খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৬ জানুয়ারি ২০১৭: পবিত্র মক্কা শরিফ ও এর আশেপাশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজের জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে সৌদি সরকার বিভিন্ন দেশকে হজযাত্রী পাঠানোর জন্য কোটা পদ্ধতি চালু করে। এ কারণে ইচ্ছা ও চাহিদা থাকা স্বত্বেও অনেকেই হজে যেতে পারেননি।
মক্কা শরিফের সংস্কার কাজের অনেকাংশ সম্পন্ন হওয়ায় সৌদি কর্তৃপক্ষ আস্তে আস্তে হজযাত্রী বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। এ প্রেক্ষিতে ধারণা করা হচ্ছে, কোটাপ্রাপ্তি সাপেক্ষে ২০১৭ সালে পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যেতে পারবেন ১ লাখ ২৭ হাজার বাংলাদেশি।
এর মধ্যে ১০ হাজার সরকারি ব্যবস্থাপনায় আর বাকিরা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন।
তবে হজ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) নেতৃবৃন্দ আশা করছেন, এবার কমপক্ষে দেড় লাখ বাংলাদেশিকে হজ পালনের সুযোগ দেবে সৌদি আরব।
পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১ সেপ্টেম্বর ১৪৩৮ হিজরি সনের ৯ জিলহজ তারিখে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে।
তবে হজ গমনের বিষয়ে গত বছরের প্রাক-নিবন্ধিত প্রায় ৪০ হাজার হজযাত্রী অগ্রাধিকার পাবেন।
চলতি মাসের ২৮ তারিখে সৌদি আরবের জেদ্দায় হজ বিষয়ে সৌদি-বাংলাদেশ দ্বি-পাক্ষিক হজ চুক্তি সম্পাদিত হবে। সৌদি আরবের হজমন্ত্রী ও বাংলাদেশের ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান নিজ নিজ দেশের পক্ষে হজ চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। এবার হজ চুক্তিতে বাংলাদেশের হজযাত্রীর কোটা আরও বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে ২০১৭ সালের পবিত্র হজ পালনের ব্যয় সংক্রান্ত হজ প্যাকেজ চূড়ান্ত করেছে মন্ত্রণালয়। সরকারি অনুমোদনের জন্য শিগগিরই এ প্যাকেজ মন্ত্রিসভায় উঠবে। এবার অনেকটা সময় নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় হজ প্যাকেজ যাচাই-বাছাই করে প্রণয়ন করছে। যাতে এটা নিয়ে বিতর্ক না উঠে।
প্রস্তাবিত হজ প্যাকেজের আওতায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় দু’টি প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে। এ ক্যাটাগরির প্যাকেজ মূল্য প্রস্তাব করা হয়েছে জনপ্রতি ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৬শ’ ৭২ টাকা। আর বি ক্যাটাগরির প্যাকেজ নির্ধারণ করা হয়েছে জনপ্রতি ৩ লাখ ৮ হাজার ৬শ’ ২৮ টাকা। মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর এ দু’টি প্যাকেজ চূড়ান্ত হবে।
প্যাকেজের বাইরে প্রত্যেক হজযাত্রীকে কোরবানি খরচ বাবদ (কমপক্ষে) সাড়ে ১০ হাজার টাকার সমপরিমাণ ৫শ’ সৌদি রিয়াল নিজ দায়িত্বে সঙ্গে নিতে হবে।
সরকার ঘোষিত হজ প্যাকেজের সঙ্গে মিল রেখে বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলো তাদের প্যাকেজ ঘোষণা করবে। কোনোভাবেই এর চেয়ে কম মূল্যে প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে না।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৫ জানুয়ারি সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে পারে। আর বেসরকারি হজযাত্রীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়াও দ্রুত শুর হবে।
চলতি বছর হজ প্যাকেজের মূল্য প্রায় ১০ হাজার টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০১৬ সালে এ ক্যাটাগরির প্যাকেজের মূল্য ছিল জনপ্রতি ৩ লাখ ৬০ হাজার ২৮ টাকা আর বি ক্যাটাগরির প্যাকেজের মূল্য ছিল ৩ লাখ ৪ হাজার ৯শ’ ৩টাকা।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকলেও হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমানো হয়নি। চলতি বছর হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে (বিভিন্ন ট্যাক্সসহ) জনপ্রতি ১ লাখ ২৬ হাজার ৬শ’ ৯৫ টাকা ৭১ পয়সা। মক্কা-মদিনায় এবার যাত্রীদের বাড়ি ভাড়া ধরা হয়েছে জনপ্রতি ১ লাখ ৫০ হাজার ৫শ’ ৯১ টাকা। তবে বাড়ি ভেদে বাড়ি ভাড়ার অব্যয়িত অর্থ যদি থাকে তা সৌদি আরবে যাত্রীদের ফেরত দেওয়া হবে।
সরকারিভাবে হজগমনে ইচ্ছুকদের প্রাক-নিবন্ধের সময়ে প্রত্যেককে নিবন্ধন ফিসহ ৩০ হাজার টাকা নির্ধারিত ব্যাংকে জমা দিতে হবে। প্যাকেজের অবশিষ্ট অর্থ আগামী ২০ মে’র মধ্যে ব্যাংকে জমা দিয়ে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।