সোমবার, ৩১ আগস্ট ২০১৫
সকালে রোদের তেজ তখনো বাড়েনি। তিনি সাজঘরে ফিরলেন বীরের বেশে। এমন একটা কীর্তি গড়েছেন, যেটি টেস্ট ইতিহাসে খুব বেশি ব্যাটসম্যানের নেই। ভারতেরই ছিল মাত্র তিনজনের। বিকেলের রোদের আলো তখনো মরেনি। তিনি একই দিন দ্বিতীয়বারের মতো সাজঘরে ফিরলেন। এমন একটা ‘কীর্তি’ গড়লেন, ভারত তো ভারত, টেস্ট ইতিহাসেই এমন ঘটনার সাক্ষী হয়েছিলেন তিনজন!
গতকাল সকালেই ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছিলেন চেতেশ্বর পূজারা। ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন। ইতিহাসের মাত্র ৪৪তম খেলোয়াড় হিসেবে এই কীর্তি, মাত্র চতুর্থ ভারতীয় ব্যাটসম্যানের। যে দিন সকালে এই কীর্তি, সেদিন বিকেলেই পূজারার নামের পাশে শূন্য!
ভারতের প্রথম ইনিংস শেষে ১৪৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং বিপর্যয়ে দিন শেষ হওয়ার আগেই আবারও ব্যাটিংয়ে নামতে হয় পূজারাকে। কিন্তু দ্বিতীয় বলেই ধাম্মিকা প্রসাদের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান রানের খাতা খোলার আগেই।
ব্যস, ইতিহাসে আবারও নাম লিখিয়ে ফেললেন পূজারা। একই টেস্টে এক ইনিংসে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে অপরাজিত থেকে ফেরা এবং আরেক ইনিংসে ডাক মারা—টেস্ট ইতিহাসে এমন নজির খুবই বিরল। এর আগে এমন উদাহরণ ছিল মাত্র তিনটি। পূজারা চতুর্থ ব্যাটসম্যান।
প্রথমটি ঘটেছিল ৮৬ বছর আগে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিল উডফুল এক ইনিংসে পুরো দলের সবার আসা যাওয়া দেখেছেন অন্য প্রান্ত থেকে। অন্য ইনিংসে অবশ্য অত কষ্ট করতে হয়নি তাঁকে। শূন্য রানেই ফিরে গিয়েছিলেন। পরের ঘটনাটি আরেক ইংলিশ ব্যাটসম্যানের। জিওফ বয়কট। ১৯৭৯ অ্যাশেজে একই ঘটনা ঘটিয়েছিলেন বয়কট। সর্বশেষ এই ঘটনা ঘটেছিল এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে। ভারতের বিপক্ষে সাঈদ আনোয়ার এক ইনিংসে ১৮৮ রানে অপরাজিত ছিলেন, আরেক ইনিংসে মেরেছিলেন শূন্য।
চলতি কলম্বো টেস্টে ‘ক্যারিং ব্যাট থ্রু দ্য ইনিংস’ ও ডাক মারার এমন বিপরীতমুখী অভিজ্ঞতা হলো পূজারার। তবে পূর্বসূরিদের সঙ্গে একটি জায়গায় অমিল আছে তাঁর। অন্য সবাই শূন্য মেরেছিলেন প্রথম ইনিংসে, ব্যাট ক্যারি করেছিলেন পরের ইনিংসে। মানে তারা জিরো থেকে হিরো হয়েছেন। আর পূজারা হলেন হিরো থেকে জিরো!