Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

9শুক্রবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫
দল গোছাতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। আন্দোলনে ব্যর্থ হওয়ার অন্যতম কারণ ‘পকেট কমিটি’র ব্যাপারে এবারের দল গঠনে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে দলটি। ‘পকেট কমিটি’র ব্যাপারে সতর্ক থাকছে দলটির নীতিনির্ধারকরা।

প্রতিবার দল গঠনের পরই আলোচনায় আসে ‘পকেট কমিটি’ নিয়ে। দল গঠনের পর পদের জন্য মাঠে থাকা পদবঞ্চিত অনেক নেতাকর্মীদেরকে আন্দোলন করতে দেখা যায়। সুবিধাবাদী অনেক নেতাই দলের জন্য ত্যাগীদের বাদ দিয়ে তাদের নিজস্ব পছন্দের ব্যক্তিকে পদে আনেন বলে অভিযোগ আসে।

সর্বশেষ ছাত্রদলের গঠিত কমিটি নিয়েও অনেক অনিয়মের অভিযোগ আসে। ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন করার পর এ কমিটি নিয়ে ছাত্রদলের অনেক নেতাকর্মী তাদের মেনে নেবেন না বলে অনেক মিছিল মিটিং করেন। নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রদলের অফিস ভাংচুর ও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের ছবিতে অগ্নিসংযোগ করে সংগঠনটির পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
এবারে দল গোছানোর নামে ‘পকেট কমিটি’ যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখছেন স্বয়ং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

গত মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় ‘পকেট কমিটি’ না করতে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমরা দল গোছানোর কাজ শুরু করেছি। নেতাদের বলবো দয়া করে কেউ পকেট কমিটি করবেন না। যারা দলের প্রতি অনুগত, আন্দোলনে জীবনবাজি রেখে মাঠে থাকবে তাদের পদ দিবেন। কম বেশি অনেককে আমি চিনি। নাম ধরে বলতে পারি। এমন অনেককে চিনি যাদেরকে নেতারাও চিনেন না। তাই যা বলবেন সেটাই বিশ্বাস করবো এমনটা নয়।’

খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্যের পর ‘পকেট কমিটি’ গঠনকারী নেতারাও কিছুটা সতর্ক হবেন বলে আশা করছেন দলের অনেক নেতাই। তারা বলছেন, এবারে ‘পকেট কমিটি’ আর হবে না। যারা আগে পকেট কমিটি করতো তারা এবার সতর্ক হয়ে যাবে। এবার যার যে যোগ্যতা সেটা অনুযায়ী সে সেই জায়গায় যাবে বলেও দাবি তাদের।

এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা আশা করছি পকেট কমিটি এবার হবে না। দল যথাযথ পুনর্গঠন হবে এবং যার যে যোগ্যতা সেটা অনুযায়ী সে সেই জায়গায় যাবে।’

জানা যায়, একটি গ্রুপ এই ‘পকেট কমিটি’ করে থাকেন। তারা তাদের সুবিধার জন্য দলের ত্যাগীদের বাদ দিয়ে নিজেদের অনুসারীদেরকে পদে বসান। কিন্তু এবারে তা করতে দেয়া হবে না বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দলের নেতারা। ‘পকেট কমিটি’র ব্যাপারে এবার সতর্ক থাকা হবে বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ বলেন, ‘এক গ্রুপ আছে ঘরে বসে কমিটি পাশ করে ফেলে। এবার আর এটা করতে দেয়া হবে না। এবছর পকেট কমিটির ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক থাকা হবে যাতে ঘরে বসে কেউ কমিটি না করতে পারে।’

অন্যদিকে দলের আরেক ভাইস চেয়ারম্যান বেগম সেলিনা রহমান বলেন, ‘পকেট কমিটি কে বা কারা করে সেটাতো আমরা বলতে পারি না। তবে মেডাম (খালেদা জিয়া) বলেছেন আমাদের ২বারের আন্দোলনে যারা মাঠে ছিল তাদেরকে মূল্যায়ন করতে হবে। সকলের সাথে আলাপ-আলোচনা করে কমিটি করতে হবে, যাতে করে যারা ত্যাগী তাদের মূল্যায়ন করা হয়।’

বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক ও যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘যখন যেটা প্রযোজ্য তখন সেটা সেখানে প্রয়োগ করতে হবে। অনেক জায়গায় দেখা যায় উল্লেখযোগ্য কোনো নেতাকর্মী আন্দোলনে থাকতে পারে না জেলখানায় বা আত্মগোপনে থাকার কারণে। তখন দেখা যায় নিচের সারির যারা থাকে তারা অনেক পরিশ্রম করে, কিন্তু নেতৃত্বের জায়গাটায় গ্রহণযোগ্য ব্যাক্তিকে বসাতে হবে। সেই জায়গাটা সবার সঙ্গে সমজতা করে করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পকেট কমিটির ব্যাপারে এবারে বিএনপি বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছে। চেয়ারপারসন এবারে আগে থেকেই সতর্ক। তিনি এ ব্যাপারে কঠোর মনোভাব রাখেন। তার নাম ব্যবহার করে যদি আগে কেউ করে থাকেন সেটাও যাতে এখন থেকে তারা সতর্ক হয়ে যায় সেই বার্তাটিই তিনি দিয়েছেন।’