Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৯ অক্টোবর, ২০১৬:  রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাতিলের দাবিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা খোলা চিঠি নিয়ে ঢাকায় দেশটির হাই-কমিশন অভিমুখে তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির মিছিল জলকামান ও কাঁদুনে গ্যাস ব্যবহার করে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে রওনা হওয়া হাই কমিশনমুখী মিছিলটি যাত্রাপথে মৌচাক ও মালিবাগ রেলক্রসিংয়ে দুই দফা পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।মৌচাকের বাধা পেরোতে পারলেও আন্দোলনকারীরা রেলক্রসিংয়ে ব্যারিকেড ঠেলে এগোতে চাইলে পুলিশ জলকামান ও কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে।

এ সময় মিছিলের অন্তত ৩০ জন আহত হন বলে দাবি করেছেন এ আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির এই শিক্ষক জানান, তাদের মিছিলটি মালিবাগ অতিক্রম করার সময় পুলিশ বাধা দেয়।এক পর্যায়ে জলকামান ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।এতে আমাদের অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হন।

2-26

সুন্দরবনের কাছে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবির পক্ষে তথ্য-উপাত্ত তুলে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি খোলা চিঠি নিয়ে ভারতীয় দূতাবাস অভিমুখে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল।পরে আমাদের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সেই চিঠি ভারতীয় হাই কমিশনে জমা দিয়ে এসেছে, বলেন আনু মুহাম্মদ।

রমনা থানার ওসি মসিউর রহমান বলেন, মিছিলটি মৌচাকে এলে আমরা ব্যারিকেড দেই। তারা মৌচাকের ব্যারিকেড ভেঙে মালিবাগে আরেকটি ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে।এসময় পুলিশ বাধা দিলে তারা ঢিল ছোড়ে।পরে জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রথমে জলকামান এবং পরে কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল ব্যবহার করা হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়ে থাকতে পারে।

এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে তেল-গ্যাস কমিটি। বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, গণসংহতি আন্দোলন, ছাত্র ফেডারেশন, সিপিবি-বাসদ, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরাম, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি অন্তত দেড় শতাধিক কর্মী-সমর্থক সমাবেশে জড়ো হন।

সমাবেশে আনু মোহাম্মদ বলেন, সরকার আমাদের যৌক্তিক দাবি বার বার প্রত্যাখ্যান করছে। যেহেতু এই সুন্দরবনের কাছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করলে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাই এই বিষয়টি তুলে ধরার জন্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠি দিচ্ছি।

খোলা চিঠিতে ভারতের এনটিসিপির অংশগ্রহণে সুন্দরবন বিনাশী রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র বাতিলের উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের পক্ষ থেকে আমরা এই খোলা চিঠি দিচ্ছি। ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ‌্য সুন্দরবনের কাছে ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘মৈত্রী সুপার পাওয়ার থারমাল’ বিদ‌্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পথে এগোচ্ছে সরকার।

জাতীয় কমিটিসহ বাংলাদেশে বিভিন্ন নাগরিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন এই বিদ‌্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধিতা করলেও সরকার বলছে, সুন্দরবনের ক্ষতি না করেই এই কেন্দ্র নির্মিত হবে। রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলের দাবিতে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার সমাবেশ এবং ভারতের দূতাবাসে ‘খোলা চিঠি’ দেওয়ার এই কর্মসূচি ছিল।

একই দাবিতে ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বর ‘চল চল ঢাকা চল’ কর্মসূচিকে সামনে রেখে অক্টোবরে সারা দেশের বিভাগ ও জেলা সদরে সমাবেশ ও পদযাত্রার কর্মসূচি রয়েছে কমিটির।