Mon. May 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধিঃ  লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে নানা অনিয়ম, সরকারি চালের ডিলার নিয়োগ নামে চেক জালিয়াতি, ভূমিহীন পরিচয়ে বন্দোবস্ত জমি দখলসহ একাধিক অভিযোগ উঠে মো.সোহেল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে নারী যৌন হয়রানি প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন হয়। মো.সোহেল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত রয়েছে।
অভিযোগ কারীদের লিখিত দাবি, মো.সোহেল ইউএনও ড্রাইভার পরিচয়ে এলাকায় নিরীহ, সহজ-সরল মানুষকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে এসব অপকর্ম করছে। তার বিরুদ্ধে কোন ভুক্তভোগী প্রতিবাদ করলে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন। ড্রাইভার হলেও চলেন ইউএনও’র দাপট দেখিয়ে, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।
মো.মুসলিম নামে এক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগে বলেন, মো.সোহেল তাকে ১০ টাকার চালের ডিলার নিয়োগ দিবে মর্মে আইডি কার্ড, ছবি, ৩টি ইসলামী ব্যাংকের চেকের পাতা, এবং ৩টি স্বাক্ষরকৃত ননজুডিশিয়াল সাদা স্ট্যাম্প নেন। কিছুদিন পরে ডিলার নিয়োগ দিতে না পারলে তার কাছে থাকা চেকের পাতা, স্ট্যাম্পগুলো ফেরৎ চাইলে টালবাহনা শুরু করে এবং ২লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। হঠাৎ ইসলামী ব্যাংক থেকে তাকে ৯লক্ষ টাকার চেক জমা হয়েছে ফোন দেয়। তিনি হতাশ ও ভয়ে বিষয়গুলো স্থানীয় করুনানগর বাজার সভাপতিকে জানায়। তিনি চেকের পাতাগুলো উদ্ধার করে পুড়ে ফেলে। এছাড়াও প্রায় সময় তার পুত্রবধুকে নানাভাবে যৌন হয়রানি করতে থাকে। তার অত্যাচারে নিরুপায় হয়ে সুষ্ঠু বিচার দাবিতে ইউএনও’র বরাবর অভিযোগ ও সংবাদ সম্মেলন করেন।
জেলা প্রশাসক বরাবর মো.মোস্তাফিজুর রহমান নামে ব্যক্তি অভিযোগ বলেন, তিনি চর কাদিরা ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি প্রায় ৪৫ বছর যাবত ভূমি দখলে রয়েছেন। হঠাৎ ইউএনও’র ড্রাইভার মো.সোহেল প্রভাব বিস্তার করে তার নামে ভূমিহীন পরিচয়ে তার দখলীয় ভূমি বন্দোবস্ত করে নেয়। মো.সোহেল চর কালকিনির বাসিন্দা ছিলেন। নদী ভাঙনের পরে এখানে বসবাস শুরু করে। গত কয়েক বছর ইউএনও’র ড্রাইভার পরিচয়ে নানামুখি অনিয়ম শুরু করে। স্থানীয় নিরীহ মানুষদের হয়রানি করছে। ভোগদখলকৃত জমি পূর্নরায় ফেরত পেতে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
বিভাগীয় কমিশনার চট্টগ্রাম, জনপ্রশাসন, ভূমি মন্ত্রনালয় সচিব, জেলা প্রশাসক বরাবর আব্দুল মান্নান লিখিত অভিযোগে বলেন, মো.সোহেল নদী ভাঙার পর উপজেলা চর কাদিরা ইউনিয়নে ভূমিহীন হিসেবে বসবাস শুরু করেন। সে নিজেকে ভূমিহীন দাবি করে অন্যর দখলীয় জমি নিজের নামে বন্দোবস্ত করে নেয়। উপজেলা ইউএনও ‘র ড্রাইভার হিসেবে সবসময় মানুষের সাথে ক্ষমতার অপব্যবহার দেখায়। ইউএনও স্যারদের নাম ভাঙ্গিয়ে মানুষের জমি দখল, নারীদের যৌন হয়রানি, চেক জালিয়াতি, সরকারি টিন নিজের ঘরে ব্যবহার, আশ্রয় পকল্পের ঘরে অর্থ বানিজ্যসহ নানা অনিয়ম করছে। তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে হামলা-মামলার শিকার হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে থানায়, জেলা এডিএম কোর্ট, ইউএনও’র নিকট একাধিক অভিযোগ দাখিল করে ভুক্তভোগীরা। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। তার একমাত্র হাতিয়ার সে ইউএনও স্যারদের গাড়ি(চালক) ড্রাইভার। সে ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত অথচ তার নামে একাধিক সম্পত্তি ও অর্থ রয়েছে। এসবের উৎস কোথায়..? এমন প্রশ্ন করে কিছু ভুক্তভোগীরা।
মো.সোহেল উপজেলার চর কালকিনি মো. শাহাজান চৌকিদার এর পুত্র। গ্রাম্য চৌকিদার মো. শাহাজান মেঘনার ভাঙনে সব হারিয়ে চর কাদিরায় বাড়ি করেন। কিন্তু হঠাৎ এত সম্পত্তি, বাড়িতে গরুর খামার, গ্যাস প্লান কি করে করল..?
অভিযুক্ত মো.সোহেল বলেন, তার বিরুদ্ধে কিছু লোক মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য দিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করেন। তিনি এসব অভিযোগের সাথে জড়িত নন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন, সোহেল এর বিরুদ্ধে অভিযোগ গুলো শুনেছি। কোর্টে মামলা বা অভিযোগ হয়েছে। কোর্টের বিবেচনায় যা হবার তাই হবে। কারো ব্যক্তিগত অভিযোগ উপজেলা প্রশাসন ভার নিবে না।