Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

25বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
যেসব ব্যাংকের মাধ্যমে মানবপাচারকারীদের অবৈধ লেনদেন হয়েছে, তা খুঁজতে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে আরব বাংলাদেশ ব্যাংক লিমিটেড (এবি) টেকনাফ শাখার লেনদেন ক্ষতিয়ে দেখছে সংস্থাটি।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে আসা এক তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য দুদকের জৈষ্ঠ উপপরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

তিনি অনুসন্ধানের শুরুতেই এসব অবৈধ লেনদেনে বিষয়ে জানতে এবি ব্যাংকের ওই শাখার ভাইস প্রেসিডেন্টসহ ঊর্ধ্বতন ৬ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্তু দুদকের প্রধান কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, সন্দেহজনক ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সূত্র ধরে মানবপাচারে জড়িত রাঘব-বোয়ালদের অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে বিএফআইইউ এর তদন্তে। যেখানে টেকনাফ উপকূল এলাকার ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বরাসহ ও স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের তদন্তে এবি ব্যাংকসহ সোনালী, অগ্রণী, জনতা, ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী এবং কৃষি ব্যাংকেরও বিভিন্ন একাউন্টের মাধ্যমে এসব অবৈধ লেনদেন হয়েছে বলে প্রমান পাওয়া গেছে।

গত ২৯ জুনে কেন্দ্রীয় করা ওই প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, মানব পাচারকারী ও মাদক ব্যবসায়ীরা এর আগে সরাসরি অর্থ লেনদেন করেছিল। কিন্তু এখন তারা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং ও বিকাশ অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছে। টেকনাফে বিভিন্ন ব্যাংকের আটটি শাখা রয়েছে। বিএফআইইউ এসব শাখা পরিদর্শন করে কিছু অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পায়।

এছাড়া এবি ব্যাংকের দুটি অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক লেনদেনের খোঁজ পান তারা। এই দুই অ্যাকাউন্টের মালিক মাদক ও মানব পাচারে দীর্ঘদিন জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা মাদক ও মানব ছাড়াও হুন্ডির টাকা লেনদেনের কাজ করে। এবি ব্যাংক থেকে শুরু করে উল্লেখিত ব্যাংকগুলো এসব টাকা লেনদেন করে। সেই সঙ্গে এবি ব্যাংকের সন্দেহ একাউন্টেগুলো থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে বলেও দেখা গেছে। যা বৈধ ব্যবসা মাধ্যমে লেনদেন হওয়া সম্ভাব নয়। কিছু কিছু একাউন্টধারী অবৈধ লেনদেনে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও অনুসন্ধানীকারীরা এদের উপার্জন ও ব্যয়ের বিস্তারিত তথ্য পাননি।

এ ব্যাপারে দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা মানব পাচার বিষয়ে কাজ করি না, তবে মানব পাচার করে যেসব ব্যক্তি অঢেল সম্পদ অর্জন করেছেন বা এই কাজে যারা অবৈধভাবে টাকা স্থানান্তর করেছেন, সেই সব অভিযোগ অনুসন্ধান করছি। যে ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠা এই কাজে জড়িত আছে বলে প্রমাণ পাবো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।’

বুধবার এবি ব্যাংক চট্টগ্রামের লোহাগড়া শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী, কক্সবাজার শাখার এসএভিপি মি.মা থাং চেইন, একই শাখার একাউন্ট ওপেনিং অফিসার মো. আলমগীর আন্দরকিল্লা শাখার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. ইয়াসিন চৌধূরী, বহদ্দার হাট শাখার ভিপি মো. নুরুজ্জামান এবং টেকনাফ শাখার এসএভিপি ও রিলেশানশীপ ম্যানেজার মো. নুরুল হুসাইনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

এছাড়া নজুমুনিয়ার হাট শাখার এসএভিপি মো. আহসানুল হাবিবকে আজকে জিজ্ঞাসাবাদ করার থাকলেও তিনি হজে থাকায় উপস্থিত হতে পারেননি। এই কর্মকর্তাগুলো সবাই এবি ব্যাংকের কক্সবাজারের টেকনাফ শাখায় কর্মরত ছিলেন। আর তাই ব্যাংটির ওই শাখায় সন্দেহযুক্ত একাউন্টগুলোতে অবৈধ লেনদেন হয়েছে কি-না এবং হলেও তাদের সংশ্লিষ্ট আছে কি না সে ব্যাপারে বক্তব্য নিতে তাদেরকে আজ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।