সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার ফ্রি বাবত ৩শ’ ৬০ টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দিতে পারেনি বলে জেএসসি পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয়নি সাগর চন্দ্র দাশ নামে এক শিক্ষার্থীকে। জানা যায়, জেলার শাল্লা উপজেলার ২নং হবিবপুর ইউনিয়নের আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা হরিধন চন্দ্র দাশের দ্বিতীয় ছেলে সন্তান সাগর চন্দ্র দাশ। সাগর গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের জানান, আমার বাবা টুকরি দোকানদার ও অত্যন্ত গরীব। আমি অনেক কষ্ট করে পড়ালেখা করি। কিন্তু ৩শ’ ৬০ টাকা পরীক্ষার ফ্রি দিতে আমি ৩দিন সময় চেয়েছিলাম। কারণ আমার দরিদ্র বাবা বলেছিলেন ৩দিন পরে টাকা দিবেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হওয়ায় স্যার আমাকে পরীক্ষার ফরম পূরল করতে দেন,ি আমি পড়তে চেয়েছিলাম। পড়ালেখা করে মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু আমি দরিদ্র বাবার ঘরে জন্ম নেওয়ায় সেই স্বপ্ন আমার স্বপ্নই রয়ে গেলে।
আমার জীবনে আর লেখাপড়া হবে না মনে হয়। সাগর কান্না জড়িতকণ্ঠে আরও বলেন, আজ পরীক্ষা। কিন্তু আমি পরীক্ষা দিতে স্কুলে না গিয়ে আজ মাছ মারতে হয়েছে। আমার দু’টি পায়েও সমস্যা আছে। আমি ঠিকমতো হাটতে পারিনি। আমার বাবা দরিদ্র হওয়ায় চিকিৎসাও করতে পারিনি। তবে আমি নিয়মিত স্কুলে গিয়েছি। মডেল টেস্ট, বইয়ের টাকাসহ সেশন ফি দিয়েছি। এভাবেই কথাগুলো বলে আর কোন কথা বলেতে পারেনি সাগর।
এ ব্যাপারে গিরিধর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনন্দ মোহন দাসের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ৩শ’ ৬০টাকার জন্য পরীক্ষা দিতে পারেনি। এটা হতেই পারে না। দেখুন গিরিধর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনন্দ মোহন দাশ, সরাসরি বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করেন। আমি তেমন কিছু জানি না। আপনি ওই ছাত্রে নাম বলুন। আগামীকাল পরীক্ষা দিতে আসবে সাগর। তিনি আরো বলেন, সাগরের রেজিস্ট্রেশন হয়েছে কি-না তাও তো জানি না।
উল্লেখ্য, গিরিধর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনন্দ মোহন দাসের বিরুদ্ধে গত বছর ছাত্রী যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। যেকারণে তিনি ৩ মাসের জন্য সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন।