ভ্রমন ডেস্ক: ঢাকা হতে খাগড়াছড়ির দূরত্ব হচ্ছে ২৬৬ কিলোমিটার ও চট্টগ্রাম হতে দূরত্ব হচ্ছে ১১২ কিলোমিটার। খাগড়াছড়ি জেলা চট্টগ্রাম বিভাগের অধিনে। আয়তন হচ্ছে ২৬৯৯.৫৫ বর্গ কিলোমিটার। এর স্থানীয় নাম চেংমী। প্রকৃতি অকৃপণভাবে সাজিয়েছে খাগড়াছড়িকে। স্বতন্ত্র করেছে বিভিন্ন অনন্য বৈশিষ্ট্যে। এখানে রয়েছে আকাশ-পাহাড়ের মিতালী, চেঙ্গী ও মাইনী উপত্যকার বিস্তীর্ণ সমতল ভূ-ভাগ ও উপজাতীয় সংস্কৃতির বৈচিত্র্যতা। মহালছড়ি, দীঘিনালা, পানছড়ি, রামগড়, লক্ষ্মীছড়ি, মানিকছড়ি, মাটিরাঙ্গা যেদিকেই চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ।
খাগড়াছড়ি ম্যাপ
খাগড়াছড়ির ম্যাপ
দর্শনীয় স্থানঃ
১) আলুটিলাঃ
সৌন্দর্যের ঐশ্বর্যময় অহঙ্কার খাগড়াছড়ি শহরের প্রবেশ পথ আলুটিলা। জেলা সদর থেকে মাত্র ৮ কি:মি: পশ্চিমে এ আলুটিলা। এ টিলার মাথায় দাঁড়ালে সমগ্র শহর হাতের মুঠোয় চলে আসে। শহরের ছোট খাট ভবন, বৃক্ষ শোভিত পাহাড়, চেংগী নদীর প্রবাহ ও আকাশের আল্পনা মনকে অপার্থিব মুগ্ধতায় ভরে তোলে। প্রাকৃতিক পরিবেশ পর্যবেক্ষণের জন্য টিলায় একটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারও আছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি চমৎকার ডাকবাংলোও রয়েছে এখানে। আগ্রহী পর্যটকগণ ইচ্ছে করলে রাত্রিযাপনও করতে পারেন।
২) আলুটিলার সুরঙ্গ বা রহস্যময় গুহাঃ
পাহাড়ের চূড়া থেকে ২৬৬ টি সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমেই গুহামুখ। আলুটিলা সুরঙ্গের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮২ ফুট।
৩) দেবতার পুকুরঃ
জেলা সদর থেকে মাত্র ০৫ কি:মি: দক্ষিণে খাগড়াছড়ি – মহালছড়ি সড়কের কোল ঘেষে অবস্থিত মাইসছড়ি এলাকার নুনছড়ি মৌজার আলুটিলা পর্বত শ্রেণী হতে সৃষ্ট ছোট্ট নদী নুনছড়ি। মূল রাস্তায় বাস থেকে নেমে কিলো দুয়েক পায়ে হাঁটা পথ। নিজস্ব পরিবহন থাকলে তা নিয়ে আপনি সোজা চলে যেতে পারেন একেবারে পাদদেশে নদীর কাছে।
৪) ভগবান টিলাঃ
জেলার মাটিরাংগা উপজেলা থেকে সোজা উত্তরে ভারত সীমান্তে অবস্থিত ভগবান টিলা। জেলা সদর থেকে এর কৌণিক দূরত্ব আনুমানিক ৮৫ কি:মি: উত্তর-পশ্চিমে। সমুদ্র সমতল থেকে প্রায় ১৬০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত এ টিলা সম্পর্কে স্থানীয় লোকদের বিশ্বাস, এতো উঁচু টিলায় দাঁড়িয়ে ডাক দিলে স্বয়ং ভগবানও ডাক শুনতে পাবেন। প্রাচীন লোকজন তাই এ টিলাকে ভগবান টিলা নামকরণ করেছিলেন। সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী বাংলাদেশ রাইফেলসের একটি আউট পোষ্টও আছে এখানে।
৫) দুই টিলা ও তিন টিলাঃ
জেলা সদর থেকে মাত্র ৪২ কি:মি: দূরে খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা-মারিশ্যা রাস্তার কোল ঘেষে এই টিলায় দাঁড়ালে ভূগোলে বিধৃত গোলাকৃতি পৃথিবীর এক চমৎকার নমুনা উপভোগ করা যাবে। খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা এবং দীঘিনালা থেকে মারিশ্যার বাসে চড়ে আপনি অনায়াসেই যেতে পারেন এখানে।
৬) আলুটিলার ঝর্ণা(রিছাং ঝরনা)ঃ
জেলা সদর থেকে আলুটিলা পেরিয়ে সামান্য পশ্চিমে মূল রাস্তা থেকে উত্তরে গেলেই ঝর্ণার কলধ্বণি শুনতে পাবেন। জেলা শহর থেকে ঝর্ণা স্থলের দুরত্ব সাকুল্যে ১১ কি: মি: প্রায়। এ ছাড়া নিজস্ব যানবাহন নিয়ে আপনি অনায়াসেই চলে যেতে পারেন একেবারে ঝর্ণার পাদদেশে। সামান্য পায়ে হাঁটা পথ যাত্রার আকর্ষণকে আরো বাড়িয়ে দেয়।
৭) তৈদুছড়া ঝরনাঃ
জেলা শহর থেকে দীঘিনালা ২০ কিলোমিটার। উপজেলা সদর থেকে জামতলী পোমাংপাড়া হয়ে পাঁচ-ছয় কিলোমিটার দূরত্বে তৈদু। দীঘিনালা সড়কের ৯ মাইল হয়ে সীমানাপাড়ার মধ্য দিয়েও যাওয়া যায়। দীঘিনালার পোমাংপাড়া পর্যন্ত গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায়। এরপর বেশ অনেকটা পথ হাটতে হবে।
৮) পাহাড়ী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রঃ
খাগড়াছড়ি শহর থেকে মাত্র তিন কি: মি: পূর্বেই কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।
৯) মহালছড়ি হ্রদঃ
কাপ্তাই বাঁধের ফলে কাপ্তাই হ্রদের পানি জমে নানিয়ারচর হয়ে মহালছড়ি অব্দি এসেছে। এ তথ্য অনেক পর্যটকের জানা নেই। বর্ষাকালে বিশাল জলরাশি জমাট হয়ে পরিণত হয় এক ফ্রিঞ্জল্যান্ডে।
১০) শতায়ু বর্ষী বটগাছঃ
মাটিরাংগা উপজেলার খেদাছড়ার কাছাকাছি এলাকায় এ প্রাচীন বটবৃক্ষ শুধু ইতিহাসের সাক্ষী নয় এ যেন দর্শনীয় আশ্চর্যের কোন উপাদান। এ গাছের বয়স নিরূপনের চেষ্টা একেবারেই বৃথা। পাঁচ একরের অধিক জমির উপরে এ গাছটি হাজারো পর্যটকের কাছে দারুণ আকর্ষণীয়।
এসব স্থান ছাড়াও মানিকছড়ির রাজবাড়ি, দীঘিনালার বড়াদম দীঘি, রামগড়ের চা বাগান, তৎকালীন ইপিআর এর সূতিকাগার, পানছড়ির শান্তিপুর অরন্যকুটির ইত্যাদি চমৎকার দর্শনীয় স্থান।
কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা থেকে আসতে হলে কলাবাগান, কমলাপুর, ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে শান্তি পরিবহন, সৌদিয়া, এস আলম, শ্যামলী বা স্টার লাইন পরিবহনে খাগড়াছড়ি নামতে হবে। ভাড়া ৪৫০ টাকা। স্টারলাইন পরিবহনের এসি বাসে ভাড়া পড়বে ৬০০ টাকার মতো। চট্টগ্রাম থেকেও খাগড়াছড়ির বাস সহজলভ্য। আলুটিলায় যাওয়ার জন্য শহর থেকে লোকাল বাস পাবেন। খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা লোকাল বাস। চাইলে চান্দের গাড়িও (জিপ) ভাড়া নিতে পারেন।
সউদিয়া- ০১৯১৯৬৫৪৮৫৬ (সায়েদাবাদ), ০১৯১৯৬৫৪৮৬৩ (কলাবাগান), ০১৯১৯৬৫৪৮৫৯ (কমলাপুর), ০১৯১৯৬৫৪৮৮২ (খাগড়াছড়ি)
এস আলম – ০১৯১৭৭২০৩৯৫ কমলাপুর, ০২-৯৩৩১৮৬৪ ফকিরাপুল, ০৩৭১-৬২৫১২ – খাগড়াছড়ি।
শান্তি পরিবহন – ০৩৭১-৬১৮০৭ – খাগড়াছড়ি
কোথায় থাকবেনঃ
১ পর্যটন মোটেল
ইকোনমি রুম- ৩০০ টাকা
নন-এসি ডাবল- ১২০০ টাকা
এসি ডাবল- ২০০০ টাকা
এসি সুইট- ৩০০০
ফোন- ৮৮০-০৩৭১-৬২০৮৪,৮৮০-০৩৭১-৬২০৮৫
২ হোটেল শৈল সুবর্ণা
সিঙ্গেল – ৩০০ টাকা
নন-এসি ভিআইপি সিঙ্গেল – ৪৫০ টাকা
নন-এসি ভিআইপি ডাবল / এসি সিঙ্গেল – ৬০০
এসি ভি আই পি ডাবল – ১০০০ টাকা
৩ হোটেল জিরান
জেনারেল রুম – ১৫০/৩০০ টাকা
এসি ভি আই পি রুম – ৭০০ টাকা
ফোন- ০৩৭১-৬১০৭১
এছারা আরও সস্তায় থাকার মত কিছু হোটেল বোর্ডিং আছে।
খাবার স্থানঃ
খাংময় নামে একটি রেস্টুরেন্ট আছে। পাঙ্খাই পারা তে অবস্থিত এটি।
আরও আছে সিস্টেম রেস্টুরেন্ট। আর একটি ক্যাফে আছে , নাম নিউজিল্যান্ড ক্যাফে।
বি.দ্রঃ তথ্য ও ছবি সমুহ নেট থেকে সংগৃহীত। তাই বর্তমান দামের সাথে তারতম্য হতে পারে।
আর কারও যদি কোনও তথ্য জানা থাকে তাহলে জানাতে পারেন।