শনি. নভে ২, ২০২৪
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

photo-1435908341ডা. বুলবুল আহমেদ: সাত বছর বয়সী স্পর্শ যখন আমার কাছে এলো, তখন ওর বাবা-মা চিন্তিত, কারণ মাড়ি ফুলে গেছে। শিশুর যেকোনো ধরনের অসুখ হলে বাবা-মা চিন্তা করবেন, এটাই স্বাভাবিক। তবে দাঁত বা মাড়ির সমস্যা হলে দুশ্চিন্তা খানিকটা বেড়ে যায়, কারণ এ সময় প্রচণ্ড ব্যথায় শিশু কান্নাকাটি করে। খাবার খেতে চায় না ব্যথার কারণে। এ সময় অনেকের জ্বর হয়।

শিশুদের ছয় মাস বয়স থেকে দুধদাঁত উঠতে শুরু করে। ১২ বছর বয়স পর্যন্ত দুধ এবং স্থায়ী দাঁত—দুই রকম দাঁতই সাধারণত মাড়িতে থাকে। এর পরপর দুধদাঁত সব উঠে গিয়ে স্থায়ী দাঁত থেকে যায়। শিশুর প্রতিটি দুধদাঁতই নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রক্ষা করা প্রয়োজন, যাতে শিশুর স্থায়ী দাঁত ঠিকভাবে উঠতে পারে।

তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দুধের দাঁত বা অস্থায়ী দাঁত রোগাক্রান্ত হয়। দাঁতে সবচেয়ে যে রোগ বেশি হয় তা হলো ক্যাভিটি (গর্ত)। এর সঠিক কারণ বলা না গেলেও খাবারের কারণে এটা হয়ে থাকতে পারে বলে চিকিৎসকরা মনে করেন।

আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেডিকেল গবেষণা থেকে দেখা যায়, সামনের দিকের দাঁতের থেকে পেছনের দিকের দাঁতে ক্যাভিটির উপস্থিতি বেশি। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, যখন কোনো খাবার গ্রহণ করা হয়, তখন খাবারটি মাড়ির দিকে আসে।

ক্যাভিটি হলে কোনো ব্যথা অনুভব হয় না। শুধু ক্যাভিটিতে খাবার জমে থাকে। এই পর্যায়ে চিকিৎসা না করালে ক্যাভিটি থেকেই দাঁতে ব্যথা হয়। মাড়িতে পুঁজ জমতে পারে এবং ফুলে যেতে পারে। তখন শিশুর চিকিৎসা করাটা অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে।

তবে এ সমস্যা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলেও বাবা-মা সচেতনতা কিছুটা রোধ করতে পারেন। যেমন :

* শিশু যখন খাবে, তখন কুলি করার অভ্যাস করাতে হবে। এতে তার দাঁতে কোনো খাবার জমবে না, দাঁত ও মাড়ি ভালো থাকবে।

* বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর পর তার দাঁত পরিষ্কার রুমাল দিয়ে মুছে দিতে হবে।

* শিশুকে দাঁত ব্রাশ সঠিক নিয়মে করাতে হবে।

* যদি সম্ভব হয় তাহলে ফ্লসিং (সুতা দিয়ে দুই দাঁতের মাঝখানে পরিষ্কার রাখা) করা হলে দুই দাঁতের মাঝখানে ক্যাভিটি হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।

* বাবা-মায়ের সব সময় খেয়াল রাখতে হবে, দাঁতে কোনো ক্যাভিটি আছে কি না। যদি থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে নিতে হবে।

তবে আশার কথা হলো, দাঁত ও মাড়ির অসুখ নিরাময়যোগ্য। শিশুর দাঁতের যত্নে অভিভাবকদের ভূমিকাই প্রথম।

ডা. বুলবুল আহমেদ, ডেন্টাল সার্জন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *