Sat. May 10th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

২৭মে খোলা বাজার অনলাইন ডেস্ক : মেহেদী হাসানঃ সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে ১৩ কোম্পানিতে তদন্ত লাইফ বীমার ৭ কোম্পানিকে ৮ নির্দেশনা আইডিআরএ’র অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে দেশের লাইফ বীমা খাতে ১৩টি কোম্পানিতে তদন্ত করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) । এর মধ্যে ৭টি কোম্পানির তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে শুনানি শেষে ৮টি নির্দেশনা জারি করেছে বীমা খাতের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থা। মঙ্গলবার (২৩ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানিয়েছে আইডিআরএ।
এসব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- দ্বিতীয় বর্ষে পলিসি নবায়নের হার ৭০ শতাংশে উন্নীত করা; তামাদি পলিসির সংখ্যা বা হার কমানো; গাড়ি সংক্রান্ত ব্যয় কমানো; কমিশন বাদে ব্যবস্থাপনা ব্যয় ৩০ শতাংশ কমানো; কোম্পানির ব্যস্থাপনা ব্যয় কমিয়ে লাইফ ফান্ড বৃদ্ধি করা; গ্রস প্রিমিয়াম আয় বাড়ানো; দ্রুত বীমা দাবি পরিশোধ করে দাবি পরিশোধের হার বাড়ানো এবং বিনিয়োগ রিটার্নের হার বাজার সুদের হারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা। আইডিআরএ বলছে, লাইফ বীমা কোম্পানিসমূহের বাস্তব অবস্থা পর্যালোচনার মাধ্যমে ব্যবসায় উন্নয়ন ও বীমা খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কয়েকটি লাইফ বীমা কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রম তদন্ত করা হয়। এ তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ২ মে থেকে ২২ মে ২০২৩ পর্যন্ত ৭টি কোম্পানির সাথে কর্তৃপক্ষের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানিতে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, সদস্যগণ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট লাইফ বীমা কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী ও সিএফওসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়া ৭টি লাইফ বীমা কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- প্রোটেক্টিড ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আলফা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
এর আগে ২০২২ সালের ২৪ জুলাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইডিআরএ’কে ২০১৩ ও ২০১৪ সালে অনুমোদন পাওয়া ১৩টি লাইফ বীমা কোম্পানির সার্বিক কার্যক্রম তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্ত পরিচালিত হওয়া কোম্পানিগুলো হলো- চার্টার্ড লাইফ, সোনালী লাইফ, জেনিথ ইসলামী লাইফ, প্রটেক্টিভ ইসলামী লাইফ, বেস্ট লাইফ, বেঙ্গল ইসলামী লাইফ, স্বদেশ লাইফ, ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ, আলফা ইসলামী লাইফ, ডায়মন্ড লাইফ, যমুনা লাইফ, গার্ডিয়ান লাইফ এবং মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, মাত্রাতিরিক্ত কমিশন প্রদান, অত্যাধিক প্রশাসনিক ব্যয়, অন্যান্য অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কোম্পানিগুলোর আর্থিক অবস্থা ভালো না। গ্রাহকের কাছ থেকে নেয়া প্রিমিয়ামের টাকার সিংহভাগ তারা ইতোমধ্যেই খরচ করে ফেলেছে। ফলে গ্রাহকের বীমা দাবি সময়মতো পরিশোধ করা এদের অনেকের পক্ষেই দূরূহ হবে। আইডিআরএ’র পরিচালক ও মুখপাত্র (উপসচিব) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অর্থমন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে ১৩টি লাইফ বীমা কোম্পানিতে তদন্ত পরিচালনা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭টি কোম্পানির তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সাথে শুনানি সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়া বাকী ৬টি লাইফ বীমা কোম্পানিতেও তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে সেসব তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে কর্তৃপক্ষের শুনানি শুরু হয়েছে। খুব শিগগিরই শুনানি শেষ করে সেগুলোর বিষয়ে কর্তৃৃপক্ষের সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমে জানানো হবে বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম। উল্লেখ্য, এই তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ৩ মে স্বদেশ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের নতুন পলিসি বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকবে। বীমা কোম্পানিটিকে পাঠানো এ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা ব্যয়, লাইফ ফান্ড গঠন করতে না পারা, কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ও মূলধন থেকে অর্জিত সুদের অর্থ খরচ করা, পলিসি নবায়নের হার কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে কোম্পানিটিকে নতুন পলিসি বিক্রি না করার এ নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।