খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে একই বহরে বিকেল ৪ টা ২৫ মিনিটে হোটেল লা মেরিডিয়ানে পৌছান।
এছাড়া ঐ বৈঠকের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত চাইনিজ প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বেগম খালেদা জিয়া হোটেল লা মেরিডিয়ানে “রাঙামাটি” স্যুটে চীনা প্রেসিডেণ্টের সাথে বৈঠক করেন। ঐ বৈঠকটি কেমন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে তার ব্যবস্থাপনা ছিল চীনা দূতাবাসের দখলে।
এছাড়া একই স্থানে একই রকম পরিবেশে চীনা প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সংসদের স্পিকারের সাথে সাক্ষাত করেন। কাজেই বিষয়টি মোটেই কাকতলীয় নয়।
ঐ রিপোর্টে আরো উল্লেখ করা হয়, বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাথে নির্ধারিত বৈঠকে শিমুল বিশ্বাসের নাম না থাকলেও তিনি বৈঠকে যোগ দেন। বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক– শিমুল বিশ্বাস বিএনপি চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব। তাই তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সাথে বৈঠকে যোগ দিতেই পারেন।
একই কারণে ঐ বৈঠকে নির্ধারিত তালিকায় নাম থাকলেও বিএনপি চেয়ারপার্সনের ব্রিগেডিয়ার পদমর্যদার একজন অবসরপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মকর্তাও বৈঠকে অংশগ্রহন করে।
ঐ রিপোর্টের ভাষ্য অনুযায়ী শিমুল বিশবাস বৈঠকে আলোচিত বিষয়দী গোপনে সরকারকে জানিয়েছেন। কিন্তু ঐ সৌজন্য সাক্ষাত কাভার করতে যাওয়া অন্যন্য কাগজ ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিবেদকদের ভাষ্য অনুযায়ী জানা যায়, চীনা প্রেসিডেন্টের সাথে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রায় সব মিটিং ছিল খোলামেলা পরিবেশে।
চীনা প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাংলাদেশি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যগণও বৈঠকের কাছাকাছি সবসময় ছিল। এই বৈঠক কোন গোপন বৈঠক ছিল না।
সুত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বেগম খালেদা জিয়া দূড়চিত্তে তার মতামত রাখেন এবং চীনা প্রেসিডেন্ট অত্যন্ত গুরুতর দিয়ে বেগম জিয়ার বক্তব্য শোনেন এবং চায়নার সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে প্রেসিডেন্ট জিয়ার ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। একই সাথে অন্য একটি জাতীয় দৈনিকে গুলশান অফিস কেন্দ্রিক নানান অনিয়ম তুলে ধরা হয়েছে। যেখানেও সর্বাগ্রে নাম এসেছে শিমুল বিশ্বাসের।
এখানে লক্ষনীয় যে, বিএনপি খুব শীঘ্র্য়ই কয়েকটি অঙ্গ সংগঠনের চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করতে যাচ্ছে। আর এই সময়টা বেছে নেওয়া হয়েছে ব্যক্তিগত আক্রমন করার মাধ্যমে কোন একটি গোষ্ঠির ব্যক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধি করার জন্য।
ইতিপূর্বে বিএনপির মূল দলের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পূর্বে একই ভাবে ব্যক্তিগত আক্রমনের জন্য বেছে নেওয়া হয় সহ-দপ্তর সম্পাদক টিপুকে। এছাড়া গুলশান অফিসে কর্মরত মাসুদ, এনাম ও ইঞ্জিনিয়ার জসিমের বিরুদ্ধেও ঐ রিপোর্টে নাম এসেছিল।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল অত্যন্ত বড় পরিসরের জনগণের দল। এই দলের আপামর কর্মীর ইচ্ছা বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কাছ থেকে একনজর দেখা কিংবা সাক্ষাত করা। যেটা বাস্তবে প্রায় অসম্ভব। যে কারণে সকলকে খুশি করার দায়িত্ব নিয়োজিত কর্মকর্তার পক্ষে সম্ভব হয় না।
আর এতে সাভাবিক ভাবেই অনে্কে মনকষ্ট নিয়ে গুলশান অফিস থেকে ফিরে যান। আর এটার সুযোগ নিয়ে ঐ সবার্থানেষী গোষ্ঠি ব্যক্তিগত আক্রমনের মাধ্যমের নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির চেষ্টা করে। যা সম্পর্কে বেগম খালেদা জিয়াও অবগত।
বিষয়টি নিয়ে সংক্ষুব্ধ একজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, পত্রিকা যে রিপোর্ট করা হয়েছে তা উদ্দেশ্য প্রনোদিত, এই ধরনের রিপোর্ট করার আগে নিয়ম অনুযায়ী তাদের বক্তব্য নেওয়া হয়নি, মূলত কারো প্ররোরচনায় এমন মনগড়া রিপোর্ট করা হয়েছে।
যখন দল এক বিপদ সংকুল পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে, তখন নিজেদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য ঐ সবার্থানবেষী মহল অতীতের মত এখনও সোচ্চার।