
ছাতক(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি ভূমি বন্দোবস্ত নিয়ে ‘কোটি টাকার বাণিজ্য’ শিরোনামে যে অভিযোগ কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল, তা প্রশাসনিক প্রাথমিক তদন্তে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রমাণিত হয়েছে। গত ২৪ অক্টোবর ছাতকের গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় সরেজমিন তদন্ত ও গণশুনানি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) সমর কুমার পাল। এসময় উপস্থিত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, মৎস্যজীবী ও সাধারণ মানুষ সর্বসম্মতিক্রমে জানান, ইউএনও মো. তরিকুল ইসলাম একজন সৎ, মানবিক ও আদর্শ কর্মকর্তা। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি ছাতকে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছেন, সরকারি সম্পদ রক্ষা ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। যারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে সৎ কর্মকর্তাদের মানহানি ঘটায়, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে কোনো অসাধু মহল আর সৎ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অপপ্রচারের সাহস না পায় বলে জানান স্থানীয়রা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, ইউএনও তরিকুল ইসলামের কঠোর পদক্ষেপে অবৈধ বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেট ও মাদক ব্যবসায়ীরা এখন কোণঠাসা। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ছাতক উপজেলায় দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। তাঁদের দাবি, যিনি সততা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে জনআস্থা অর্জন করেছেন, তাঁকে ষড়যন্ত্র করে বদনাম করার চেষ্টা করা হচ্ছে এটি প্রশাসনের জন্যও দুঃখজনক।
গোবিন্দগঞ্জ ক্ষুদ্র মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, ইউএনও তরিকুল ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই গোবিন্দগঞ্জ বাজারের চেহারা পাল্টে গেছে। বহু বছর ধরে দখলদারদের কবলে থাকা সরকারি সম্পত্তি তিনি উদ্ধার করে মৎস্যজীবীদের জন্য সেডঘর নির্মাণ ও সরকারি বিধি মোতাবেক রাজস্ব ভিত্তিক বন্দোবস্তের উদ্যোগ নিয়েছেন। কোনো অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের প্রশ্নই ওঠে না। বর্তমানে ২০৮ জন মৎস্যজীবী সরকারি নিয়মে উপকৃত হচ্ছেন।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মিয়া অভিযোগ করেন, সাংবাদিক পরিচয়ধারী শাহ মো. আখতারুজ্জামান ও লুৎফুর রহমান শাওন আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করেছিলেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাদের সহ ইউএনওর বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্থ করেন।
ছাতক উপজেলা ইউএনও তরিকুল ইসলাম বলেন, গোবিন্দগঞ্জের জায়গাটি ছিল ময়লার ভাগার। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে মৎস্যজীবী ও সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে সরকারি বিধি মোতাবেক একসনা বন্দোবস্তের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে সরকার রাজস্ব পাবে, আর জনগণ উপকৃত হবে।” তিনি আরও জানান, এখানে ২০৮ জন মৎস্যজীবী সদস্য রয়েছেন। মোট ২৮ শতক জমির মধ্যে ১.৫০ শতাংশ ইতোমধ্যে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে। বাকি অংশও বিধি মোতাবেক প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে বন্দোবস্ত দেওয়া হবে।
এডিসি সমর কুমার পাল বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা যাচাই করা প্রশাসনের দায়িত্ব। প্রাথমিক অনুসন্ধানে ইউএনও তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো বাস্তব ভিত্তি পাওয়া যায়নি। তদন্ত প্রতিবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে তিনি জানান।


