বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তাসহ সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
জেলার ৯ উপজেলার ৬৩ ইউনিয়নের ৫ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার পরিবারের প্রায় ৫ লাখ মানুষ।
বন্যার পানিতে বসতবাড়ি ও রাস্তা-ঘাট তলিয়ে থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন বানভাসী মানুষেরা। হাতে কাজ না থাকায় এবং ত্রাণসহায়তা না পাওয়ায় খাদ্য সংকটে পড়েছেন তারা। দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট। বন্যা কবলিত এলাকায় একমাত্র যোগাযোগের ভরসা নৌকা ও কলা গাছের ভেলা।
সদর উপজেলার চরযাত্রাপুরের বাসিন্দা ছকিনা বেগম বলেন, ‘১৫ দিন ধরে পানিবন্দী আছি। খাবার নাই, কাজ নাই। নদীতে মাছও পাওয়া যায় না। ছোওয়া-পোয়া নিয়া খুব কষ্টে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি। কোনো মেম্বার-চেয়ারম্যান এ পর্যন্ত খোঁজ নেয় নাই।’
একই চরের বাসিন্দা আবেদ আলী বলেন, ‘বর্তমানে চরত কোনো কাজ নাই বাহে। নিজে খাই কী, গরু-ছাগলক খাওয়াই কী। আবাদপাতি তো শেষ হয়া গেছে। বাঁচার কোনো উপায় নাই বাহে। সরকার এগুলা দেখে না।’
জেলা প্রশাসন থেকে বানভাসী মানুষের জন্য এ পর্যন্ত প্রায় ২৫০ টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় অনেক বানভাসীর ভাগ্যে ত্রাণ জোটেনি।
জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন জানান, কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আবারও অবনতি হওয়ায় নতুন করে ১০ লাখ টাকা ও ৫শ টন চাল বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, ২৪ ঘণ্টায় সেতু পয়েন্টে ধরলার পানি ২৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১৭ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ১০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার সামান্য নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।