খােলাবাজার২৪,সোমবার,১৬আগস্ট,২০২১ঃ শুভ খান। অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। জীবনের সবচেয়ে সংকট সময়টা পার করছেন। গেল ডিসেম্বর মারা গেছেন শুভর বাবা। মা গৃহিণী।পরিবারে উপার্জনক্ষম একমাত্র বড় বোন। তিনি মাস্টার্সে পড়ছেন। টিউশনি করে মাসে ৭-৮ হাজার টাকা আয় করেন। তা দিয়েই টানাপোড়েন জীবনযাপন করছেন শুভর পরিবার। আজ সোমবার বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয় তাদের। সহায়তা পেয়ে শুভ বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পরে আমরা খুব অসহায় হয়ে পরেছি। আমার বড় বোন টিউশনি করে যেই টাকা পায় তা দিয়েই আমরা চলি। আর মাঝে মধ্যে আত্মীয়রা কিছু সাহায্য করে। আজকে আপনাদের সাহায্য দিয়ে কিছু দিন চলতে পারব। আপনাদের ধন্যবাদ আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।
আরেক উপকারভোগী মো. কফের। জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। কাচের খেলনা, অ্যালবাম বানিয়ে মেলায় বিক্রি করতেন।কিন্তু গত দুবছর ধরে কোন মেলা হচ্ছে না। তাই তার বিক্রিও কমেছে কয়েকগুণ। এখন সপ্তাহে ৪০০-৫০০ টাকা আয় করেন। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে এই আয়েই চলছে তার মানবেতর জীবনযাপন। বসুন্ধরা গ্রুপের খাদ্য সহায়তা পেয়ে কফের বলেন, আমাগর অসহায় দিনে আপনারা সাহায্য করলেন খুব ভালো হইলো। বসুন্ধরাক যেন আল্লা হায়াত দারাজ করে। গুনার খাতা মাফ করে। সুখে রাখে।
আজ সোমবার নাটোর জেলার সদর উপজেলায় তাদের মতো আরো ৪০০ অসহায়, হকার ও পরিবহন শ্রমিক পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছে কালের কন্ঠ শুভসংঘ। বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় প্রত্যেক পরিবারকে ১০ কেজি চাল, তিন কেজি ডাল ও তিন কেজি আটা দেওয়া হয়।জেলার শংকর গোবিন্দ চৌধুরী স্টেডিয়ামে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় এই খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
বসুন্ধরা গ্রুপের দেখানো পথে যেন অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানও এগিয়ে আসে এমন আশা ব্যক্ত করে নাটোর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, বসুন্ধরাগ্রুপ ও কালের কন্ঠ শুভসংঘের আজকের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম নি:সন্দেহে প্রশংসার দাবী রাখে। আমরা আশাকরি বসুন্ধরা গ্রুপ যে মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়েছে তা আরো সম্প্রসারিত হবে। আমাদের যারা কষ্টে রয়েছেন, কর্মহীন রয়েছেন তাদের জন্য এই খাবার কিছুটা হলেও কষ্ট লাঘব করবে। করোনা যেভাবে কমছে আমরা আশা করি আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারব। বসুন্ধরা গ্রুপের জন্য আপনারা শুভকামনা রাখবেন।
পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, লকডাউনে কঠোর বিধিনিষেধ পরিচালনের সময় অনেকেই কর্মহীন হয়ে পরেছেন।এই কঠিন সময়ে যখন মানুষের খাদ্য প্রয়োজন সেই সময়ে বসুন্ধরা গ্রুপ ও কালের কন্ঠ শুভসংঘ যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী। যারা সাধারণ মানুষ এই সময়টা কর্ম করতে পারেনি তাদের জন্য এই সহায়তা ভালো কিছু। যেই সময় অসহায় মানুষের যেটা প্রয়োজন বসুন্ধরা গ্রুপ তখন সেই উদ্যোগ নিচ্ছে তাই আমি তাদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে আরো উপস্থিত ছিলেন কালের কন্ঠ শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, জেলা ক্রিড়া সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন, শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শরীফ মাহ্দী আশরাফ জীবন, নাটোর জেলা শাখার সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সুষ্ময় দাসসহ সোহেল রানা, শিশির কুমার, প্রান্ত শীল, বর্ষা খতুন, সাজেদুল ইসলাম, মাহতিম রাসেল, বন্যা খাতুন, তমা ভট্টাচার্য, মহিমা খাতুন, ইরিন, রায়হান, রানা খান।
নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলায় ৪০০ অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মুখে হাসি ফুটিয়েছে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ। বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় প্রত্যেক পরিবারকে ১০ কেজি চাল, তিন কেজি ডাল ও তিন কেজি আটা দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে নাটোর জেলার তিন হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। আজ সোমবার উপজেলার সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়।
স্বামী নেই ময়না বেগমের। ছোট এক ছেলে আছে। মানুষের বাড়িতে কাজ করেন তিনি। মাসে সাড়ে তিন হাজার টাকা