শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫
অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মস্তিষ্কের সংক্রামনে চার প্রসূতি মারা যায়। ঝিনাইদহের মহেশপুরে ভৈরবা বাজারের জননী ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে এ ঘটনার প্রাথমিক কারণ হিসাবে মস্তিষ্কের সংক্রামনকেই চিহ্নিত করেছে জেলার সিভিল সার্জনের নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটি।
বেসরকারি ওই ক্লিনিকে ৪০ দিনে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে চার প্রসূতি মারা যায়। এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় আছে ছয়জন প্রসূতি। এরই মধ্যে ক্লিনিকটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন আবদুস সালামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের সঙ্গে জড়িত তিনজন চিকিৎসককে সনাক্ত করা হয়েছে। তিনি আরো জানিয়েছেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা ছয় প্রসূতি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, যশোর সদর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদেরকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার রাতে তদন্ত কমিটির একটি প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
তদন্ত দলে অপর দুই সদস্য হলেন, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক (গাইনি) ইমদাদুল হক ও অস্ত্রোপচারবিষয়ক পরামর্শক জাহিদুর রহমান। এ কমিটির সঙ্গে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি মিজানুর রহমান কাজ করেন।
সিভিল সার্জন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কৃঞ্চচন্দ্রপুর গ্রামের বিথি খাতুন (১৮), অনন্তপুর গ্রামের আরিফা খাতুন (১৮), জীবননগর উপজেলার বারান্দি গ্রামের ছালেহা খাতুন (২৬) এবং জাগুসা গ্রামের রূপা খাতুন (২০) অস্ত্রোপচারের কয়েক দিনের মধ্যে প্রচণ্ড মাথা ব্যাথা ও জ্বরে আক্রান্ত হন এবং বমি করতে থাকেন। পরে একপর্যায়ে তারা মারা যান।
বিকেল চারটার দিকে জননী ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোম পরিদর্শন করেন তদন্ত দল। এরপর মৃত প্রসূতি বিথি ও রূপার বাড়িতে যান এবং পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন। এ সময় নিহত রূপার মা তহুরা খাতুন ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেন। এর আগে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে অভিযোগকারীদের বক্তব্য শুনে তদন্ত দল।
ভৈরবা কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল আলম বলেন, অবৈধভাবে পরিচালিত এ সব ক্লিনিকের সঙ্গে প্রভাবশালী মহল জড়িত রয়েছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।