রবিবার, ৩০ আগস্ট ২০১৫
গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম আরও বাড়ানো উচিত বলে মনে করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমায় এর দাম কিছুটা কমানো যেত বলে মনে করে কমিটি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান। আজ রোববার সংসদ ভবনে কমিটির এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সম্প্রতি গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এক চুলার গ্যাসের দাম ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০০ টাকা এবং দুই চুলার গ্যাসের দাম ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা করা হয়েছে। সিএনজি গ্যাসের দাম ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়াও বিদ্যুতের দাম ২ দশমিক ৯৩ ভাগ বাড়ানো হয়েছে।
বৈঠকে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, বর্তমানে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) লোকসানের পরিমাণ ২৯ হাজার কোটি টাকা। তাজুল ইসলাম বলেন, অতীতে বিপিসি বেশি দামে জ্বালানি তেল কিনে কম দামে বিক্রি করায় তাদের দায় বেড়ে গেছে। এখন বেশি দামে বিক্রি করে দায়মুক্ত হতে পারলে সেটা রাষ্ট্রের লাভ হবে। লোকসান কমাতে হলে জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে হবে। লোকসানি প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের জন্য ভালো নয়। আয় ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। অবিরাম ভর্তুকি দিলে এক সময়ে রাষ্ট্রের অর্থনীতি ভেঙে পড়বে। তবুও মানুষের দাবি জ্বালানি তেলের দাম কমানো হোক। সে জন্যই কমিটি মনে করে, দাম কিছুটা কমানো যেত।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলে দাম কমেছে। সেটা অস্বাভাবিক। এই দর কত দিন স্থায়ী হয় সেটা নিয়ে সংশয় আছে। সে জন্যই হয়তো বিপিসি দাম কমাতে চায় না।
সভাপতি জানান, বর্তমানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ৬ টাকা ৬৮ পয়সা। সরকার বিক্রি করে ৪ টাকা ৭১ পয়সা দরে। প্রতি ইউনিট জলবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ ১ টাকা ৭৫ পয়সা। অন্যদিকে ডিজেল চালিত কেন্দ্রের উৎপাদন খরচ ২০ থেকে ৩৫ টাকা। তিনি বলেন, বিদ্যুতের দাম ২ দশমিক ৯৩ ভাগ বাড়ানো হয়েছে। গ্যাসের দামও বাড়ানো হয়েছে। এটি অযৌক্তিক নয়। কারণ ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায় এ দেশে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম অনেক কম।
তাজুল ইসলাম বলেন, দেশে ২২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বয়েস ২৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। যথাসময়ে সংস্কার না করায় এসব কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। ইউনিট প্রতি উৎপাদন খরচও অস্বাভাবিক বেশি। বর্তমানে এসব কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে ৯৫৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। কমিটি এসব কেন্দ্র সংস্কার করে উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।
তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটি সদস্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, এম আবদুল লতিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, শিবলী সাদিক ও নাসিমা ফেরদৌসী অংশ নেন।