খােলা বাজার২৪। শুক্রবার, ০৯ মার্চ, ২০১৮: সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা করার সময় সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ এতটা বেড়ে যায় যে রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় নেমে আসতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে, প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে এমনটা দাবি করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের চিন্তাটা হল, জীবনযাত্রা দিন দিন এমন হচ্ছে যে বছর বছর ব্লাড প্রেসারের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়বে বই কমবে না! তাই এমন পরিস্থিতিতে সুস্থ ভাবে বাঁচতে লিফট নয়, সিঁড়ি ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
মন খারাপের প্রকোপ কমিয়ে মুডকে চাঙ্গা করে তুলতে সিঁড়ির ব্যবহার বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা বা নামার সময় আমাদের মস্তিষ্কের অন্দরে এন্ডোরফিন নামক “ফিল গুড” হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মন চাঙ্গা হয়ে উঠতে সময় লাগে না। তাই তো এবার থেকে কাজের চাপে বা অন্য কারণে মন ক্ষতবিক্ষত হলেই সিঁড়ির সামনে এসে দাঁড়াবেন, দেখবেন নিমেষে সব ভাল লাগতে শুরু করবে।
সেই সঙ্গে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীর যেমন বুড়ো হতে থাকে, তেমনি জয়েন্টের সচলতাও কমতে শুরু করে। ফলে ব্যথা-যন্ত্রাণায় জীবন জর্জরিত হয়ে ওঠে। আপনি যদি না চান আপনার সঙ্গেও এমনটা হোক, তাহলে ভুলেও লিফট ব্যবহার করবেন না। পরিবর্তে সিঁড়ির সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে হবে। কারণ খেয়াল করে দেখবেন সিঁড়ি ব্যবহার করলে জয়েন্টের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। ফলে শরীরের বয়স বাড়লেও তার প্রভাব জয়েন্টের উপর পরতে পারে না।
সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামার সময় আমরা আমাদের গ্র্যাভিটির বিপরীত মুখি হই। তাই এই সময় নিজের ওজনকে সামলে একের পর এক ধাপ নিয়ে উপরে ওঠার সময় পায়ের পেশীর উপর চাপ পরতে থাকে। এমনটা দিনের পর দিন হতে থাকলে একদিকে যেমন পায়ের নিচের অংশের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তেমনি পেটের পেশীর সচলতাও বাড়তে থাকে। ফলে বেলি ফ্যাট কমার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নাম করলে বোন ডেনসিটির উন্নতি ঘটতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হাড় শক্ত হয় সেই সঙ্গে আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। এই কারণেই তো ৪০-এর পর থেকে মহিলাদের লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত সিঁড়ি ভাঙার অভ্যাস করলে শারীরিক সচলচতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে শরীরে জমতে থাকা অতিরিক্ত ক্যালরি ঝরতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়, যা লিফট ব্যবহার করলে কখনই সম্ভব হত না। যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে সিঁড়ি দিয়ে ওঠা-নামা করার সময় সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। সেই শঙ্গে হার্টের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, যাদের পরিবারে হার্টের রোগের ইতিহাস রয়েছে,তাদের তো এই কারণেই বেশি করে সিঁড়ি ব্যবহারের প্রয়োজন রয়েছে। সূত্র: বোল্ডস্কাই