বৃহস্পতিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
ফুলবাড়ী দিনাজপুর সড়ক নির্মাণে নাজুক অবস্থা। সড়ক বিভাগ কর্তৃপক্ষ তদারকে গড়িমসি। ২০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যায়ে সওজের কাজে গলদ। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের ক্ষেত্রে সরকার সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন জেলায় সড়ক বিভাগের রাস্তাগুলি সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ দিলে সঠিক কাজ কর্ম না হওয়ায় রাস্তাগুলির অবস্থা নাজুক। চলতি বর্ষা মৌসুমে তাদের সড়কেই খারাপ হয়ে পড়েছে প্রায় ৬৮ হাজার কিলোমিটার। এ সব সড়কের অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে পড়েছে। ঠিকাদারেরাও কাজ করতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ছে। পিএমপি সড়ক সার্ফেসিং (মেরামত ও সংস্কার) কাজে আহব্বানকৃত দরপত্র আরজেড-০১ ২০১৪-১৫ এর আওতায় দিনাজপুর সড়ক বিভাগের অধীনস্থ ২০.৩৯ কোটি টাকার ফুলবাড়ী দিনাজপুর ও দিনাজপুর বোচাগঞ্জ সড়কের মোট ৫৮.০০(৩৯+১৯) কিলোমিটার সড়ক তদারকির অভাবে কাজে অনিয়ম দেখা দিয়েছে। সঠিক তদারকের অভাবে ঠিকাদার কঅগগই KAMMB Consortium নিম্নমানের কাজ দ্রুত শেষ করায় সড়কের নানা জায়গায় পটহোল সহ ফাটল দেখা দিয়েছে। যেমন, দিনাজপুরের কাশিপুর, ভবাইনগর, পাঁচবাড়ী, ফুলবাড়ীর ঢাকামোড় থেকে ব্রীজ পর্যন্তও সওজের রাস্তায় ফাটল ধরেছে এবং অনেক রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পাঁচবাড়ী রাস্তায় ফাটল ধরায় রাস্তার কিছু অংশ উঠে ফেলে পুনরায় সংস্কার করেছেন। গতমাসে ফুলবাড়ী ঢাকামোড়ে কিছু অংশ উঠে ফেলে পুনরায় সংস্কার করলে বর্ষার পানিতে কার্পেটিং উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ঠিকাদারের কাজ শেষ হওয়ার আগেই কর্তৃপক্ষের ট্রাক ও জনবল সড়ক মেরামতে বেশ তৎপর। কাজের গুণগতমান নিশ্চিত করার জন্য আদর্শ টেস্ট অনুসরণের নির্দেশনাও উপেক্ষিত হয়েছে। সরেজমিনে ষ্টেক ইয়ার্ড পরিদর্শন করে এবং ঠিকাদারের নিয়োজিত জনবলকে ফিল্ড ল্যাব্রটরী কোথায় রয়েছে এ ব্যাপারে ফুলবাড়ীর ইয়ার্ডে জিজ্ঞাসা করলে তারা সঠিক উত্তর দিতে পারে নি। তবে ওর্য়াকিং ইয়ার্ডে টেষ্ট কাজের জন্য ফিল্ড ল্যাব্রটরী থাকার কথা কিন্তু কোন ল্যাব্রটরী নাই। এমনকি সওজ এক্সপার্টি প্রকৌশলী মোঃ আনোয়ার উদ্দিন কে সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অনেক বিষয় এড়িয়ে যান। বাস্তবে সার্ফেসিং কাজের মধ্যে বাইন্ডার পিচ, design rate এর অনেক কম। এই সব কারণে সাধারণ যানবাহন চলাচলে গর্ত ফাটল হতে পারে বলে এক্সপার্ট আনোয়ারের অভিমত। তবে এই কাজ তদারকে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন দুই জন উপসহকারী প্রকৌশলী কাজ করছেন। তারা হলেন মোঃ মোতাহার হোসেন ও মোঃ আনোয়ার হোসেন। তারা ঠিকাদারের পক্ষ হয়ে যথেষ্ট সাফাই গাচ্ছেন। ঠিকাদার ইতিমধ্যে ৩৯ কিলোমিটার রাস্তা মেরামত ও সংস্কার কাজ শেষ করেছেন। অন্যদিকে দিনাজপুর বোচাগঞ্জ সড়কে সার্ফসিং কাজ কতটুকু টেকনিক্যাল মানসম্পন্ন তাও দেখ ভালের বিষয়। উক্ত ঠিকাদার দিনাজপুর থেকে বোচাগঞ্জ সড়কের ১৯ কি.মি কাজ সম্পন্ন করেছেন। পূর্ণ বর্ষা মৌসুমে বিটুমিনাস ওয়ারিং কাজের গুণগতমান কতটুকু বজায় থাকে সড়ক বিশেষজ্ঞরাই ভাল জানেন। টেককোট বৃষ্টিতে ভিজে গেলেও তার উপর দিয়ে ওয়ারিং কোর্স ওভারলে চলছে। সড়ক সাফেসিং এর পুরুত্বে (Real thickness very Poor) ঘাটতি কম করা হয়েছে। ৫০ মিলিমিটার থিসনেস থাকলেও অনেক জায়গায় ৩০ থেকে ৩৫ মিলিমিটার থিসনেসে কাজ করা হয়েছে। ফুলবাড়ী দিনাজপুর সড়ক বিভাগ মেরামত ও সংস্কার কাজে পার মিলি পুরুত্বের সরকারি ব্যায় প্রায় ২৭ লক্ষ টাকা। গড়ে ৬ মিলিমিটার কম করা হলে সরকারের মূল্য দাড়াবে ১৬২.০ লাখ টাকা। ওভারওল কম/বেশী কাজের বিষয়টি কনসোর্টিয়াম ও সকল প্রকৌশলী গণ অবহিত আছেন। সরকারের যে কোন জনস্বার্থ প্রকল্প শুরুর সময় জনগণকে অবহিত করার জন্য কাজের শুরুতে প্রকল্পের সাইটে প্রকল্প তথ্য সংবলিত সাইনবোর্ড ওয়ার্কিং অবস্থানে বসানোর নিয়ম থাকলেও সেটি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। সাইটে কোন ঠিকাদারের সাইনবোর্ড নাই। কাজের গুণগতমান খারাপ হয়েছে তা গাড়ির চালক ও এলাকার জনগণ এর সাথে কথা বললে তারা অভিযোগ করে বলেন দুই মাস না যেতেই রাস্তায় ফাটল ও কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। উত্তরাঞ্চলের এই রাস্তাটি অত্যন্ত ও গুরুত্বপূর্ণ ও আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রকল্প। এই কাজের গুণগতমান নিশ্চিত করা হলে জনমনে বিভ্রান্তিকর তথ্য দূর হবে ও এ অঞ্চলের জনসাধারণের সড়ক সেবা নিশ্চিত হবে। এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ দিনাজপুরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মোতাহার হোসেনের সাথে গত ১লা সেপ্টেম্বরে ০১৭১২৮০৩৩২০ মোবাইল ফোনে এই বিষয়ে কথা বললে তিনি জানান আমি কোন তথ্য দিতে পারবো না। এ বিষয়ে আপনি উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আনোয়ার উদ্দিনের সাথে কথা বলেন। পরে উপ- সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার উদ্দিনের ০১৭১১৯৭৬৩০১ ফোনে কথা বললে তিনি বলেন বর্ষার কারণে রাস্তায় কিছু কিছু জায়গায় ক্রটি হয়েছে। তা মেরামত করা হবে। তবে ঠিকাদার বিল তুলেছে কিনা এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান ঠিকাদার প্রথম বিল তুলেছেন। এ বিষয়ে আরো কিছু জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বললে জানতে পারেন। ফুলবাড়ী দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের এই রাস্তাটি ব্যস্ততম রাস্তা। এ ভাবে বিপুল সরকারি টাকা ব্যয় করে কাজ করতে গিয়ে কাজের গুণগতমান ভাল না হলে সরকারের ব্যয় বেড়ে যাবে। এ ব্যাপারে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাইট ম্যানেজারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন অতি বৃষ্টি ও ভারী যানচলাচলের জন্য কোথাও কোথাও কার্পেটিং উঠে গেছে। তবে আমরা সেগুলো মেরামত করার চেষ্টা করছি।