Tue. Apr 29th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
indexখোলা বাজার২৪, শনিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৬: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন এ নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। তবে সব কিছু ছাপিয়ে সামনে চলে এসেছে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ছাত্রলীগের এক সময়ের সভাপতি এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নাম। যদিও কয়েকদিন ধরে আলোচনায় ছিলেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের নাম। কিন্তু এদের মধ্যে দু’জনের নামই আলোচনা হচ্ছে সর্বত্র। এরা হলেন সৈয়দ আশরাফ ও ওবায়দুল কাদের।
দলের সভাপতি পদে গত ৩৫ বছরের মতো এবারও অপ্রতিদ্বন্দ্বী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তাকে ছাড়া অন্য কাউকে সভাপতি মানবেন না বলে ইতিমধ্যে দলের জাতীয় কমিটি ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি সদস্যরা ঐক্যবদ্ধভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। তবে কে হচ্ছেন এবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, এ নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর এক সদস্য  জানান, বিগত ৩টি সম্মেলন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ২০০২ সাল থেকে যে কয়েক জনের নাম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তারা শুনে আসছেন তাদের মধ্যে ওবায়দুল কাদের অন্যতম। ২০০২ সালে তিনি এ পদের প্রার্থীও হয়েছিলেন। অবশ্য ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপটে দলের ভূমিকার প্রশ্নে ২০০৯ সালের সম্মেলনে সৈয়দ আশরাফ সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন সেটা আগেভাগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।  এদিকে সাধারণ সম্পাদকের দৌঁড়ে বরাবরের মতো আলোচনায় থাকা ওবায়দুল কাদের বিগত কিছুদিন ধরে বেশ খানিকটা পিছিয়ে ছিলেন। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদটি পাবেন না-এমনটা তিনি নিজেও মনে করতেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে অনেকটা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তার আভাসও দেন। ওই অনুষ্ঠানে সাধারণ সম্পাদকসহ  দলের অন্য কোনও পদে প্রার্থী হবেন না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা সবাই নেত্রীর ওপর আস্থাশীল। আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন যখন হয় আমি মাঝে-মাঝে বিব্রত হই, লজ্জাও পাই। মনে অনেক প্রশ্নও জাগে। সম্মেলনকে সামনে রেখে আলাপ-আলোচনা আসে, পত্রিকায় ছবি বের হয়। আমি আপনাদের পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমি আওয়ামী লীগের কোনও পদে প্রার্থী নই।’
ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের পর দলের ভেতরে-বাইরে সবাই ধরেই নিয়েছিলেন, পদে আসার সম্ভাবনা নেই মনে করেই তিনি কোনও প্রসঙ্গ ছাড়াই ওই মন্তব্যটি করেন। তবে গত বুধবার দুপুর থেকেই এ পরিস্থিতি নতুন মোড় নিয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওইদিন দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের আগে ওবায়দুল কাদেরকে গণভবনে ডেকে পাঠান। সেখানে প্রধানমন্ত্রী তাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করার প্রস্তুতি নিতে বলেন বলে ওবায়দুল কাদের তার ঘনিষ্ঠ একাধিক নেতার কাছে দাবি করেছেন। বৃহস্পতি ও শুক্রবার ওবায়দুল কাদেরকেও ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে। তার অনুসারীদের মধ্যেও বেশ উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওবায়দুল কাদেরের কার্যক্রমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমপ্রতি বেশ খুশি বলে জানা গেছে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু নির্মাণ কার্যক্রম তদারকি ও বিভিন্ন স্থানে তার ?আকস্মিক ভিজিটের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। জাতীয় সংসদসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়েও মন্ত্রণালয় পরিচালনায় ওবায়দুল কাদেরের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন তিনি।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর বার্তার পর ওবায়দুল কাদের আরো সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্মেলনের প্রস্তুতির খবর নিতে যান তিনি। সেখানে একাধিক সাংবাদিক ও তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নেতার উপস্থিতিতে তিনি জানান, নেত্রী তাকে প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। কাউন্সিলের সম্মতি সাপেক্ষে তাকে সাধারণ সম্পাদক করা হবে বলে আশ্বাস পেয়েছেন এমন দাবিও করেন তিনি।
জানায়, সাধারণ সম্পাদক পদে ওয়াদুল কাদেরের নাম আলোচনায় আসার গুঞ্জন চলার পর ক্লিন ইমেজের রাজনীতিক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে গণভবনে যান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারও বৈঠক হয়। তবে কী আলোচনা হয়েছে তা জানা যায়নি। তবে এই দু’জনের মধ্য থেকেই যে একজনকে বেছে নিবেন শেখ হাসিনা-এটাই কাউন্সিলরদের ধারনা।