Mon. May 5th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

49 বুধবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৫
দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্ট বারসহ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের মধ্যকার মতবিরোধনতুন করে জেঁকে বসেছে। সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ বার নির্বাচনে ঐক্যের জোরে আওয়ামীপন্থি সাদা প্যানেল নিরঙ্কুশভাবে বিজয়ী হলেও নতুন কমিটির সর্বোচ্চ আসনে (ভাইস-চেয়ারম্যান) অধিষ্ঠিত হওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে দ্বন্দ্ব। আর এ দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার।

বাংলাদেশ বার নির্বাচনে গরিষ্ঠতা পাওয়া আইনজীবীদের একাংশ থেকে পাওয়া তথ্য মতে, গত ২৫ আগস্ট বার নির্বাচনের সাধারণ আসনে ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলামের নেতৃত্বে আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদার, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, আব্দুল মতিন খসরু, পরিমলচন্দ্র গুহ (পিসি গুহ), জেড আই খান পান্না ও শ ম রেজাউল করিম নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফলে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সদস্যদের মধ্যে আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ২৩৫ ভোট পেয়ে প্রথম স্থানে অবস্থান করছেন। পাশাপাশি এ প্যানেলের নেতৃত্বে থাকা ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম ১৪ হাজার ১৮১ ভোট পেয়ে রয়েছেন পঞ্চম স্থানে।

প্রায় এক হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে থাকার কারণে বাংলাদেশ বারের ভাইস-চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত হতে চান আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার। আর এজন্যই তিনি সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবীসহ সরকারের বিভিন্ন মহলে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। শুধু এখানেই শেষ নয়- ‘গরীবের আইনজীবী’ খ্যাত এ আইনজীবী তার আসন পোক্ত করতে বিএনপি-জামায়াত প্যানেলের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গেও যোগসাজশ চালাচ্ছেন বলে জানা যাচ্ছে।

একইসঙ্গে সাদা প্যানেলে ব্যারিস্টার আমির-উল ইসলামের নেতৃত্বে নির্বাচনে গেলেও বাসেত মজুমদার বেশি ভোট পাওয়ায় নিজেকে বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান মনোনীত করিয়ে নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

তবে দ্বন্দ্বের বিষয়টি অস্বীকার করে বাসেত মজুমদার বলেন, ‘বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যানের আসন নিয়ে আমার কোনো দাবি নেই। যখন আইনজীবীরা আমাকে সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন তখন তারাই নির্ধারণ করবেন কে এই আসনে বসবেন। আমি এই আসনের জন্য যোগসাজোশ করছি এ কথাটিও মিথ্যা। যারা এ বিষয়ে কথা বলছে মূলত তারাই তাদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন দিয়েছিলেন। এখন কে সেই আসনে অধিষ্ঠিত হবে তা প্রধানমন্ত্রী নির্ধারণ করে দেবেন।’

অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলছেন, বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্যরাই (১৪ সদস্য) ঠিক করবেন কে ভাইস-চেয়ারম্যান হিসেবে অধিষ্ঠিত হবেন। তবে এর বাইরে অ্যাটর্নি জেনারেল আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন।

এদিকে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে নতুন সৃষ্ট দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে বুধবার নতুন কমিটি ঘোষণা হতে যাচ্ছে। যার একটি পক্ষ ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম আর অন্য পক্ষ আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদারকে বারের নতুন ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চাইছেন।

এর আগেও আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের এমন কলহ-বিবাদের কারণে তাদেরকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ক্ষমতায় সংখ্যা গরিষ্ঠতা থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে। যার সুযোগটি কাজে লাগিয়ে সুবিধা পেয়েছে বিএনপি ও জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা। সে কারণেই সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনের আগে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের মধ্য ভেদাভেদ কমিয়ে আনার নির্দেশনা এসেছিল দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে।

তবে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত নিজেদের মধ্যকার ভেদাভেদ ভুলে থাকলেও নতুন কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত হওয়া নিয়ে দ্বন্দ্েেবই ডুবে থাকছেন বারের বর্তমান (সরকারিভাবে অঘোষিত) সংখ্যাগরিষ্ঠ আওয়ামীপন্থি আইনজীবী প্যানেল।