Wed. Apr 23rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার ২৪,বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন,২০১৯ঃ আইলান কুর্দি ও ভ্যালেরিয়া এখন বিশ্ব মিডিয়ায় পরিচিত নাম। সীমান্ত পেরিয়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিতে যাওয়ার পথে এই দুই শিশুর ভাগ্যেই জুটেছে করুণ পরিণতি।

সমুদ্র সৈকতে আইলানের পড়ে থাকা মৃতদেহ বিশ্ববাসীকে শরণার্থী সংকট নিয়ে ভাবিয়েছিল, বাবার সঙ্গে ছোট্ট ভ্যালেরিয়ার মরদেহ আমাদের আবারও এই সংকট নিয়ে ভাবতে বাধ্য করেছে।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন প্রত্যাশী অস্কার আলবার্টো মার্টিনেজ তার শিশু কন্যা  ভ্যালেরিয়াকে নিয়ে নদী পার হওয়ার সময় ডুবে মারা যান।

আলবার্টো এল সলভাদরের বাসিন্দা ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর জন্য গত দুই মাস ধরে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে মেক্সিকোর মাতামোরোসের একটি শরণার্থী শিবিরে অপেক্ষা করছিলেন।

তীব্র গরমের মধ্যে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও বর্ডার পার হতে না পারায় তারা সিদ্ধান্ত নেন, নদী পার হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করবেন। আর এটাই হয় তার জীবনের কাল।

আলবার্টোর মতো লাখ লাখ শরণার্থী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে মেক্সিকান সীমান্তে দিনের পর দিন অপেক্ষা করছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি সত্বেও লাখ লাখ অভিবাসন প্রত্যাশী মধ্য আমেরিকার দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে থাকা ব্রায়ান হেস্টিংস জানান, এবছর দক্ষিণাঞ্চলের সীমান্ত দিয়ে প্রায় ৬ লাখ ৬৪ হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৪৪ শতাংশ বেশি।

নিজ দেশ থেকে মেক্সিকো বর্ডার পর্যন্ত পৌঁছাতে তাদের পাড়ি দিতে হচ্ছে দীর্ঘ পথ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তীব্র তাপে কখনও মরুভূমি পড়ি দিয়ে, কখনও খরস্রোতা নদী সাঁতরে তারা সীমান্তে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।

গুয়াতেমালা এবং মেক্সিকোর যে সীমান্তে কর্মকর্তারা অভিবাসীদের কাগজপত্র পরীক্ষা করেন, সেখানেও দীর্ঘ সময় তাদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। পুলিশের সঙ্গে অভিবাসীদের সহিংসতার মতো ঘটনাও ঘটেছে।

কিন্তু সবকিছুর পরেও সীমান্তে অভিবাসন প্রত্যাশীদের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।

অভিবাসন প্রত্যাশীরা জানিয়েছেন, নির্যাতন, দারিদ্র্য আর সহিংসতা থেকে বাঁচতে তারা নিজেদের দেশ গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস বা এল সালভাদর থেকে পালিয়ে এসেছেন।

মধ্য আমেরিকার দেশ হন্ডুরাসে অপরাধী চক্রের সহিংসতা, মাদক যুদ্ধ এবং দুর্নীতি বড় ধরনের সমস্যা। পুরো অঞ্চলটিতে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এসব থেকে বাঁচতে অনেকে দেশটি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

বেশিরভাগ বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র বা মেক্সিকোয় তারা নতুন জীবন এবং উন্নত সুযোগের আশা করছেন।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি বলেছেন, হতাশা ও সহিংসতা থেকে বাঁচতে অভিবাসন প্রত্যাশীরা অনিশ্চিত জীবনের দিকে নিজেদের ঠেলে দিচ্ছেন। যেখানে আলবার্টো ও ভ্যালেরিয়া লাখও অভিবাসন প্রত্যাশীর প্রতিনিধি।