খােলা বাজার২৪।। মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭: ৭২ ঘণ্টায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের টেকনিক এখন বাংলাদেশেই। জাদু নয়, শতভাগ বিজ্ঞানসম্মত। সে প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে দুয়েকটি বিষয়ে আলোকপাত করা জরুরি। বিশ্বব্যাপী ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সুস্থ জীবনযাপনের ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সুস্থ জীবনযাপন মানে হচ্ছেÑ স্বাস্থ্যকর খ্যাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা বা ব্যায়াম এবং মন সুস্থ রাখা।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য হলিস্টিক পদ্ধতি এখন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। হলিস্টিক পদ্ধতি হলো আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রাচীন প্রাকৃতিক পদ্ধতির আশ্চর্য সমন্বয়। এই চিকিৎসার মূল চাবিকাঠি দুটি। স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়াম। তার আগে মন নিয়ন্ত্রণের জন্যে চাই সঠিক উপায়ে মেডিটেশন। মানসিক চাপই মানুষের অসুখ ও অশান্তির মূল কারণ। মানসিক চাপ কমানোর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পুষ্টিবিদ হলিস্টিক হেলথ কেয়ার সেন্টারের আমন্ত্রণে ঢাকায় ডা. বিশ্বরূপ রায় চৌধুরী তার ওরিয়েনেটশনে জুলাই মাসে লেকচারে ৭২ ঘণ্টায় ডায়াবেটিস সারিয়ে তোলার কথা বলেন। তার চিকিৎসা পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে আমরা হলিস্টিক সেন্টার থেকে এক মাসের মধ্যে এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে তিন দিনব্যাপী গত ১৭-১৯ আগষ্ট ২০১৭ইং কর্মশালার ব্যবস্থা করি ঢাকায়। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন এবং যোগব্যায়াম, মেডিটেশনসহ হলিস্টিক পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় ৩৪ জন ডায়াবেটিস রোগীর ওপর। সৃষ্টিকর্তাকে অসীম কৃতজ্ঞতা, আমরা যাদুকরী সাফল্য পেয়েছি। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তির রোগের অবস্থার পরিবর্তন সম্পর্কে তথ্যপ্রমাণ এখন আমাদের হাতে। এদের ভেতর আছেন সরকারের মাননীয় সচিরের স্ত্রী, নামকরা ঔষুধ কোম্পানীর ডাইরেক্টর মার্কেটিং এর স্ত্রী, সরকারের অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব, প্রকৌশলী, অধ্যক্ষ, অধ্যাপক, শিক্ষক, চিফ মেরিন ইঞ্জিনিয়ার, সরকারী আইনজীবী, দেশের সুপরিচিত একজন সিনিয়র সম্পাদক/ সাংবাদিকের স্ত্রী, গৃহীনি ও অন্যান ব্যাক্তিবর্গ। মাত্র তিনদিনের প্রচেষ্টায় এদের প্রত্যেকেরই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে (কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী ৩৪ জন রোগীর ক্ষেত্রেই উন্নতি ঘটেছে)। মাত্র তিনদিনের চেষ্টায় ডায়াবেটিসকে পরাভূত করে ওষুধ ও ইনসুলিন ছাড়াই আগের মতো সুস্থ থাকার এমন দৃষ্টান্ত দেশের কোটি ডায়াবেটিস রোগীকে নিশ্চয়ই ভরসা দেবে।
এই চিকিৎসার মূল চাবিকাঠি দুটি। স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়াম। খাদ্যের একটি চার্ট আমরা প্রস্তুত করেছি বিজ্ঞানসম্মতভাবে। সেটা অনুসরণ করতেই হবে। রোগীর বয়স, ওজন এবং রোগের ধরন এবং তার বর্তমান অবস্থার ওপরই নির্ভর করে তার প্রতিদিনের খাদ্যগ্রহণ। আর ব্যায়ামের ব্যাপারটি বিবিধ। তার জন্যে নিয়মিত সময় দিতে হয়, চর্চা করতে হয় সঠিক নিয়ম মেনে। এভাবে ডায়াবেটিসকে পরাস্ত করা এখন শুধু রোগীর সদিচ্ছা ও দৃঢ়তার ওপরেই নির্ভরশীল। আশা করা যায় সেই দিন আর বেশি দূরে নয় যখন দেশে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে একটি বিপ্লব সাধিত হবে।