খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৪ নভেম্বর ২০১৬ : নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বিনা-৯ জাতের ধানবীজ সংগ্রহ করে তা রোপন করে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। তাদের জমিতে রোপিত এ ধান সম্পূর্ণ চিটায় পরিনত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কৃষকদের মাথায় উঠেছে হাত। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা জানান, তাদের ক্ষতির পরিমান প্রায় লক্ষাধীক টাকা। এ নিয়ে উপজেলার সর্বত্রই চলছে কৃষি অফিস নিয়ে সমালোচনার ঝড়। এমন ঘটনায় কৃষি অফিসের উদাসীনতাকেই দায়ী মনে করছেন অনেকে।
নিয়ামতপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, আমন মৌসুম শুরুতেই উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের সিরাজপুর গ্রামের কৃষক তৌহিদুর রহমান ও চৌরাপাড়ার আলিমুদ্দীন, ভাবিচা ইউনিয়নের চাপড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিন এবং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের জারুল্লাপুর গ্রামের কৃষক সুজন তাদের কৃষি অফিস থেকে বিনা-৯ জাতের ধানবীজ সংগ্রহ করে।
সরেজমিনে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের সিরাজপুর মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বিনা-৯ আমনের ক্ষেত সম্পূর্ণ চিটায় পরিনত হয়েছে। ধানের গাছ লাল বর্ণের হয়ে মরে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কোনই প্রতিকার পাচ্ছেননা কৃষক।
বিনা-৯ ধান রোপনকারী সিরাজপুরের কৃষক তৌহিদুর রহমান জানান, আমনের শুরুতেই “কৃষি অফিস থেকে বিনা-৯ জাতের ১০ কেজি ধানবীজ সংগ্রহ করেন তিনি। পরবর্তীতিতে এ বীজ থেকে দুই বিঘা জমিতে ধান রোপন করেন। ধানগাছের চেহেরা দেখতে সুন্দর হলেও ধীরে ধীরে এর পাতা লাল বর্ণ হতে থাকে। কোন কিছু বুঝতে না পারায় অফিসের পরামর্শে বিভিন্ন কীটনাষক ও সার ব্যবহার করেন তিনি। এত কিছু করার পরও বর্তমানে তার জমির সম্পূর্ণ ধান চিটায় পরিনত হয়েছে”। তিনি আরও জানান, বীজতলা তৈরী থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে প্রায় পনের থেকে বিশ হাজার টাকা। তার খরচের ১ ভাগও উঠবেনা বলে জানান তিনি”।
একই রকম পরিস্থিতির কথা জানালেন, এ অফিস থেকে বিনা-৯ ধানবীজ সংগ্রহকারী কৃষক আলিমুদ্দীন, মতিন ও সুজন। তাদের জমির রোপিত ধানও চিটায় পরিনত হয়েছে।
রসুলপুর ইউনিয়নের ব্লক সুপারভাইজারের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার জানান, “পরীক্ষামূলক ভাবে এ ধান কৃষকদের দেয় হয়েছিল। কৃষকরাও তাদের পরামর্শে রোপন করেছিলেন কিন্তু ধানগাছ কেন যে চিটায় পরিনত হলো তা বুঝতে পারছেন তিনি”।
ধান চিটা হওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, “বিষয়টি তিনি জানেন। তনি আরও বলেন, সাইন্টিফিক অফিসার আবুল কালাম আজাদ আমাকে বলেছেন যে এ ধানে ৩০-৪০% চিটা হবে এরপরও কৃষকের লাভ করা সম্ভব। তবে নিয়ামতপুরে এই জাতের ধান প্রথম পরীক্ষামূলক ভাবে প্রদর্শর্ণী প্লট হিসেবে কৃষকদের দেয়া হয়েছে। তবে ধান চিটা হয়ে যাওয়ায় বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। উর্ধতন কর্মকর্তা ধানের প্লট পরিদর্শন করে গেছেন তাঁরা কৃষকের ব্যাপারে আমাকে কোন সিদ্ধান্ত দেয়নি”।