বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
বাড়িতে একই ঘরে কালিপূজা এবং কোরআন তেলাওয়াত করার কারণে স্থানীয়দের হামলার শিকার হয়েছেন এক মুসলমান দম্পতি। তাদের ধরে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে ধর্মঅবমাননার মামলা করারও প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও শহরের নিশ্চিন্তপুর এলাকায়। আটক দম্পতি হলেন- সোলেমান (৬১) ও তার স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৫১)।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের হামলার খবর পেয়ে আমরা ওই দম্পতির নিরাপত্তার খাতিরেই থানায় এনেছি। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোরআন অবমাননার অভিযোগও আছে। যদি মামলা হয় তবে স্থানীয় কাউন্সিলর বাদী হবেন।’
এদিকে স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ১৫ বছর ধরেই বাড়িটিতে নিয়মিত মিলাদ-মাহফিল ও জিকির-আজকারের আয়োজন হতো। দূর দুরান্ত থেকে মানুষ এসে জড়ো হতো। মাঝে মাঝে হিন্দু লোকেরাও আসতো। তবে সংখ্যায় অনেক কম। এভাবেই চলছিল। কিন্তু বুধবার এক প্রতিবেশী তাদের ঘরে কালিমূর্তি দেখে স্থানীয়দের জানায়। কোরআন অবমাননার গুজবে স্থানীয়রা তখন ওই বাড়িতে ঘেরাও করে।
স্থানীয় এক সাংবাদিক ওই দম্পতির ২৬ বছর বয়সী একমাত্র সন্তানের বরাত দিয়ে জানান, তার বাবা-মা এনায়েতপুরী পীরের সাগরেদ। তারা গোপনে ঘরের মধ্যে কালিমন্দির স্থাপন করেছিলেন। আবার ওই ঘরেই প্রতিদিন কোরআন পাঠ ও জিকির মাহফিল হতো। তাদের দু’টি ঘর। একটি ঘরে অসুস্থ বাবা প্রায় সবসময় শুয়ে থাকতেন আর অপর ঘরটির এক কোণায় কালিমূর্তি রাখা হয়েছিল। সে ঘরেই মিলাদ ও জিকির হতো। এসময় কালিমূর্তিটি কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হতো। এ কারণে এতো দিন প্রতিবেশীরা বিষয়টি জানতে পারেনি। ১৫ বছর ধরে তারা এ কাজ করে আসছিলেন।
অবশেষে বুধবার একজন প্রতিবেশী বিষয়টি জানতে পেরে এলাকার সবাইকে জানায়। এরপর এলাকার মানুষ ওই বাড়িটি ঘেরাও করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে ওই বাড়ি থেকে একটি কালিমূর্তি উদ্ধার করে এবং দম্পতিকে থানায় নিয়ে যায়।