মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৫
বদেশি টিভি সিরিয়াল দেখে প্রভাবিত হয়ে ও পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে নাটোরে মো. তানভীর (১১) নামে এক মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যা করেছে তার তিন সহপাঠী।
মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে র্যাব-৫ এর একটি দল নাটোর শহরের আলাইপুর এলাকার আশরাফুল উলুম কওমী মাদ্রাসার পেছনে একটি সেপটিক ট্যাংক থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে।
মৃত তানভীর শহরের হাফরাস্তা বড়গাছা এলাকার ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম তুষারের ছেলে ও আশরাফুল উলুম কওমী মাদ্রাসার ছাত্র।
এদিকে, হত্যার সঙ্গে জড়িত তিন সহপাঠীকে আটক করেছে র্যাব। এরা হলো, বাগাতিপাড়া উপজেলার নওপাড়া গ্রামের বাবুল হাসানের ছেলে বায়েজিদ হাসান (১৪), সিংড়া উপজেলার জোর মল্লিকা গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে হুমাইদ হোসেন (১৫) ও নাটোর শহরের কালুর মোড় এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে মো. নাঈম (১৫)।
র্যাব ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২৫ আগস্ট বিকেলে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় তানভীর। পরে তার বাবার কাছে মোবাইল ফোনে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
এরপর তানভীরের বাবা বিষয়টি র্যাব-৫ কে জানায় ও নাটোর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। র্যাব মুক্তিপণ দাবিকারীর মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে তানভীরের সহপাঠী বায়েজিদ হাসান, হুমাইদ হোসেন ও সাবেক সহপাঠী নাঈমকে আটক করে।
পরে তাদের তথ্য অনুযায়ী মাদ্রাসার পেছনের সেপটিক ট্যাংক থেকে তানভীরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
অপরদিকে, এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে নাটোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব-৫।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহবুব আলম জানান, আটক তিন কিশোর বিদেশি টিভি চ্যানেলের সিরিয়াল দেখে তাদের বন্ধু তানভীরকে অপহরণের পরিকল্পনা করে। অপহরণের পর তানভীরকে একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে আটকে রাখে। পরে তার গলায় কাপড় বেঁধে ক্ষুর দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। এরপর তানভীরের মৃতদেহ মাদ্রাসার পেছনের একটি সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেয়।
পরে ওই তিন কিশোর নতুন দুইটি মোবাইল ফোনের সিমকার্ড কিনে একটি দিয়ে বিকাশ হিসাব খোলে ও অপরটি দিয়ে তানভীরের বাবার কাছে ফোন করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে ওই ফোন ট্র্যাক করে তাদের আটক করা হয়।