Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২ জানুয়ারি ২০১৭:  28কথায় বলে বিশ্বাসে স্বর্গ মিলে, তর্কে বহুদূর। বিশ্বাস করে পথের ঘাস পাতা খেলেও নাকি অসুখ সারে। তেমনি জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার সিমান্তবর্তী দূর্গম চরাঞ্চলে পূর্ব মাজনাবাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে । জানা যায়, আবুল কাশেম নামে এক তরিকত পাগল গত বছরের রমজানের ১২ তারিখে মারা যায়। পরে তার লাশ মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়। এর ২ মাস পর তার স্ত্রী অমিলা বেগম স্বপ্নে দেখেন, তার স্বামীর কবরের পাশে বোতল ভর্তি পানি রেখে সেই পানি পান করলে সকল রোগ হতে মুক্তি পাওয়া যায়। স্ত্রীর স্বপ্নের কথায় বিশ্বাস করে সারা শরীরে ঘা’য়ে আক্রান্ত তার এক আত্মীয়কে কবরে রাখা পানি পান করালে সে ভাল হয়ে যায়। এমনি করে অনেকে ভাল হলে সংবাদটি ধীরে ধীরে প্রচার হতে থাকে। এরপর থেকে প্রতিদিন বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা হতে নারী-পুরুষ আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা ছুটে আসছে বোতল হাতে পানি নিতে। পানির অভাব হতে রেহাই পেতে এলাকাবাসী ১০টি নতুন টিউবওয়েলও পুতে দিয়েছেন। এদিকে চায়ের দোকান, খাবারের হোটেল, ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ডালি ভর্তি করে বোতল নিয়ে বসে পড়েছে বিক্রীর জন্য। দানের টাকায় কবরের উপর নির্মাণ করা হচ্ছে মাজার, পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে দান বাক্স। রোগীরা তাদের ইচ্ছামত টাকা দান করছেন। কবরের চারপাশে নারীপুরুষের ভীড়। টাকা ছুড়ে ফেলছে কবরের উপর। এ ছাড়াও সবার হাতেই ৮/১০টি করে পানির বোতল। বগুড়ার সারিয়াকান্দির মহর আলীর সাথে জানতে চাইলে সে জানায়, তার কিডনিতে পাথর হয়েছিল, সারাক্ষন ব্যাথা করতো। এই পানি খেয়ে তার অসুখ ভাল হয়ে গেছে।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার হাফিজুর রহমান জানান, কবরের পানি রেখে তার দুই আত্মীয় ভাল হয়েছে। স্থানীয় আর এক ইউপি সদস্য দুলাল মিয়াকে কবরে টাকা কেন দেয়া হয়? এ টাকা কি আপনারা চান, নাকি তারা ইচ্ছা করেই দিচ্ছে? এ কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা পয়সা কেউ চায় না, তারা ইচ্ছা করেই দেয়। মানা করলে লোকেরা বলে আমরা টাকা দিব আপনারা না করেন কেন? ওই গ্রামের জমির শেখ বলেন, সবাই পানি খেয়ে ভাল হয় শুনে আমি খেয়ে আমার হার্টেরও রোগ ভাল হয়েছে। মৃত আবুল কাশেমের বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনার চার আনা ক্যাশ নাই। উনি দিন এনে দিন খেত, তার বাসা বাড়ী জমা জমি কিছুই নেই । সে রাজ মিস্ত্রীর কাজ করত।
মনসুর নগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঃ রাজ্জাক জানালেন, আমরা প্রসাশনের মাধ্যমে এটা বন্ধ করার চেষ্টা করেছি কিন্তু কোনভাবেই বন্ধ করা যাচ্ছেনা। দিন দিন আরও বেশী লোক এখানে এসে পানি নিয়ে যাচ্ছে এবং নাকি ভালও হচ্ছে। এই পানি খেয়ে যদি গরীব মানুষের উপকার হয় তাতে বাধাঁ দিয়ে লাভ কি? মাদার গঞ্জ থেকে এসেছে টুটুল মিয়া একমাস আগে এসে পানি নিয়ে খেয়ে তার রোগ ভাল হয়েছে। কাজেই সে আবার এসেছে পানি নিতে। বক্সীগঞ্জ থেকে এসেছেন জহুরা বেগম । তিনি এতদূর কেন এসেছেন জানতে চাইলে, তিনি বলেন, আমার স্বামীর হাপানী ছিল এক সপ্তাহ পানি খেয়ে ভাল হয়েছে এবং সে এখন লাঠি ছাড়া চলাচল করে। বগুড়ার ধুনট থেকে এসেছে আছমা বেগম, সে এখানকার পানি খেয়ে তার ব্রেনের সমস্যা কমেছে তাই তিনি আবার এসেছেন পানি নিতে। এ ব্যাপারে শিমলা বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আঃ মালেক বলেন, ইসলামী শরিয়তে এটি একটি বেদাত। এমন কি শরিয়ত বিরোধী । আল¬াহর সাথে শেরক করা।