Tue. May 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

 


খোলাবাজার২৪.মঙ্গলবার,৩১ জুলাই, ২০১৮ঃ কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের যারা রাজাকারের সন্তান বলে গালি দেয়, তাদের ভর্ৎসনা করেছেন প্রবীণ আইনজ্ঞ ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘যারা কোটা সংস্কার আন্দোলনে আছে, তারা রাজাকারের বাচ্চা নয়, বাংলাদেশের সন্তান। ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের যারা অপমান করে, তাদের দুই চড় মারবো’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংবিধান প্রণেতা এবং জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।

আজ দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আজকে যারা কোটা আন্দোলন করছে এরা কারা? এরা রাজাকারের বাচ্চা নয়, এরা এই দেশের সন্তান। যারা এই আন্দোলনকারীদের অপমান করে, তারা আসো, আমার সামনে দাঁড়াও। আমাকে গুলি করে মারার আগে তাদের দুই চড় মারবো।’

ড. কামাল আরও বলেন, ‘আমাদের যে ছেলেরা ন্যায্য প্রস্তাব নিয়ে যাচ্ছে, সংস্কারের প্রস্তাব করার তাদেরও মৌলিক অধিকার আছে। লাখ লাখ জীবন দিয়ে এই অধিকার অর্জন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত দলিল— যেটা জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে, তাতে লেখা আছে। তার নাম ভাঙিয়ে যারা সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে, দেখো সেই দলিলটাতে কী লেখা আছে। এই দেশের মালিক এই দেশের জনগণ। এই দেশের মালিক কোনও ব্যক্তি না। তাদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।’

ইতোমধ্যে একটি ঐক্য প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাচ্ছে এমন দাবি করে কামাল হোসেন বলেন, ‘এদেশের মানুষ নিজের দিকে তাকিয়ে দেখেন—আমরা মালিক। তারা প্রশ্ন করে, আমরা কী করে মালিক? আমাদের কথা তো কেউ শোনে না। আমি বলি, আপনারা ঐক্যবদ্ধ হন, তারপর দেখেন শোনা যাবে কী যাবে না। ইতোমধ্যে একটি ঐক্য প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাচ্ছে, এরমধ্যেই টনক নড়ে যাচ্ছে। শক্তভাবে আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আসুন আমরা দাঁড়াই।’

তরুণ সমাজের ওপর আক্রমণ লজ্জার বিষয় উল্লেখ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রথম গণকবর কোথায় খোঁড়া হয়েছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, চলুন আমার সঙ্গে আমি দেখাবো। প্রত্যেকটা শিক্ষককে টেনে টেনে বের করা হয়েছিল, আর পাইকারিভাবে ছাত্রদের হত্যা করা হয়েছিল। প্রথম কাতারের মুক্তিযোদ্ধারা ছাত্র ছিল না? তরুণ ছিল না? এই ইতিহাসকে কেন মুছে দেওয়া হবে? তাদের উত্তরসূরি আজকের ছাত্ররা। এই ছাত্ররা কোনও কিছু নিজের পকেট ভারি করার জন্য চাচ্ছে? কোনও লুটপাটের ভাগ চাচ্ছে? কোটার ব্যাপারে তাদের কথা হচ্ছে— সংস্কার করো।’

কোনও কিছু পাওয়ার জন্য কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেনি উল্লেখ করে কামাল হোসেন আরও বলেন, ‘আমার পরিষ্কার মনে আছে, যখন স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু বললেন, সবাইকে দুই লাখ করে টাকা দেবো, তখন অনেকেই আমার দেওয়া চেক সঙ্গে সঙ্গে ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছেন। যারা আজকে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ব্যবসা করে, তারা এ কথা ভুলে গেছে যে, মুক্তিযোদ্ধারা কী মানসিকতা নিয়ে যুদ্ধ করেছেন। বাড়িঘর দেওয়া হয়েছে, আমরা বাড়িঘর পাওয়ার জন্য, ব্যবসা করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি।’

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় কয়লা চুরি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কয়লা চুরির পর কয়েকদিন পর মাটি চুরি হবে। লক্ষ্য করবেন চুরি ডাকাতির কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু আইনানুগ কোনও ব্যবস্থা কি নেওয়া হচ্ছে? আমি প্রশ্ন রাখলাম।’