বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫
ভারতের কাছ থেকে ২০০ কোটি ডলার ঋণ পেতে আগামী অক্টোবরে চুক্তি হতে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরের সময়ে বাংলাদেশকে এই ২০০ কোটি ডলার ঋণ প্রদানের কথা ঘোষণা করেন। ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে এই ঋণ নেওয়া হবে।ভারতীয় নতুন ঋণে ১৪টি প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা রয়েছে। এসব প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪৫ কোটি ডলার।
তবে এই ঋণের কঠিন শর্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। ঋণের শর্ত হিসেবে ভারত বলেছে নতুন ঋণের আওতায় যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে তার ৭৫ শতাংশ পণ্য ও সেবা ভারত থেকে আমদানি করতে হবে।পাশাপাশি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ভারতের নতুন ঋণে প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে সম্প্রতি দুই দফা বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ(ইআরডি)। এসব বৈঠকে ভারত থেকে আমদানি ছাড়া অন্য শর্তগুলোর বিষয়ে আপত্তি তোলেনি মন্ত্রণালয়গুলো। তারা ১৪টি প্রকল্পের মধ্যে ৭টি প্রকল্পের জন্য আমাদানির শর্ত ৭৫শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬০ শতাংশ করার কথা বলেছেন। তাদেরকে আগামী সপ্তাহের মধ্যে শর্তের বিষয়ে লিখিত প্রস্তাব ও যুক্তি তুলে ধরে ইআরডিতে পাঠাতে বলা হয়েছে।
ভারতের ঋণে বাস্তাবায়নযোগ্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চারটি মেডিকেল কলেজ ও একটি জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট স্থাপন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আশুগঞ্জ নদীবন্দরের আধুনিকায়ন, আশুগঞ্জ বন্দরের অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ব্যবস্থার উন্নয়ন, আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া সড়ক চার লেনে রূপান্তর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও দুটি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট উন্নয়ন, মংলায় ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন প্রকল্প, খুলনা-দর্শনা রেলপথের উন্নয়ন, পার্বতীপুর-কাওনিয়া দ্বৈত লাইনে রূপান্তর ও সৈয়দপুর রেলের ওয়ার্কশপ নির্মাণ প্রকল্প , পরিবহন খাতে বি আরটিসির জন্য ৫০০ ট্রাক সংগ্রহ এবং দ্বিতল বাস সংগ্রহ সংক্রান্ত দুটি প্রকল্প, সড়ক ও জনপথের জন্য উন্নত যন্ত্রপাতি আমদানি এবং বিদ্যুৎ খাতের বড়পুকুরিয়া-বগুড়া-কালিয়াকৈরে ৪০০ কেভি লাইন নির্মাণ প্রকল্প।
তবে দেশের অর্থনীতিদসহ বিশিষ্টজনেরা এমন কঠিন শর্তে ভারত থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে তীব্র আপত্তি তুলেছেন। তাদের দাবি পণ্য ও সেবার ৭৫ বা ৬০ শতাংশ ভারত থেকেই আমদানি করার যে শর্ত রয়েছে তাতে বাংলাদেশের কোনো উপকারই হবে। পুরোটাই শুভংকরের ফাঁকি।