ইডেন কলেজে গত মার্চে মাস্টার্স শেষবর্ষের নির্বাচনী পরীক্ষা যে প্রশ্নপত্রে হয়েছে, সেই প্রশ্নেই দুই দিন আগে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের একটি পত্রের চূড়ান্ত পরীক্ষা নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
গত সোমবার সারাদেশে ‘আধুনিক সমাজবিজ্ঞানের তত্ত্ব’ বিষয়ের এ পরীক্ষা নেয়া হয়। দুটি প্রশ্নপত্রেই মোট ১০টির প্রশ্নের মধ্যে পাঁচটির উত্তর দিতে বলা হয়েছে। ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় সব প্রশ্নের মান সমান। এর মধ্যে ১ থেকে ৯ নম্বর পর্যন্ত বর্ণনামূলক প্রশ্নের সবগুলোই মিলে গেছে দুটি প্রশ্নপত্রে।
দুটি প্রশ্নপত্রে কয়েকটি প্রশ্নের বাক্যগঠনে সামান্য তারতম্য থাকলেও প্রশ্ন একই। এমনকি ইডেনের নির্বাচনী পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে যে ক্রমিকে প্রশ্নগুলো সাজানো হয়েছে চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রেও সেগুলো এসেছে একই ক্রমিকে।
তবে দশম প্রশ্নে চারটির মধ্যে দুটি টিকা লিখতে বলা হয়েছে, যার মধ্যে তিনটি ইডেন কলেজের প্রশ্নের সঙ্গে মিলে গেছে। অন্য একটি টিকায় ‘জ্ঞানের সমাজতত্ত্ব’-এর পরিবর্তে চূড়ান্ত পরীক্ষায় রাখা হয়েছে ‘প্রাচ্যবাদ’। দুই প্রশ্নপত্রে পার্থক্য শুধু এটুকুই। আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্রে বাংলার সঙ্গে প্রশ্নের ইংরেজি অনুবাদও দেওয়া হয়েছে, ইডেনের প্রশ্নপত্রে যা ছিল না।
এ বিষয়ে ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক হোসনে আরা বলেন, ‘নিজে একটি প্রশ্ন করার যোগ্যতা যে শিক্ষকের নেই, তার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটিতে বসারও অধিকার নেই। শুধুমাত্র একটি টিকা পরিবর্তন করে একটি কলেজের টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্ন দিয়ে দেবেন এবং কমিটিতে থেকে টাকা নিয়ে যাবেন- এমন শিক্ষককে আমি ধিক্কার দিই।
তিনি বলেন, ‘যিনি প্রশ্ন করেছেন, তিনি তো ইডেন কলেজের টেস্টের প্রশ্ন হুবহু তুলে দিতে পারেন না। নিজের যদি যোগ্যতা না থাকে একটি প্রশ্ন করার, বিগত বছরের সাজেশন দেখে, তাইলে তো ওই কমিটিতে বসার রাইট নাই।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে একই কমিটিকে প্রশ্ন ‘মডারেশনের’ দায়িত্বে রাখায় এটা হয়েছে বলে মনে করেন ইডেনের অধ্যক্ষ।
এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘ইডেন কলেজের কেউ পাঁচ সদস্যের পরীক্ষা কমিটিতে ছিলেন না। তারপরও কীভাবে দুই প্রশ্ন মিলে গেল তা খতিয়ে দেখা হবে। পরীক্ষা কমিটির সচেতনার অভাব থাকার বিষয়টি স্পষ্ট। আমরা এ নিয়ে একটি কমিটি করব। কমিটির প্রতিবেদন অনুসারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে মাস্টার্সের ওই পরীক্ষা বাতিল করা হবে না বলেও জানান উপাচার্য।