খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর ২০১৬: মৌলভীবাজারের রাজনগর-বালাগঞ্জের মধ্যবর্তী স্থান কুশিয়ারা নদীতে একটি ব্রীজ নির্মাণ এখন দু’টি উপজেলার প্রায় ১০ লাখ মানুষের প্রানের দাবী।একটি ব্রীজের অভাবে যুগের পর যুগ চরম অবহেলায় রাজনগর ও বালাগঞ্জ উপজেলার মানুসজন দিনাতিপাত করলেও কবে নাগাদ তাদের আশা পুরণ হবে তার উত্তর জানেনা কেউ। কুশিয়ারা নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মাণ হলে দুঠি উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের ১০ লাখ মানুসের শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সূচিত হবে এক সম্ভাবনাময় যুগের। এ অঞ্চলের মানুষের দাবীর যথার্থতা বিবেচনা করে প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী জীবদ্দশায় ব্রীজের ব্যবস্থা হবার আগ পর্যন্ত ফেরি চলাচলের প্রতিশ্রুতি দিলেও আজ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি।স্থানীয় সূত্র মতে, তৎকালীন বৃটিশ আমলে বাংলাদেশের নৌ-বন্দর গুলোর অন্যতম ছিল কুশিয়ারা ও কাউয়াদীঘি হাওর তীরবর্তী রাজনগর-বালাগঞ্জের মধ্যবর্তী বিলবাড়ি।
তৎকালীন বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা কুশিয়ারা নদী তীরের এ বন্দর থেকে বিভিন্ন দ্রব্য সংগ্রহ করে ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন। সে সময়ে ব্যবস-বাণিজ্যের পণ্য সংগ্রহের এক মাত্র কেন্দ্রই ছিল কুশিয়ারা-কাউয়াদীঘি হাওর তীরবর্তী রাজনগর-বালাগঞ্জ মধ্যবর্তী বিলবাড় অঞ্চল। কালের বিবর্তনে এবং দেশের স্থলপথের উন্নয়নের ফলে এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য সহ সকল ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। বছরের পর বছর চরম অবহেলিত এ অঞ্চলের হাজার হাজার পেশাজীবী মানুষ সহ স্কুল-কলেজের ছাত্র/ছাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন নৌকা যুগে কুশিয়ারা পার হয়ে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন। রাজনগরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো দূরবর্তী হওয়ায় স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীরা কুশিয়ারা নদী পার হয়ে বালাগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসা করে।
ফলে বিভিন্ন সময় নৌকাডুবির মত মারাত্মক দুর্ঘটনাও ঘটছে। তাই অবহেলিত এ অঞ্চলের লোকজনের দীর্ঘদিনের প্রানের দাবী কুশিয়ারা নদীর উপর একটি ব্রীজ। ব্রীজটি নির্মাণ হলে শুধু রাজনগর-বালাগঞ্জ নয় পার্শ্ববর্তী ফেঞ্চুগঞ্জ ও ওসমানীনগর থানার মানুষও উপকৃত হবে। এসব অঞ্চলের মানুষ সিলেট মৌলভীবাজার সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে সহজে যোগাযোগ করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা যায়, উভয় তীরের মানুষের দাবীর প্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী বিলবাড়ী অঞ্চলে একটি ব্রীজ নির্মানের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য পরিদর্শনে এসেছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের প্রকৌশলী অধ্যাপক সুজিত কুমার বালা ও অধ্যাপক তারেকুল ইসলাম।
তারা ব্রীজ নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য কুশিয়ারা তীরবর্তী বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে তাদের পরিদর্শন রিপোর্টটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করেন। পরিদর্শনের সময় তাদের সাথে ছিলেন বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জের সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান,মৌলভীবাজার সদর-রাজনগর আসনের সংসদ সদস্য প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলীর প্রতিনিধি সৈয়দ মোস্তাক আলী, বালাগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর, রাজনগর উপজেলা প্রকৌশলী রুবাইয়াত জামান, বালাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান সহ উভয় এলাকার বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।ফতেপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল কাহির চৌধুরী জানান, মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সায়রা মহসিন কয়েকদিন পুর্বে মোকামবাজারে একটি জনসভায় এলাকাবাসীকে জানিয়েছেন,কুশিয়ারা নদীতে ব্রীজ নির্মাণের বিলটি একনেকে পাশ হয়েছে।এখন তা বাস্তবায়ন হতে সময়ের ব্যাপার মাত্র।