Mon. Oct 20th, 2025
Advertisements

অন্তর কুমার রায়, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে চারটি পরিবারের চারটি মন্দিরে হামলা চালিয়ে ৮টি মূর্তি ভাংচুর করেছে অজ্ঞাত দূর্বৃত্তরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ ফজলুর রহমান।

গোরকমন্ডপ রায়পাড়া গ্রামে মঙ্গলবার ভোর রাতে এ ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান যুব ঐক্য পরিষদ ফুলবাড়ী উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি গোরকমন্ডল ক্যাম্পের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি সদস্যরা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজ্জাদ হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও সুমন দাস।

পুলিশ জানায়, অজ্ঞাত দূর্বৃত্তরা ভবেশ চন্দ্র বর্মণের বাড়ির উঠানে হরিদেব মন্দির, বিনয় চন্দ্র বর্মনের বাড়ির উঠানে মনসা মন্দির, থীরেন চন্দ্র বর্মণের বাড়ির উঠানে মহাদেব মন্দির ও বীরেন চন্দ্র বর্মনের বাড়ির উঠানে রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে হামলা করেছে। দূর্বৃত্তরা চারটি মন্দিরের ভেতর মোট আটটি মূর্তি ভাংচুর করেছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে মন্দিরে পূজার জন্য এসে দেখতে পাই মন্দিরের ভেতর মূর্তিগুলো ভাংচুর অবস্থায় পড়ে আছে। ধারনা করা হচ্ছে মঙ্গলবার ভোররাতে মন্দিরে হামলা করে মুর্তি ভাংচুর করা হয়েছে। এর আগে কোনদিনই এই গ্রামে এমন ঘটনা ঘটেনি। একই রাতে গ্রামে চারটি মন্দিরে হামলা করে মূর্তি ভাংচুরের ঘটনায় আমাদের এলাকার সকলে আতংকিত হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনায় আমরা থানায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ ফুলবাড়ী উপজেলা শাখার সভাপতি সুনিল চন্দ্র রায় সরকার বলেন, হিন্দু জনগোষ্ঠির মাঝে আতংক ছড়াতে সংঘবদ্ধ দূর্বৃত্তরা মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাংচুর করেছে। দূর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তুমুলক শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে তারা পুনরায় এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত করার দু:সাহস পাবে। তাই তিনি এঘটনার সৃষ্ঠ তদন্তের দাবী জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন শাখার সভাপতি শুশীল কুমার রায় বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল রেখে, প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুমন দাস জানান, হিন্দু জনগোষ্ঠির সাথে মতবিনিময় করে তাদেরকে আতংকিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। মন্দিরে হামলা ও মূর্তি ভাংচুরকারী দূর্বৃত্তদের অবশ্যই চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে। তাদের দৃষ্টান্তুমুলক শাস্তি নিশ্চিত করাও হবে। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের জেলা প্রশাসক মহাদয়ের নিদের্শে আর্থিক অনুদান দেয়া হবে।